মরুর বুকে মাথা গোঁজার ঠাই - ২

লিখেছেন লিখেছেন আবু জান্নাত ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ১১:২৩:২৯ রাত



বর্তমানে আমিরাতের ১ দিরহাম সমান বাংলা ২১.২০ টাকা। এখানে মিনিমাম সেলারী ৬০০ দিরহাম। শুধুমাত্র ক্লিনার কোম্পানীগুলো ৬০০ দিরহাম বেতন দেয়, এর মধ্যে খানা খরচ নিজের, কোম্পানীগুলো থাকা ও ট্রান্সপোর্টেশন বহন করে, যারা এসব কোম্পানীতে চাকরী করে, তারা অবশ্যই দয়ালু মানুষদের দয়ায় বেছে আছে বললেই চলে। যে যেই এলাকায় ডিউটি করে ঐ এলাকার কিছু দরদী মানব ক্লিনারদের মাঝে মাঝে কিছু টাকা বা সামান্য খাবার দান করেন। কেউ কেউ ডিউটি এলাকায় বাথরুম, কিচেন রুম, পরিস্কার করেন মাসে হয়তো দুই থেকে আড়াইশ দিরহাম ইনকাম করে। বড় কোন সুপার মার্কেট বা পাইকারী আড়তের পার্শে ডিউটি হলে তো কথাই নেই, মাসে ২ থেকে ৩ হাজার দিরহাম আসে, (পাইকারী আড়ৎদারদের এলাকায় ডিউটি দেওয়ার জন্য সুপারভাইজার কে ঘুষ নামক হারাম ও দিতে হয়) কেউ কেউ গোপনে গাড়ী বা বিল্ডিং ক্লিন করে হাজার, ১২শ বা ১৫শ দিরহাম ইনকাম করেন। আবার কাউকে হয়তো বেতনের উপরই ভরসা করে থাকতে হয়। যার যা নসীব।

সাপ্লাই কোম্পানীতে হলে তো কষ্টের শেষ নেই, ঘন্টায় ৫ দিরহাম বেতন হিসাবে দিন ১০ ঘন্টা কাজ করতে হয়, মাসে ২৫/২৬ দিন কাজ করলে ২৫০ থেকে ২৬০ ঘন্টা কাজ হয়। এর মধ্যে সুপারভাইজার ২০ থেকে ৩০ ঘন্টা কমিয়ে ওনার পকেট ভারী করেন। শ্রমিকদের ১০০০ দিরহাম পকেটে আসতে অনেক রক্ত পানি করতে হয়, সারা দিন মরুর উত্তপ্ত আগুনে বিশাল বিশাল প্রাসাদ তৈরীতে তাদের রক্ত পানি হয়ে ঝরে, ভোর ৫ টায় বাসে উঠতে হয় ৬টা বা ৭ টা থেকে ডিউটি আরম্ভ, সন্ধ্যা ৭টা বা ৮টায় ঘরে ফেরা, ঘর তো নয় যেন বাংলাদেশের এস এ পরিবহনের ট্যাংকার। এক ট্যাংকারে ৮/১০ জনের বসতি। এর মধ্যে ৩ মাসের বেতন কোম্পানির হাতে থাকতে হয়, বাড়ি যাওয়ার সময় দেয়া হবে বলে, কিছু সু-নসীব লেবার বাড়ী যাওয়ার সময় পায়, বেশীর ভাগ পাওয়ার আশা ছাড়তে হয়।

এবার আশা যাক, যারা দোকানে কাজ করেঃ

হোটেলের ভিসা হলে তো অবস্থা বুঝা যায়, ভোর রাত থেকে মধ্য রাত ১২টা পর্যন্ত, বিশ্রামের ফুসরত নেই, মাঝে মধ্যে দোকানদারের কৃপায় দুপুরে ১ঘন্টা বিশ্রামের সুযোগ মিলে। থাকা খাওয়া মালিকেরই হয়, বেতন ১০০০ থেকে ১২শ দিরহাম।

গার্মেন্টস বা ইলেক্ট্রিক আইটেমের দোকান হলে ডিউটি সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা, বিকাল ৪টা থেকে রাত ১১টা। বেতন ১২শ থেকে ১৮শ দিরহাম। থাকা খাওয়া নিজের।

(চলবে)

বিষয়: বিবিধ

১৩৫৩ বার পঠিত, ২৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

304703
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১২:২৬
আফরা লিখেছেন : আগে ফাষ্ট হয়ে নেই পরে লেখা পরে কমেন্ট ।
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১২:৫৪
246481
এবেলা ওবেলা লিখেছেন : আফা ফাস্ট হইলে বুঝি আবু জান্নাত ভাইয়া আপনারে হিরার লকেট উপহার দিবে-- তাই ফাস্ট হওয়ার জন্য আপনার এত দৌঁড়ঝাফTongue Tongue
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০১:০২
246482
আফরা লিখেছেন : আপনি ভাল আছেন তো ? আমাকে হীরার লকেট দিবেন আপনি আবু জান্নাত ভাইয়া কেন দিবে । এবেলা ওবেলা @
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ১২:০৬
246520
আবু জান্নাত লিখেছেন : সালাম নিবেন, হারিকেনের মত জায়গা দখলের প্রবণতা দেখে আনন্দ পেলাম, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। পর্বগুলো পড়লে আশাকরি বুঝতে পারবেন মিডলইষ্টে বাংলাদেশীরা কেমন আছে।
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ১২:০৮
246521
আবু জান্নাত লিখেছেন : আল্লাহ তায়ালা যদি তাওফীক ও সুযোগ করে দেন, লকেট দিতেও পারি। দোয়া চাই। ভালো থাকুন। @ এ.ও. বেলা।
304704
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১২:৩১
আফরা লিখেছেন : কাগজ তোর কত মুল্য শরীরের ঘাম- রক্ত ঝড়িয়ে তোকে আনতে হয় ।

মানুষ কত কষ্ট করছে দুনিয়ায় একটু ভাল থাকার জন্য ।
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ১২:১৩
246522
আবু জান্নাত লিখেছেন : আপু মন্তব্যটি সংক্ষিপ্ত হওয়ায় বুঝতে কষ্ট হচ্ছে। আমার আবার তীক্ষ্ণ জ্ঞ্যান কম। আশাকরি ব্যখ্যা করবেন। অনেক ধন্যবাদ আপু।
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০১:৪১
246551
আফরা লিখেছেন : আরে ভাইয়া এটা বুঝলেন না টাকা তো একটা কাগজ সেই কাগজের পাবার জন্য আমরা কত কষ্ট করছি । এবার বুঝেছেন ভাইয়া ?
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০২:৪৪
246553
আবু জান্নাত লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ বোন, এবার বুঝেছি।
304711
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১২:৪৮
এবেলা ওবেলা লিখেছেন : বাহুরে বাহু আঁই একবার মালীর Big Grin Big Grin ভিসা লই সৌদিতে গেছিলাম -- বাঁহুরে বাঁহু কি শরমের I Don't Want To See I Don't Want To See কথা আঁই যখন মালীর কামে বাগানে ডুকতাম আরবের বাসার মাইয়া গুলি ইশারা Nail Biting Nail Biting করত -- পরে আরব গো গুতা Hot Hot খাওয়ার ভয়ে আর আঁর প্রমিক সুলেখার Yawn কাছে আঁর সত্মিত্ম Unluckyপ্রমাণের জন্য ফ্লাইট ধরি বাংলাদেশে চলি আঁইছি-- আঁর হগল টেঁয়া জলে গেছে-- Not Listening Not Listening
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ১২:১৭
246523
আবু জান্নাত লিখেছেন : Rolling on the Floor Rolling on the Floor অনেক ধৈন্নবাদ ভায়া,আন্নের কতা আঁর বেশী বালা লাইগলো, আন্নে বালা এক্কেন কাজ কইচ্ছেন যে, তা-তাই দেশে চলি আইচেন, নইলে কিন্তু খবর আছিল। জাযাকাল্লাহ খাইর ভাইয়া।
304723
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০২:০৯
নাবীল লিখেছেন : একেই বলেই বিদেশ।
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ১২:২২
246524
আবু জান্নাত লিখেছেন : ভালোর দিক ও আছে পরের পর্বগুলোতে আলোচনা হবে ইন-শা আল্লাহ, অনেক ধন্যবাদ নাবীল ভাই।
304734
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৪:১৫
সাদাচোখে লিখেছেন : আসসালামুআলাইকুম।
শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। পশ্চিমাদের দাস - আরব শাসক শেখদের বিরুদ্ধে এই ধরনের অমানবিক বৈষম্য জিইয়ে রাখার জন্য কিংবা দুর না করার জন্য কাল কেয়ামতের দিন আপনার এই লিখা পড়ে - আরো কিছু ভাই হয়তো সাক্ষ্য দেবে, ইনশাল্লাহ্‌।

সো দয়া করে ফ্যাক্টচুয়ালী লিখুন - কে জানে এতে করে হয়তো আপনি একজন বাংলাদেশী স্লেইভকে - স্লেইভ হওয়া হতে মুক্ত রাখতে পারবেন এবং পরিনামে স্লেইভ মুক্তির হাসানা পেয়েও যেতে পারেন।
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ১২:২৭
246525
আবু জান্নাত লিখেছেন : ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ভাইয়া, বিদেশ পাগল সাধারণ ভাইদের সতর্ক করাই আমার এই ছোট্ট প্রয়াস। সামনের পর্বগুলোও পডুন, আশাকরি প্রবাসীদের অনেক দুঃখ অনুধাবন করতে পারবেন। জাযাকাল্লাহু খাইর।
304740
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৫:০৫
কাহাফ লিখেছেন :
অধিকাংশ প্রবাসীর অবস্হাই এমন করুণ! বিদেশে এসে যত পরিশ্রম করতে হয় তা দেশে করলেও এমনই রোজগার হতো! কিন্তু দেশে এমন করা সম্ভব হয় না!!
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ১২:৩১
246526
আবু জান্নাত লিখেছেন : ১০০% সত্য কথা, এই কথাটি মাথায় রেখে বেশীদিন প্রবাসে থাকার ইচ্ছা নেই, যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজন শেষে প্রবাসকে বিদায় জানাব ইন-শা আল্লাহ।
304754
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সকাল ১০:৪২
দ্য স্লেভ লিখেছেন : আপনার লেখা পড়ে অবাস্তব মনে হল। এমন আচরণ যারা শ্রমিকদের সাথে করে আল্লাহ তাদের উত্তম বিচার করবেন। সত্যিই রক্ত পানি করা টাকা....
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০১:২৭
246542
আবু জান্নাত লিখেছেন : নিজের চোখে দেখা বিষয়গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম, অবশ্য ভালোর দিক ও আছে পরের পর্বগুলোতে আলোচনা করব ইন-শা আল্লাহ। অনেক ধন্যবাদ ভাই।
304756
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সকাল ১১:৪৬
বাকপ্রবাস লিখেছেন : ইসলামের সাথে মিলালে এই বিষয়গুলো খাপ খায়না, এসব ব্যাপারে আরবরা উদাসিন, যদিও ইসলাম এর কারনে তারা অনেক পরিবর্তন হয়েছে
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০১:৩১
246543
আবু জান্নাত লিখেছেন : শ্রমিকদের ব্যপারে আমিরাতের গভার্মেন্টস অনেক সতর্ক, শ্রমিক "ল" অনেকটা শ্রমিকদের জন্য ইতিবাচক, কিন্তু চালাক ঠিকারদার ও বিপথগামী লাইসেন্সধারী অনেকে এসবের ফাঁকফোকরে পার পেয়ে যায়। পরের পর্বগুলোতে আলোচনা করব ইন-শা আল্লাহ। অনেক ধন্যবাদ ভাই।
304790
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৪৬
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : শুধু সেইদেশের দোষ দিয়ে লাভ নাই। শ্রমিকদের মুখেই শুনেছি একই ধরনের কাজ করে ভারিতয় বা থাই শ্রমিকরা বাংলাদেশিদের দ্বিগুন বেতন পায়। আমাদের সরকার এই ব্যাপারে উদাসিন না হলে এটা অনেকটাই রোধ করা যেত।
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৮:১৭
246586
আবু জান্নাত লিখেছেন : ভাই আমি তো কোন দেশের দোষ দিই নাই, আমি বলতে চেয়েছি বাংলাদেশীরা প্রবাসে কত অবহেলিত। অবশ্য এর কারণগুলো পরের পর্বগুলোতে উল্লেখ করবো। জাযাকাল্লাহ খাইর ভাইয়া।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File