সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী এখনো আধুনিক শেড নির্মাণ না হওয়ায় প্রাকৃতিক দুর্যোগে পাহাড় ধসের পাশাপাশি হাতির আক্রমণের আতঙ্কে দিন কাটছে উখিয়ার কতুপালং এলাকার লাখ লাখ রোহিঙ্গার। সাগরে নিন্মচাপের কারণে তীব্র বাতাসে এমনিতেই পলিথিনের ছাপড়াগুলো দুলছে, তার সাথে হাতির আক্রমণে মারা গেছে বেশক’জন রোহিঙ্গা। এ অবস্থায় সরকার নির্দেশিত ১৪ হাজার শেডের নির্মাণ কাজ শুরুর তাগিদ দিয়েছে প্রশাসন।
উখিয়ার কুতুপালং থেকে বালুখালী পর্যন্ত সুউচ্চ পাহাড়ের যেদিকে চোখ যায়, চারদিকে রোহিঙ্গাদের পলিথিনের ছাপড়া। মিয়ানমার সরকারের নির্যাতনের মুখে প্রাণ ভয়ে তারা পালিয়ে এসেছে। প্রাথমিক অবস্থায় রোহিঙ্গারা যেখানেই জায়গা পেয়েছে, সেখানেই বসতি নির্মাণ করেছে। কিন্তু এখন তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ভয়। গত এক সপ্তাহ আগে এখানে হাতির আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে চারজনের। এর আগে আরো দু’জনের মৃত্যু হয়।
রোহিঙ্গারা বলেন, 'বন্য হাতির ভয় তো আছেই, তার সাথে আছে ঝড়ের ভয়। ছোট ছোট বাচ্চা আছে রাতে ওদের চিন্তায় ঘুমাতে পারি না।'
সরকার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের প্রথম দিকেই দুই হাজার পাহাড়ি বনভূমিতে দুই লাখ রোহিঙ্গা ধারণ ক্ষমতার ১৪ হাজার শেড নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছিলো কর্মরত উন্নয়ন সংস্থাগুলোকে। কিন্তু এখনো শেড নির্মাণের কাজই শুরু হয়নি।
বালুখালী ২ শরণার্থী শিবিরের ইনচার্জ মোখলেসুর রহমান আকন্দ বলেন, যদি ঘূর্ণিঝড় হয় তাহলে স্থাপনাগুলো উড়ে যাবে। তখন আমাদের সজাগ থাকত হবে।
বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী হওয়ায় কক্সবাজার ঝড়-বৃষ্টি এবং ঘূর্ণিঝড় প্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। এ অবস্থায় রোহিঙ্গাদের নিয়ে বড় ধরণের ক্ষতির আগেই শেড নির্মাণের তাগিদ প্রশাসনের।
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নিকারুজ্জামান, 'শেডগুলো নির্মাণ করতে সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।'
রোহিঙ্গাদের জন্য নির্মিতব্য শেডগুলো প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিষয়টি মাথায় রেখে তৈরি করা দরকার বলে মনে করেন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে কর্ণেল (অব.) ফোরকান আহমেদ।
বর্তমানে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ এবং উখিয়া উপজেলায় নতুন-পুরানো ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছে। এই পুরো এলাকাটি এশিয়া প্রজাতির ইন্ডিয়া উপ-প্রজাতির হাতির অবাধ বিচরণ ক্ষেত্র হিসেবেই চিহ্নিত।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন