যেসব কাজে তাহাজ্জুদ নামাজের সওয়াব পাওয়া যায়

লিখেছেন লিখেছেন বুদ্ধিবৃত্তিক সঞ্চারণ ১০ জানুয়ারি, ২০১৬, ১১:০৫:১৬ সকাল

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

আমরা সেসব কাজ নিয়ে আলোচনা করেছি যা করা সহজ (সহজ বলতে পরিশ্রম ও সময় কম লাগে) অথচ যা থেকে আল্লাহ্‌র কাছে প্রচুর প্রতিদান পাওয়া যায়। ক্লাসের শেষের দিকে সংক্ষেপে সেইসব কাজের কথা বলা হয়েছে যা করার জন্য তাহাজ্জুদ নামাজের সওয়াব মেলে। আমাদের যেধরণের কর্মব্যস্ত রুটিন দাঁড়িয়েছে তাতে আমরা বেশিরভাগই তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তে পারি না। সন্দেহ নেই যদি আমরা তাহাজ্জুদ পড়তে পারি তাহলে খুবই ভালো হয়। কিন্তু না পারলে দুঃখ করে বসে না থেকে নিচের কাজগুলোতে মনোনিবেশ করতে পারি।

১. ‘ইশা ও ফজরের নামাজ জামাতের সাথে পড়া। আল্লাহ্‌র রাসূল (সাHappy বলেন: “যে ‘ইশার নামাজ জামাতের সাথে পড়লো তার সেই নামাজ যেন অর্ধেক রাত নামাজের মতো হোলো, আর যে ‘ইশা ও ফজরের নামাজ জামাতের সাথে পড়লো তার সেই নামাজ যেন পুরো রাতের নামাজের মতো হোলো”। [মুসলিম]

২. যুহরের ফরজ নামাজের আগে নির্ধারিত চার রাক’আত সুন্নত নামাজ পড়া। আল্লাহ্‌র রাসূল (সাHappy বলেন: “যুহরের আগে চার রাক’আত রাত জেগে নামাজ পড়ার সমান”। [মুসান্নাফ ইব্‌ন আবী শাইবাহ্‌]। কোনও কারণে ফরজ নামাজের আগে পড়তে না পারলে পরেও পড়ে নেয়া বৈধ।

৩. তারাবির নামাজ পুরোটা ইমামের সাথে পড়া। আল্লাহ্‌র রাসূল (সাHappy বলেন: “যদি কোনও ব্যক্তি ইমাম উঠে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তার সাথে নামাজ পড়ে তাহলে সেটি তার জন্য রাতের নামাজ হিসেবে ধরা হবে”। [আবু দা'উদ]

৪. রাতে কুরআনের ১০০টি আয়াত পাঠ করা। আল্লাহ্‌র রাসূল (সাHappy বলেন: “যে রাতে ১০০টি আয়াত পড়লো তার জন্য সেটিকে রাতের কুনুত হিসেবে লিখে দেয়া হবে”। [আত-তাবারানী]। এখানে আমরা সংক্ষেপে কুনুতের অর্থ করতে পারি আল্লাহ্‌র কাছে প্রার্থনা করা যা আমরা নামাজের সাহায্যে করি সচরাচর।

৫. রাতে সূরাহ বাকারা-র শেষের দিকের দুটি আয়াত পাঠ করা। আল্লাহ্‌র রাসূল (সাHappy বলেন: “যে সুরাহ্‌ বাকারা-র শেষের দিককার দুটি আয়াত পাঠ করবে তার জন্য সেই দুটি আয়াতই যথেষ্ট হবে”। [বুখারী ও মুসলিম]

৬. সুন্দর চরিত্র ও ব্যবহার। আল্লাহ্‌র রাসূল (সাHappy বলেন: “একজন মু’মিন সুন্দর চরিত্র ও ব্যবহারের মাধ্যমে রাতের নামাজির ও দিনের রোজাদারের মর্যাদা অর্জন করতে পারে”। [আহ্‌মাদ, আবু দা’উদ]

৭. বিধবা ও দরিদ্রদের দেখভাল করা। আল্লাহ্‌র রাসূল (সাHappy বলেন: “বিধবা মহিলা বা দরিদ্র ব্যক্তির দেখভাল করা ব্যক্তি যেন আল্লাহ্‌র রাস্তায় জিহাদকারীর মতো, বা রাতের নামাজি এবং দিনের রোজাদারের মতো”। [বুখারী ও মুসলিম]

৮. জুমু’আহ নামাজের কিছু আদব কায়দা মেনে চলা। আল্লাহ্‌র রাসূল (সাHappy বলেন: “যে জুমু’আহ-র দিনে গোসল করলো, তারপর তাড়াতাড়ি নামাজের জন্য রওনা দিলো, বাহনে না চড়ে হেঁটে গেলো, ইমামের কাছে বসলো, এবং কথা না বলে ঠিকমতো (ইমামের কথা) শুনলো, তার প্রতিটি পদক্ষেপের জন্য এক বছরের আমলের অর্থাৎ ঐ পরিমাণ সময়ের রোজা ও নামাজের প্রতিদান পাবে”। [আবূ দা’উদ]

৯. ঘুমের আগে তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত করা। আল্লাহ্‌র রাসূল (সাHappy বলেন: “যে বিছানায় গেল এই নিয়ত করে যে রাতে উঠে নামাজ পড়বে কিন্তু এরপর সকাল হবার আগে উঠতে পারলো না, তার জন্য তাই লেখা হবে যা সে নিয়ত করেছে, আর তার এই ঘুম হচ্ছে মহামহিম আল্লাহ্‌র তরফ থেকে তার জন্য সাদাকাহ্‌ (চ্যারিটি)”। [আন-নাসাই, ইবন মাজাহ্‌]

১০. যেসব কাজের জন্য তাহাজ্জুদ নামাজের মতো সওয়াব পাওয়া যায় (যেমন ওপরের ৯টি কাজ) সেগুলো অন্যকে শিখিয়ে দেয়া। আল্লাহ্‌র রাসূল (সাHappy বলেছেন: “যে ব্যক্তি ভালো কাজের দিকে অন্যকে নির্দেশ করলো তার প্রতিদান যে ঐ কাজ করবে তার সমান”।[মুসলিম] সুতরাং যদি আপনি মানুষকে ওপরের কাজগুলোর মত কাজ শিখিয়ে দেন এবং তারা যদি সেটা করে তাহলে তারা যেমন তাহাজ্জুদ নামাজের মতো সওয়াব পাবে একই সাথে তাদের দেখিয়ে দেয়ার জন্য আপনিও তাই পাবেন।

কার্টেসিঃ আসিফ সিবগাত ভুঁইয়া

বিষয়: বিবিধ

১২৮৮ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

356607
১০ জানুয়ারি ২০১৬ দুপুর ১২:৪৫
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
356623
১০ জানুয়ারি ২০১৬ বিকাল ০৪:১২
মনসুর লিখেছেন : মাশাআল্লাহ, সুন্দর লিখেছেন। আলহামদুলিল্লাহ, জাজাকাল্লাহু খাইরান। শুভেচ্ছান্তে ধন্যবাদ।
মহান আল্লাহ আমাদর সবাইকে হেদায়েত দিয়ে দুনিয়া ও আখেরাতে নেক কামিয়াবী দান করুন, আমীন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File