নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকিতে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে কিশোরীর আত্মহত্যা চেষ্টার ঘটনায় এলাকাবাসী বিপ্লব নামে ধর্ষকের এক বন্ধুকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের সোপর্দ করেছে।
মঙ্গলবার সকালে কাশিপুর খিলমার্কেট এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরতে দেখে এলাকাবাসী তাকে আটক করে গণধোলাই দেয়। বিপ্লব (২৪) কাশিপুর এলাকার হারুন মিয়ার ছেলে।
ফতুল্লা মডেল থানার এসআই আতাউর রহমান জানান, ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ধর্ষক মৃদুল ও তার মা পারুল বেগমসহ ৬ বন্ধুর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তবে আটক বিপ্লবের নাম না থাকলেও এ ঘটনায় সেও জড়িত বলে এলাকাবাসী দাবি করেছে। বিপ্লবকে রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
মামলার বাদী কিশোরীর বড় ভাই জানান, ফতুল্লার কাশিপুর খিলমার্কেট এলাকায় ১৬ ফেব্রুয়ারি শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টার পর থেকে আমার বোনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তার জ্ঞান ফিরেনি। এর মধ্যে দুই দিন আগে কিছু সময় জ্ঞান ফিরেছিল এবং কথাও বলেছে। তাকে হুমকি দেয়া বখাটেদের কয়েকজনের নামও বলেছে সে। এরপর আবারও জ্ঞান হারিয়েছে। তাকে স্যালাইনের মাধ্যমে খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি।
উল্লেখ্য, দুই বছর আগে ওই কিশোরী জেএসসি পরীক্ষায় পাস করে আর লেখাপড়া করেনি। বাড়িতেই পারিবারিক কাজে সময় দিতো। এরমধ্যে কিশোরীর সঙ্গে পাশের বাড়ির মৃদুল (২২) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে।
একপর্যায়ে কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে মৃদুল। প্রথম ধর্ষণের সময় গোপনে ভিডিও ধারণ করে রাখে মৃদুলের বন্ধুরা। পরে ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে ফের একাধিকবার ধর্ষণ করে। সম্প্রতি ওই কিশোরী তার মাকে মৃদুলের ব্লাকমেইলিংয়ের ঘটনা জানায়। এতে ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে কিশোরীর মা মৃদুলের মা পারুল বেগমকে ঘটনা সম্পর্কে জানিয়ে বিচার দাবি করেন।
এ অভিযোগ শুনে উল্টো পারুল বেগম কিশোরীর মাকে হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেন। ওই সময় কিশোরীর মাকে হুমকি দিয়ে মৃদুল বলেন, বেশি বাড়াবাড়ি করলে ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়া হবে। এ ঘটনা শুনে ওই দিন রাতেই নিজ বাড়ির রান্না ঘরে গিয়ে শরীরে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় ওই কিশোরী।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন