নড়াইলচাঁদা না দেওয়ায় নড়াইলের কালিয়া উপজেলার কলাবাড়িয়া ইউনিয়নের আইচপাড়া গ্রামে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা একটি পরিবারকে উচ্ছেদের অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সন্ত্রাসীদের ভয়ে জাকারিয়া মল্লিকের পরিবারের সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে চার মাসের বেশি সময় ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
ভুক্তভোগী জাকারিয়া মল্লিক ও তার অনার্স পড়ুয়া ছেলে সাইফুল ইসলাম জানান, আইচপাড়া গ্রামের সোহেল রানা, আজিম সর্দার, হালিম সর্দার, আলমগীর ও মুস্তাকসহ তাদের দলীয় লোকজন দীর্ঘদিন ধরে আমাদের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদা না দেওয়ায় জাকারিয়া মল্লিকের কলেজ পড়ুয়া দু’মেয়ের পড়ালেখা বন্ধসহ তাদের পরিবারের সদস্যদের হত্যা করার হুমকি দেয় প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীরা। গত ২৪ আগস্ট ওই সন্ত্রাসীরা জাকারিয়া মল্লিকের বাড়িতে ঢুকে তার কাছ থেকে নগদ ৪০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। শুধু টাকা নিয়েই ক্ষান্ত হয়নি ওই সন্ত্রাসীরা। এসময় গরু-ছাগল ধরে নিয়ে যায় এবং বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে।
এ ঘটনায় ২৫ আগস্ট নড়াগাতি থানায় মামলা দায়ের হয়। এসব ঘটনার পর থেকে জাকারিয়া মল্লিক ও তার পরিবারের সদস্যরা নিজের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। দিনে মাঝে-মধ্যে বাড়িতে আসলেও রাতে তারা অন্যত্র থাকেন।
এ ঘটনা ছাড়াও জাকারিয়া মল্লিক গত ৪ নভেম্বর সকালে কান্দুরী মৌজায় জমির পাকা ধান কাটতে গেলে আগের মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা ও তাদের দলীয় সন্ত্রাসীরা ধারালো দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে জাকারিয়া মল্লিকের স্ত্রী মিলিনা বেগমকে টেঁটাবিদ্ধ করে গুরুতর জখম করে। মিলিনা বেগমকে রক্ষা করতে তার ভাই অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ইমদাদ মল্লিক এগিয়ে আসলে তাকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে সন্ত্রাসীরা। এ সময় জাকারিয়া মল্লিক ও তার দু’মেয়েকে পিটিয়ে আহত করে ঘরে এবং উঠানে থাকা ধান ও অন্যান্য মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায় তারা। মারধর ছাড়াও সন্ত্রাসীরা জাকারিয়া মল্লিকের বাড়িঘর ভাঙচুরসহ ব্যাপক তান্ডব চালায়। এ ঘটনায় ওইদিন নড়াগাতি থানায় মামলা দায়ের হয়। গত ২৩ আগস্ট সকালে আব্বাস সর্দার ও ইউনুস মল্লিক জাকারিয়া মল্লিকের বাড়ি থেকে ৯টি হাঁস ধরে নিয়ে গেছে।
আব্বাস সর্দার ও সোহেল বলেন, ‘জাকারিয়া মল্লিকের কাছে চাঁদার দাবি, মারামারি কিংবা অন্যান্য ঘটনার সঙ্গে আমরা আদৌ জড়িত নই। আমাদেরকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য বিভিন্ন মামলায় জড়ানো হয়েছে।’
নড়াগাড়ি থানার ওসি মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘মামলাগুলোর তদন্ত শেষে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। চাঁদাবাজ কিংবা সন্ত্রাসীদের কোনও ছাড় নয়।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন