বাঙ্গালির আবেগের ফুটবলে রাজনীতিকের রাজনীতি

লিখেছেন লিখেছেন বোরহান উদ্দিন রুবেল ১৯ জুন, ২০১৪, ০৮:২৭:৫৪ রাত

বাঙ্গালির আবেগের ফুটবলে রাজনীতিকের রাজনীতি

বোরহান উদ্দিন রুবেল

বাংলাদেশ একটি আবেগপ্রবণ জাতি পৃথিবীর অন্য কোন বিষয় নিয়ে দ্বিমত থাকলেও এই বিষয়টি নিয়ে কারো দ্বিমত নেই । এমনকি এই বিষয়টি নিয়ে দ্বিমত নেই সব বিষয় নিয়ে দ্বিমত থাকা আমাদের দেশের রাজনীতিবিদদের মধ্যেও । এইতো ১২ জুনই শুরু হল ফুটবল বিশ্বকাপ । বাংলাদেশের যারা ফুটবল খেলা দেখে অথবা ফুটবল খেলা নিয়ে জানতে আগ্রহী তারা মূলত দুই ভাগে বিভক্ত । একটি পক্ষ হল আর্জেন্টিনা আর আরেকটি পক্ষ হল ব্রাজিল । আর যারা আবার দুটি ভাগে বিভক্ত তারা আবার অধিকাংশই যুবক । যুবক বয়সে একটু আবেগ বেশী থাকে বাস্তবতার চেয়ে এটাই স্বাভাবিক তাও আবার যদি হয় বাঙ্গালী । তাদের এই আবেগ কি পরিমান তার দুই একটা উদহারন দেয়া দরকার । গ্রামের যেই ছেলেটি তার পেটের টানে সারাদিন পরিশ্রম করতে হয় সেও সারা রাত না গুমিয়ে খেলা দেখে । আবার প্রানের বন্ধু তার বন্ধুকে খুন করে ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনাকে নিয়ে মারামারি করে । আবার পরের দিন পরীক্ষাকে কেয়ার না করে সারারাত খেলা দেখে ছাত্র-ছাত্রীরা । তাদের এই আবেগকে কাজে লাগায় আমাদের দেশের তথাকথিত রাজনিতিবিদরা । রাজনীতির যে ইংরেজি প্রতিশব্দটি হল পলিটিক্স (politics) তার একটি অর্থ হলো মানুষকে জানা (to know people) । আর আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা মানুষকে জানার ব্যাপারে খুব পারদর্শী । আগে সবাই শুধু ভোটারদের দিয়েই সব হয়ে যাবে এই যে বিশ্বাস ছিল সেই অবস্থান থেকে ফিরে এসেছে কারন তারা জানে বর্তমানে যুব সমাজ একটা ফ্যাক্ট । তাই যুব সমাজকে যেভাবে আকৃষ্ট করা যায় তারা সেভাবে কাজ করে । যুব সমাজ যেহেতু ফুটবল খেলায় আকৃষ্ট তাই তারা শুরু করে ফুটবল নিয়ে রাজনীতি সেটা হোক গ্রামে বা শহরে । এইতো সেদিন বাড়িতে যাওয়ার পর দেখলাম ডিজিটাল বাংলাদেশের কল্যাণে গ্রামেও ভিবিন্ন দেশের পতাকা ও ব্যানারে নিজেদের নামসহ কিছু লোক রাস্তার মোরে মোরে টানিয়ে রেখেছে । এলাকায় গিয়ে বিরোধীদলের এক কর্মীকে বললাম কি খবর সে বলল এইতো ভাল তারা আমার পোস্টার আগে চিরে পেলেছে এভার আমিও অন্য ভাবে দেখে নিয়েছি । আমি ঠিক বুঝলাম না তার ইঙ্গিতের কথা । তবে ঢাকা আসার সময় দেখলাম সে একটি দেশের পতাকার একটি ব্যানারে সৈাজন্যে তার ছবি দেয়া তখন বুঝলাম সে কি বুঝতে চেয়েছে । যাই হোক ঢাকায় এসে দেখলাম অন্য চিত্র একজন রাজনীতিবিদ দুই দলের পতাকায় তার নাম দিয়ে রেখেছে সে কোন দলের সমর্থকদের ভোট হারাতে চায়না । এত একটি গ্রামের আরেকটি শহরের উদহারন দেয়া হল এরকম আরও উদহারন আছে খেলা শেষ হওয়ার আগে আরও অনেক কিছু ঘটবে সারাদেশে । এভাবে যখন রাজনীতিবিদদের মধ্যে ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে রাজনীতি চলছে তখন পিচিয়ে নেই শিক্ষক সমাজও । যখন দেখি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রো-ভিসি বলেন যেই দলকে হোক অন্তত অমুক দলকে সমর্থন করবনা তখন মনে হয় বাঙ্গালীর আবেগটা একটু বেশিই যে কোন জাতির চেয়ে । সরকারী কর্মচারীরা দেশের পতাকার সাথে আরেকটি পতাকা সমানতালে চালিয়ে যাচ্ছে তাতে সংবিধানের নিয়ম ভঙ্গ হয় কিনা তা তাদের জানা থাকলেও মাথায় নেই । পুলিশের গাড়িতে অন্য দেশের পতাকা অবৈধভাবে নিয়ে ঘুরে আবার পুলিশ যায় অন্য দেশের অবৈধ নাগরিকদের গ্রেপ্তার করতে । আবার এভার দেখলাম আমাদের দেশের দুই নেত্রীরসাথে যোগ হওয়া আরেক নেত্রী মোট তিন নেত্রীই নাকি কোন দলের সমর্থক । তাতে আবার পা চাটা রাজনীতিবিদদের সুবিদা নিবে ওই দলের নিবেদিত সমর্থক হয়ে । নেত্রিরা আবার আবেগে সুবিধা দিবেন নিজের দলের সমর্থক হওয়ার কারনে । কিন্তু তারা এই পরিকল্পনা করবেনা যে আমাদের দেশকে কবে বিশ্বকাপ খেলার উপযোগী করা যায় । আর আমরা যারা সাধারণ মানুষ আছি তারা দূর থেকে তাদের একজনের পাম দেয়া আর আরেকজনের সুবিধা নেয়া দেখে দেখে যাব । তবে এভাবে চলতে থাকলে বাঙ্গালী জাতির উন্নতি হবেনা যদি না এই আবেগের সাথে সমপরিমাণ বাস্তবতা নিয়ে এগিয়ে না যায় ।

শিক্ষার্থী – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বিষয়: বিবিধ

১০৬৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File