কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে ‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা তালিকা বাতিল ও যাচাই-বাছাই কমিটি’র সভাপতি ওসমান গণি নতুন মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় ভুয়া নাম অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। অভিযুক্ত ওসমান গণি বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমাণ্ডের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক।
শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান শেষে এ ঘটনার প্রতিবাদে মুক্তিযোদ্ধাদের বিক্ষোভ মিছিল ও ভুরুঙ্গামারী নেহাল উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সমাবেশ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় ওসমান গণিকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়।
মুক্তিযোদ্ধাদের বিক্ষোভের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভুরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএসও) এ এইচ এম মাগফুরুল হাসান আব্বাসী।
মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ, এ বছর মুক্তিযোদ্ধা তালিকা তৈরিতে যাছাই-বাছাই কমিটির সভাপতি ওসমান গণি টাকার বিনিময়ে অমুক্তিযোদ্ধাদের মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এর প্রতিবাদে সমাবেশ থেকে ভুরুঙ্গামারী,নাগেশ্বরী, ফুলবাড়ী এবং উলিপুর উপজেলার যাছাই-বাছাই কমিটির সভাপতি ওসমান গণিকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত থাকা অমুক্তিযোদ্ধাদের এ তালিকা থেকে বাদ দেয়ার দাবি জানান বক্তারা।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, ‘তালিকায় সুপারিশকৃত ব্যক্তিদের অধিকাংশই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি। কিন্তু কী কারণে তাদের নাম সুপারিশ করা হয়েছে তা কমিটির সভাপতি জানেন।’
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর মণ্ডল জানান, ‘বাছাই কমিটির সভাপতি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে দুই শতাধিক ব্যক্তির নাম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সুপারিশ করেছেন, যারা প্রকৃতপক্ষে মুক্তিযোদ্ধা নন। আমি নিজে এ কমিটির সদস্য হলেও ভুয়া তালিকার সুপারিশে স্বাক্ষর করিনি।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বর্তমান নেতারা। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রেখেছেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার শামসুল আলম মতি এবং মুক্তিযোদ্ধা এটিএম শাহজাহান মানিক, জয়নাল আবেদিন, নূরুল ইসলাম, গোলাম রব্বানী প্রমুখ।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চেয়ে ওসমান গণির মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হয়। কিন্তু সাংবাদিক পরিচয় শুনে তিনি ফোন কেটে দেন। এরপর একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ভুরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এইচ এম মাগফুরুল হাসান আব্বাসী বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন