নড়াইলে এক গৃহবধূকে মিথ্যা প্রলোভনে বিদেশ পাঠিয়ে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। দুঃসহ যন্ত্রণায় প্রবাস জীবন কাটিয়ে দীর্ঘ ১৩ মাস পর দেশে ফিরেছেন নির্যাতিতা নারী। সর্বস্ব হারিয়ে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে শয্যাশায়ী হয়ে দিন কাটছে তার। এ ঘটনায় নড়াইল সদর থানায় মামলা দায়ের হলেও এখনো অভিযুক্ত দালালকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। অন্যদিকে অপরাধীর সমর্থনে স্থানীয় প্রভাবশালীরা হুমকি দিচ্ছে গৃহবধূর দরিদ্র পরিবারকে।
দিনমজুর স্বামীর সংসারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে, ১৩ মাস আগে জমানো সঞ্চয় দালাল আনিসের হাতে তুলে দিয়ে সৌদি আরব পাড়ি জমান নির্যাতিতা গৃহবধূ। ভালো বেতনের প্রতিশ্রুতিতে গিয়ে, সেখানে বিনা বেতনে দিনরাত হাড় ভাঙা পরিশ্রম করতে হয় বলে অভিযোগ নির্যাতিতার। অনাহারী দিন যাপনের সাথে ভোগ করতে হয় নির্মম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। গৃহবধূকে দেশে ফিরিয়ে আনতে তার পরিবার তাদের সর্বশেষ সম্বল এক খণ্ড জমিও বিক্রি করে দেন। গেল ২ ডিসেম্বর দেশে ফিরে আসলে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাকে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করে স্বজনরা।
নড়াইল সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আ ফ ম মুশিউর রহমান বলেন, অমানবিক নির্যাতন ও অপুষ্টিতে ভোগার কারণে শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি সম্ভব হলেও মানসিক অবস্থার উন্নতিতে সময় লাগবে।
এ ঘটনায় নড়াইল সদর থানায় মামলা দায়েরের পর, স্থানীয় প্রভাবশালীদের হুমকিতে আতঙ্কিত নির্যাতিতার পরিবার।
তার স্বামী বলেন, মামলা করার পর থেকে তারা নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন। জামায়াত-শিবির বলে মামলা করার ভয়-ভীতি দেখাচ্ছেন।
এদিকে আসামি গ্রেফতারে তৎপর রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
নড়াইল সদর থানার উপ-পরিদর্শক মিহির পাল বলেন, এ বিষয়ে থানায় মানবপাচার আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
দালাল আনিস ও তার সৌদি প্রবাসী ভগ্নীপতি আশরাফের বিরুদ্ধে, নির্যাতিতার স্বামী মানব পাচার প্রতিরোধ আইনে ১০ ডিসেম্বর নড়াইল সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন