তামার তার চুরির অভিযোগে দু’জনকে আটকের পর টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে সাভারেরর হরিণধরা এলাকার ট্যানারি পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহ আলমের বিরুদ্ধে। এদের মধ্যে একজন পৈত্রিক বাড়ির দলিল বন্ধক রেখে পুলিশকে টাকা দিয়েছেন।
.
বৃহস্পতিবার রাতে হেমায়েতপুর এলাকার ঋষিপাড়া মোড় থেকে ওই দু’জনকে আটক করে পুলিশ। রাতভর ট্যানারি ফাঁড়ি হাজতে আটক রেখে নির্যাতনের পর একজনকে শুক্রবার দুপুরে অন্যজনকে শনিবার দুপুরে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ দু’জন হলেন- মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর থানার উত্তর নয়াবাড়ী এলাকার মৃত নাছির উদ্দিন মৌলভীর ছেলে আনোয়ার হোসেন (৪০) এবং সাভারের ভাকুর্তা ইউনিয়নের ফিরিঙ্গকান্দা এলাকার আজিবুর রহমানের ছেলে আনিছুর রহমান (৩৮)।
হেমায়েতপুর-সিঙ্গাইর রোডের অটোরিকশা চালক আনোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর হেমায়েতপুরের ঋষিপাড়া কাঠালতলায় একটি হোটেলে বসে পুরি খাচ্ছিলাম। তখন এসআই শাহ আলমসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা এসে আমাকে ধরে নিয়ে যান।’
তিনি বলেন, ‘রাতে ট্যানারি ফাঁড়িতে নিয়ে মারধর করে ও চুরি ডাকাতি মামলায় ঢুকিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে দুই লাখ টাকা দাবি করেন তারা। খবর পেয়ে রাতে আমার স্ত্রী মোসলেমা আক্তার ফাঁড়িতে আসে। পুলিশ কর্মকর্তা শাহ আলম তাকে বকাঝকা করে বের করে দিয়ে টাকা জোগাড় করতে বলেন।’
আনোয়ার বলেন, ‘সিংগাইরের পৈত্রিক ভিটার দলিল বন্ধক রেখে ৫০ হাজার টাকা এসআই শাহ আলমের হাতে দিলে আজ (শনিবার) দুপুর ১২টার দিকে আমাকে ছেড়ে দেন। এখন কিভাবে বাড়ির দলিল ছাড়িয়ে আনব সেই দুশ্চিন্তায় রয়েছি।’
হানিফ পরিবহনের শ্রমিক আনিছুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘হেমায়েতপুরের মুসলিমপাড়া নিজ বাসার সামনে চা দোকান থেকে বৃহস্পতিবার রাতে আমাকে ধরে নিয়ে যান এসআই শাহ আলম। ট্যানারি ফাঁড়িতে নিয়ে মারধর করে এক লাখ টাকা দাবি করেন তিনি।’
তিনি বলেন, ‘টাকা না দিলে চুরি ও ডাকাতির মামলার আসামি করার ভয় দেখান এসআই শাহ আলম। পরে তাদের জানাই- আমি বিদেশ (জর্ডান) যাওয়ার জন্য টাকা জমা দিয়েছি। আমাকে ছেড়ে দিন। কিন্তু ওই পুলিশ কর্মকর্তা এক লাখ টাকার নিচে ছাড়বেন না বলে জানান। পরে স্বজনদের মাধ্যমে ৬০ হাজার টাকা দিলে শুক্রবার দুপুরে আমাকে ছেড়ে দেয়া হয়।’
তবে টাকা নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে হরিণধরা ট্যানারি ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম বলেন, ‘তারা দু’জনই চোর। তাদের বিরুদ্ধে ট্যানারি থেকে তামার তার চুরি করার অভিযোগ রয়েছে। তারা চুরির কথা স্বীকারও করেছে। এলাকা ছেড়ে চলে যাবে বলে মুচলেকা দেয়ায় তাদের ছেড়ে দিয়েছি।’
এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিনুল কাদির জানান, ‘বিষয়টি নিয়ে সামনের দিকে আর আগানোর দরকার নাই। আমি ওই এসআইকে ডেকে শাসিয়ে দিচ্ছি, যাতে আর এ ধরনের কোনো কাজ না করে।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন