বিয়েতে মোহরানা নগদ দিবেন নাকি বাকি রাখবেন?

লিখেছেন লিখেছেন নুর আয়শা আব্দুর রহিম ২৪ জুন, ২০১৮, ০৭:৫৫:১৭ সন্ধ্যা



যৌতুকের বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করতে গিয়ে যেমন গালমন্দ শুনে মনে মনে তিক্ত হয়েছি ঠিক তেমনি হেসেছিও অনেক। তিক্ততা এবং হাসির মাঝ থেকে শিক্ষা নিতে চেয়েছি নিজের জন্য।

নিজেকে ভালো পথে পরিবর্তন করতে চেষ্টা করেছি অবিরত। সফলতা ব্যর্থতা দুটোই আছে, দুটো নিয়েইতো জীবন গাড়ি চলে এবং চলবে।

যৌতুক বিরোধী প্রচারণার একটি মাধ্যম হলো ফেসবুক, ফেসবুকের একটি পোস্টে আমাকে একজন প্রশ্ন করে বসলেন মোহরানা পরিশোধ করেছি কিনা। আমি হ্যাঁ বা না জবাব না দিয়ে প্রশ্নটি এড়িয়ে গেছি নিজের কৌশলে। কারণ সঠিক জবাব দিতে গেলে হয় মিথ্যা বলতে হবে না হয় সত্য বলে অপমান অথবা তর্কের মুখোমুখি পড়তে হবে।

আমার জানা মতে ইসলামিক সঠিক নিয়ম হলো মোহরানা নগদ আদায় করা। আর মোহরানা নিজস্ব ধন দৌলত যত আছে সেই হিসেবে ধ্যার্য করা উত্তম।

কিন্তু বর্তমান সময়ে দেখা যায় সাধ্যের বাইরে মোহরানা নির্ধারণ করা হয়, এবং যা নির্ধারণ করা হয় তার সিংহভাগই বাকি রাখা হয়। বাকি রাখতে মেয়ের অভিভাবকগণ বেশি স্বাদছন্দবোধ করেন। অনেক সময় ছেলে পক্ষ নগদ পরিশোধ করতে চাইলেও মেয়ে পক্ষ কৌশলে বাকি রাখার চেষ্টা করেন। আমি এমনও জেনেছি ছেলে পক্ষ মোহরানা বাকি রাখতে অপারগতা প্রকাশ করায় বিয়ের কথা ফাইনাল হয়ে যাবার পরও বিয়ে ভেঙ্গে গেছে বা বিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছে (আবেগী স্বার্থপর সমাজ ব্যবস্থা!) (অথচ ধর্ম বলে নগদ আদায় করতে / আমরা ধর্ম থেকে দূরে সরে যাচ্ছি।

মোহরানা বাকি থাকলে মেয়ে পক্ষের সুবিধা এবং ছেলে পক্ষের অসুবিধা!

মেয়ে পক্ষের সুবিধাঃ

১. দরকষাকষি করে মোটা অংকের মোহরানা ধার্য করা যায়, নগদ হলে যা সম্ভব হতোনা।

২. মোটা অংকের মোহরানা (বরকে) ছাপে রাখার কৌশল।

৩. বউয়ের দাদাগিরি করার সুযোগ।

৪. মোটা অংকের মোহরানার কথা চিন্তা করে বউ হয় বেশিরভাগ সময় সংসারে ভিলেন।

ছেলে পক্ষের অসুবিধাঃ

১.বেশি মোহরানা নির্ধারণ করার কারণে ছেলেটি বড় একটি ঋণের বোঝা নিয়ে থাকা।

২. অপাপ্ত বয়স্ক অনেকের মৃত্যু হয় সে ক্ষেত্রে বড়সড় ঋণের বোঝা নিয়ে মৃত্যু বরণ করার সম্ভবনা।

৩. শত অন্যায় করার পরও বউকে নিজের করে রাখাতে বাধ্য হওয়া। বলাযায় মোহরানার টাকার কারণে অন্যায়কে ন্যায় বলতে শেখা।

৪. অনেক সময় দেখা যায় ছেলের বিয়ে হয়েছে যৌথ পরিবার থাকা অবস্থায়, বউ ঘরে আনার পর হাজার সমস্যা একের সাথে অন্যের মিল নেই, মিল অমিল দন্ধে তখন ছেলেকে এক কাপড়ে আলাদা হতে হয়। তখন মোহরানার পুরো বোঝা ছেলেটির মাথার উপর চলে আসে। অথচ মোহরানা নির্ধারণে ছেলের কোনো ভূমিকা ছিলোনা। ছেলের অভিভাবক এবং মেয়ের অভিভাবক দরকষাকষি করে মোহরানার অংক ঠিক করেছিলো। এহেন পরিস্থিতিতে ছেলের অকাল মৃত্যু হলে নিশ্চিত ঋণের বোঝা নিয়ে মরতে হবে।

৫.অনেক সময় সংসারে অমিল হবার কারণে বউকে জেনে না জেনে তালাক দেয়া হয়। কিন্তু মোটা অংকের মোহরানা আদায়ের সামর্থ্য না থাকার কারণে তালাক দেয়া বউয়ের সাথে ঘর করতে বাধ্য থাকে নির্বোধ ছেলেটি। (মানে দিনের পর দিন যেনায় লিপ্ত হয়।

আমি যেমন ছেলে হয়ে এমন আশংকা বা পরিস্থিতির মুখামুখী আছি ঠিক তেমনি আমার বোন বা মেয়ের অভিভাবক হয়ে সেই আমিই অন্য একটি ছেলেকে আশংকা বা পরিস্থিতির মুখোমুখী দাড় করাচ্ছি। বলতে গেলে আমরা একে অন্যের শত্রু।

ভাবুনতো এর পরিবর্তন প্রয়োজন কিনা।

মেয়ে পক্ষের উচিত মেয়েকে আন্তরিকতা মায়া মমতা দিয়ে সংসার করার চেষ্টা এবং কৌশল করা।

ছেলে পক্ষের উচিত সাধ্যমত মোহরানা নগদ পরিশোধ করে আন্তরিকতা ভালোবাসা নিয়ে সংসার করার কৌশল করা।

বিষয়: বিবিধ

১০০৪ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

385584
২৫ জুন ২০১৮ দুপুর ০৩:৫২
সত্যের বিজয় লিখেছেন : সহমত
385586
২৫ জুন ২০১৮ রাত ০৮:৫৮
হতভাগা লিখেছেন : আব আয়েনা উট পাহাড়কে নিচে
385588
২৫ জুন ২০১৮ রাত ১১:৫১
আকবার১ লিখেছেন : চমৎকার আপু
386212
০২ ডিসেম্বর ২০১৮ রাত ০১:৪৪
অদৃশ্য কলম লিখেছেন : চমৎকার লিখেছেন। অনেক ধন্যবাদ।।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File