আদালতের নির্দেশে স্থগিত হওয়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া ব্যবসায়ী নেতা আতিকুল ইসলামকে সমর্থন জানিয়েছেন প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের স্ত্রী রুবানা হক।
আনিসুল হকের স্মরণে আয়োজিত সভায় রুবানা হক বলেন, আনিসের ফেলে যাওয়া কাজগুলো আমি মনে করি আতিক ভাই শেষ করে যেতে পারবেন। আমরা তার পাশে আছি। ইনশাআল্লাহ আমরা নির্বাচনে আতিক ভাইকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো।
রবিবার রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ এই স্মরণসভার আয়োজন করে। এতে সংগঠনটির সাবেক সভাপতিরা বক্তব্য দেন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র দীর্ঘদিন লন্ডনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ৩০ নভেম্বর মারা যান। তার মৃত্যুতে শূন্য হওয়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণের জন্য ২৬ ফেব্রুয়ারি তারিখ ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। তবে আইনি জটিলতার কারণে গত বুধবার উচ্চ আদালত এই নির্বাচনে তিন মাসের স্থগিতাদেশ দিয়েছে। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে ব্যবসায়ী নেতা আতিকুল ইসলামকে মনোনয়ন দিয়েছে।
আনিসুল হকের স্মরণসভায় তার স্ত্রীর সমর্থন চেয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, আনিস ভাইয়ের মৃত্যু পুরোটাই আকস্মিক। আনিস ভাইয়ের কাছ থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। আগে আনিস ভাই আর আমি দুইজন দুইজনের প্রতিপক্ষ ছিলাম। আমি যখন পোস্টার লাগাতাম, তখন আনিস ভাই বলতেন তুমি যদি সব পোস্টার লাগাও তাহলে আমি কোথায় লাগাবো। আমি মনে করি আনিস ভাইয়ের স্ত্রী যদি আমার সঙ্গে থাকেন তাহলে ইনশাআল্লাহ আনিস ভাইয়ের অসম্পন্ন কাজগুলো শেষ করতে পারবো।
আতিকুল ইসলাম বলেন, আনিস ভাইয়ের কোনো ক্ষয় নাই। তিনি যা কাজ করেছেন তা অতুলনীয়। তিনি যা কাজ করে গিয়েছেন তা কেউ আগে কখনো ভাবেনি। মেয়র থাকাকালে তিনি সব কাজ করে গিয়েছেন। আমি মেয়র হলে কী কাজ করবো তা আমার মেমরি থেকে আসছে না।
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, 'আনিস ভাইয়ের ইচ্ছাশক্তি ছিল অনেক মজবুত। তিনি যা করতে চাইতেন তা করেই ছাড়তেন। আমি আর আনিস ভাই অনেক কাছের বন্ধু ছিলাম। অনেকেই মনে করতেন, আমার সব কথা আনিস ভাই মানেন। আসলেই তিনি আমার অনেক কথাই শুনতেন। তবে তিনি যেটা করার ইচ্ছা পোষণ করতেন কারো মানাই শুনতেন না। আমার কথাও না। আনিস ভাইয়ের পরিচিতি ছিল অনেক এলাকাজুড়ে। তবে এই এলাকাগুলো ছিল আমাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। আনিস ভাই যেতে পারেন না। তিনি আমাদের সঙ্গে ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন।’
স্বামীর স্মৃতিচারণ করে রুবানা হক বলেন, আনিস ভারমুক্ত হয়ে চলে গেলেও আমি এখনো ভারমুক্ত হতে পারিনি। তিনি ব্যক্তিগত জীবনে অনেক ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খল ছিলেন। তার যতগুলো পাঞ্জাবি ছিল, সবগুলোর পকেট ছিল নোংরা। তিনি প্রতিদিন বাদাম খেয়ে পাঞ্জাবির পকেটে হাত মুছতেন। তিনি বাদাম খেয়ে অনেক বাকি রেখে গিয়েছেন। পরে অবশ্য সবাই ঋণ তিনি শোধ করে দিয়েছেন।
স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন বিজিএমইএ ও এফবিসিসিআইয়ের নেতারা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মেয়র আনিসুল হকের স্মরণসভায় দোয়া পরিচালনা করেন গুলশান আজাদ মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা আবু আজাদ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন