রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনের তিন স্তরের প্রস্তাবে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সম্মত হয়েছে বলে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ওই দাবি করেন। সোমবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে তিন স্তরের প্রস্তাব দেন। এ প্রস্তাবের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে কথা বলেন মুখপাত্র লু ক্যাং। ব্রিফিং এর বিষয়বস্তু প্রশ্নোত্তর আকারে তুলে ধরা হল।
প্রশ্ন: আমি একটা বিষয় নিশ্চিত হতে চাইছিলাম।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও রোহিঙ্গা জনসাধারনের মধ্যে মধ্যস্ততার প্রস্তাব দিয়েছিলেন কি? এটা সম্ভবত সঠিক নাও হতে পারে, কেননা, মে মাসে পররাষ্টমন্ত্রী ওয়াং ই বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে মধ্যস্থতায় চীনের সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এ দু’টো বিষয় পুরোই আলাদা।
উত্তর: আমি জোর দিয়ে বলতে চাই যে, চীন ও অন্য কোন দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের ভিত্তি হলো পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ। বিশেষ করে চীন অন্য দেশের অভ্যন্তরীন বিষয়াদিতে হস্তক্ষেপ না করার নীতিতে অটল। যেমনটা আমি বলেছি, এই পূর্বশর্তের অধীনে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীন শান্তি ও সমঝোতা প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে ও দেশটির স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন সমুন্নত রাখতে গঠনমূলক প্রচেষ্টা চালাতে প্রস্তুত চীন।
আর মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে আলোচনা এগিয়ে নিতে চীন ভূমিকা পালন করবে কি না সে প্রসঙ্গে বলবো, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এ ইস্যুতে রাখাইন রাজ্যে গঠনমূলক একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করেছিলেন যেখানে ইস্যুটি সমাধায় তিন ধাপের একটি সমাধানের কথা উল্লেখ ছিল। তিন ধাপের এই সমাধান প্রস্তাবে বাংলাদেশ সম্মত হয়েছে এবং মিয়ানমারও ইতিবাচকভাবে নিয়েছে। আমরা আশা করি প্রস্তাবটি রোহিঙ্গা ইস্যু মোকাবিলায় সহায়তা করবে। এবং এতে দীর্ঘমেয়াদে এ ইস্যুর চুড়ান্ত ও মৌলিক সমাধান রয়েছে।
প্রশ্ন: আপনি বলছেন, তিন ধাপের সমাধানে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সম্মত হয়েছে। এর প্রথম ধাপে যুদ্ধবিরতির কথা রয়েছে। এর অর্থ কি এই যে, মিয়ানমার সরকার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে?
উত্তর: আমার মনে হয় আমি বিষয়টা অত্যন্ত স্পষ্ট করেছি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সফরের সময় রাখাইন রাজ্যের বর্তমান ইস্যুটি সমাধানকল্পে তিন ধাপে সমাধানের বিষয়টি তিনি উত্থাপন করেছিলেন। এই সমাধান শুধু বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্যই নয়, বরং রোহিঙ্গা ইস্যুর মূল কারণ সমাধানে চুড়ান্ত ও মৌলিক সমাধানেরও প্রস্তাব রয়েছে। যেমনটা আমি বলেছি, তিন ধাপের এই সমাধানে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয় দেশই সম্মত হয়েছে।
প্রশ্ন: বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকারের মধ্যে এই সমঝোতা কি পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সাম্প্রতিক সফরে হয়েছে নাকি কয়েক মাস আগে হওয়া আগের সফরে?
উত্তর: তিন ধাপ সমাধানের প্রস্তাবটি এবারের সফরে উপস্থাপন করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। বৃহত্তর প্রেক্ষাপট বিবেচনায়, আমরা আমাদের গঠনমূলক প্রস্তাব দিয়ে আসছি যেন মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা সংক্রান্ত ইস্যুগুলো ভালোভাবে সমাধান করে বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সমঝোতার মাধ্যমে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র এবারের সফরে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সরকার ইস্যুটি বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সমঝোতার মাধ্যমে সমাধা করতে সম্মত হয়েছে। আসলে, এ নিয়ে সমঝোতা এখনও চলছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন