শেষ পর্যন্ত বঞ্চিতই হতে হলো রংপুর অঞ্চলের নন-এমপিও এক হাজার ৩৮৪ জন শিক্ষককে। সরকারি আদেশ থাকলেও তালিকাভুক্ত এই শিক্ষকরা মার্চ মাসের বিশেষ এমপিও পেলেন না। উপ-পরিচালকের উদাসীনতার কারণেই বাদ পড়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বঞ্চিত শিক্ষকরা।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি এ অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। যদি গাফিলতির কারণে ফাইল আটকে থাকে, তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অভিযুক্ত রংপুরের উপ-পরিচালক মোস্তাক হাবিব বাংলা ট্রিবিউনকে মঙ্গলবার (২০ মার্চ) বলেছিলেন, ‘এখনও সময় আছে। তবে ফাইলগুলো জটিল।’ নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পর বুধবার (২১ মার্চ) তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘কতটা ফাইল জটিল ছিল তাও খতিয়ে দেখা হবে।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ক্ষুব্ধ প্রায় দেড় হাজার শিক্ষকের পক্ষে সোমবার (১৯ মার্চ) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবর একটি আবেদন করেন গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ি উপজেলার ফকিরহাট স্মৃতিসৌধ স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক মতলুবুর রহমান পলাশ।
বুধবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যায় মতলুবুর রহমান পলাশ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত ৪ মার্চ থেকে ১৮ মার্চ পর্যন্ত ফাইল নিষ্পত্তি করতে সময় বেঁধে দেয় সরকার। এরপর আবার দুইদিন সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়। তারপরেও ফাইল যাচাই-বাছাই করার নামে আটকে দেন উপ-পরিচালক। দুই দিনে মাত্র ৪২টি ফাইল ছেড়েছেন তিনি। বাকি এক হাজার ৩৮৪ জন শিক্ষকের ফাইল আটকে দিয়েছেন। এখন নিজে অবহেলার অভিযোগ থেকে বাঁচতে এই ফাইলগুলো হয়তো বাতিল করবেন।’
মতলুবুর রহমান পলাশ জানান, মার্চের এই বিশেষ এমপিও না পেয়ে শিক্ষকরা হয়তো চার মাস বেতন হারালেন। জুন মাসের আগে আর এমপিওভুক্তির সুযোগ নেই। তারপরও বিশেষ এমপিও নিয়মিত এমপিও এর সঙ্গে সরকার নাও দিতে পারে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (মাধ্যমিক) সালমা জাহান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পরপরই রংপুরের অঞ্চলিক পরিচালককের কাছে জবাব চাওয়া হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
গাইবান্ধার পলাশবাড়ি শিক্ষক পলাশসহ অন্যান্য শিক্ষকরা জানান, আবেদন যাচাই-বাছাই করে তালিকা পাঠানোর শেষ দিন ১৮ মার্চেও ফাইল দেখেননি উপ-পরিচালক। বর্ধিত সময় ২০ মার্চ পর্যন্ত মাত্র ৪২টি ফাইল দেখেছেন উপ-পরিচালকসহ চার জন। অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে উপপরিচালক এ কাজ করেছেন বলে অভিযোগ বঞ্চিত শিক্ষকদের।
শিক্ষকরা আরও বলেন, দীর্ঘদিন বিনা বেতনে চাকরি করা তালিকাভুক্ত এসব শিক্ষকরা ফেব্রুয়ারিতে এমপিও আবেদনের সুযোগ পেয়েছেন। প্রথমবারের মতো মার্চ মাসের বিশেষ এমপিও থেকে তাদের এমপিওভুক্ত হওয়ার কথা। কিন্তু ২০ মার্চের মধ্যেও ফাইল যাচাই-বাছাই করে তালিকা পাঠাননি উপ-পরিচালক।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন