কোন জমকালো কমিউনিটি সেন্টার নয়, নয় কোন বিশাল প্রাসাদ, বিয়ে হলো কারাগারে! এমনই এক অপূর্ব ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রাম কারাগারে। সত্যিকারের ভালোবাসা খুঁজে পেল নীড়। রাসেল আর তানিয়া যেন কারাগারের নোনা দেয়ালেই তুলতে সক্ষম হলেন প্রেমের সুদৃঢ় স্তম্ভ।
বিয়ে হয়েছে এক সপ্তাহ আগে, কিন্তু খবরটি জেলখানার বাইরে এসেছে এক সপ্তাহ পরে, বৃহস্পতিবারে।
চট্টগ্রাম কারাগারের জেল সুপার ইকবাল কবির চৌধুরী এবিষয়ে এখনই কথা বলতে রাজী হননি। তবে চট্টগ্রাম কারাগারের বেসরকারি কারাপরিদর্শক আবদুল মান্নান বলেন বিয়ের ঘটনাটি সত্য।যেহেতু অনাড়ম্বর আয়োজন, তবু ব্যবস্থা করা হয়েছে সামান্য মিষ্টির। রাসেল ও তানিয়ার বিয়েটি প্রেম করেই। এই প্রেমের শুরুটা তিন বছর আগে। রাসেলের বয়স তখন ২১ আর তানিয়ার বয়স ১৮।
প্রেমের পথে বাধা তো আসেই, তেমনি বাধা এসেছিল তানিয়া ও রাসেলের জীবনেও। প্রেমের এক পর্যায়ে তানিয়ার বাবা রাসেলের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সেই মামলার দায়েই ২ বছর জেল খাটতে হয় রাসেলকে।তবু শেষ পর্যন্ত জয় হলো ভালোবাসার। রাসেল তানিয়ার বিয়েটি আদালতের নির্দেশে অনুষ্ঠিত হয় ১৩ই ফেব্রুয়ারিতে। বিয়ে হয় কারাগারেই। দুই পরিবারের আত্মীয় স্বজন, কারাপরিদর্শক এবং জেলসুপার সকলেই উপস্থিত ছিলেন এসময়।
রাসেলের ছোট বোন ইয়াসমিনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ছোটবেলা থেকেই ইকবাল কলোনীতে বড় হওয়া তাদের। তানিয়ার পরিবার অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক করলেও প্রেমের কারণে তানিয়া অন্যকাউকে বর হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকার করে।২০১৬ সালের ৩০ রমজান তানিয়া রাসেলের সাথে রাত আড়াইটার সময় দেখা করতে যান। কিন্তু তানিয়ার বাবার হাতে ধরা পড়েন তারা। এরপর রাসেলের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু আইনে মামলা করেন তানিয়ার বাবা।
শেষ কয়েকমাস আগে আদালতে তানিয়ার পরিবার মামলা তুলে নিতে চায়, কিন্তু আদালত টা নামঞ্জুর করেন। পরে হাইকোর্ট জামিনের শর্ত হিসেবে রাসেল ও তানিয়ার বিয়ের আদেশ দেন।সবশেষে দুই পরিবারের সম্মতিতে কারাগারের স্বল্প পরিসরে সাদামাটাভাবে তাদের বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
somoynews
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন