নেহায়েৎ বিবেকের তাড়নায় পোস্টটি শেয়ার করতে বাধ্য হলাম। যারা মানব ধর্মের কথা বলেন,তারা কেন চুপ তা বুঝে আসেনা।

লিখেছেন লিখেছেন হরিপদ ২৬ জুলাই, ২০১৪, ১১:৫৮:০১ সকাল



ফেইসবুকে গাজার জন্য গলা ফাটিয়ে আদতে কী লাভ হচ্ছে, কী এমন হাতি ঘোড়া মারা যাচ্ছে ভেবে যারা বিভ্রান্তিতে ভোগেন, শিশুদের অর্থহীন কাজ দেখে, কিংবা পাগলের পাগলামী দেখে সুস্থ মস্তিস্কের প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ যেমন কৌতুকবোধ করে থাকেন তেমনটা বোধ করেন এই পোস্ট তাদের নিমিত্তে নিবেদিত।

এখানে আমার কাছে দুইটি পোস্ট প্রাসংগিক মনে হল। পোস্টদাতাদের নামসহ হুবহু তুলে ধরলাম। আশা করি একটু কষ্ট করে মন দিয়ে পড়লে ব্যাপারটা ক্লিয়ার হবে।

Farjana Mahbuba

July 23 near Sydney, Australia

এথনিক/রেসিয়াল ক্লিনজিং শব্দটা নতুন কিছু না। ইতিহাস বাদ দিন, বর্তমান পৃথিবীতেই আপনার আমার চারপাশের অনেক দেশেই অনেক মানুষ তাদের এথনিসিটি বা রেইস বা ধর্মের কারনে জেনোসাইড/মাস মার্ডার'র শিকার হচ্ছে প্রতিদিন। আফগানিস্তানে হাজারা, শ্রীলংকায় তামিল, চায়নাতে উইঘুর, মায়ানমার/বার্মায় রোহিংগা স্রেফ চারটা সামান্য উদাহরন মাত্র। অনেকেই তাই প্রশ্ন করেন, পুরা দুনিয়াতেই মানুষ মরছে, প্যালেষ্টাইন নিয়ে এত ‘লাফালাফি’র কী আছে?!

যারা এ প্রশ্ন করেন তারা আসলে হয়তো বুঝেও বুঝতে চান না যে, প্যালেষ্টাইন এখন শুধু একটা দেশের নাম না, প্যালেষ্টাইন এখন একটা সিম্বলের নাম। হাজারা বলেন বা তামিল, উইঘুর বলেন বা রোহিংগা, সবগুলো এথনিক ক্লিনজিং’র ক্ষেত্রে মেইনস্ট্রীম ওয়ার্ল্ড মিডিয়া কম-বেশী সরব। এই সরব হওয়ার পিছনে অবশ্য পলিটিক্যাল রিজনও আছে। যত বেশী পলিটিক্যাল ইন্টারেষ্ট তত বেশী সরব- অনেকটা এমন। কিন্তু একমাত্র প্যালেষ্টাইনের ক্ষেত্রে ওয়ার্ল্ড মিডিয়া চরমমাত্রায় শুধু নিরবই না, বরং ইসরাইলের পক্ষে তাদের জামা-কাপড় খুলে নাচতে বাকী রেখেছে।

একবিন্দু বাড়িয়ে বলছিনা।

উদাহরন চান?

যেদিন ইসরাইলের স্রেফ এক রাতের হামলায় ৪০ জন’র বেশী প্যালেষ্টাইনি খুন হলো, ইঞ্জুরড হলো চারশ’রও বেশী, সেদিনের বিবিসি’র নিউজ “An Israeli mother and daughter are treated for shock after a rocket attack on Ashkelon” [link: https://www.facebook.com/photo.php?fbid=695625073842844&set=a.676987519039933.1073741826.245273148878041&type=1&relevant_count=1]

যখন সাড়ে চারশ’র বেশী প্যালেষ্টাইনি অলরেডী খুন, শত শত ঘর বোমায় বিধ্বস্ত, হাজার হাজার প্যালেষ্টাইনি সিভিয়ারলি ইঞ্জুরড, তখন The Washington Post এর নির্লজ্জ খবর “2 Israeli soldiers killed in Gaza clash” [link: https://www.facebook.com/photo.php?fbid=667893676632639&set=gm.822203231138051&type=1&theater]

CNN তার রিপোর্টার Diana Magnay কে প্যালেষ্টাইনের উপর রিপোর্টিং থেকে সরিয়ে দিয়েছে তার টুইটারে সত্য ফাঁস করে দেয়ার অপরাধে। শুধু CNN-ই না, বিভিন্ন ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া তাদের অনেষ্ট রিপোর্টারদেরকে রিলোকেট করেছে/করছে যারা নিজেদের চাকরি-বাকরির কেয়ার না করে অনেষ্ট রিপোর্টিং করার বিন্দুমাত্র চেষ্টা করেছে। যারা অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়া ফলো করেন, স্রেফ থান্ডার হয়ে যাবেন এদের নির্লজ্জ ইসরাঈলী-তাবেদারী দেখলে। গতপরশু নিউজে অবাক হয়ে দেখলাম প্রায় পাঁচমিনিটের প্রতিবেদন দেখালো কীভাবে মর্টারের আওয়াজে ইসরাঈলী একটা চাইল্ড কেয়ারের শিশুরা ভয় পাচ্ছে! পুরো প্রতিবেদনে একবারের জন্যও ভুলেও উল্লেখ করলোনা এই কয়দিনের ইসরাইলের হামলায় প্যালেষ্টাইনে অলরেডী শত শত শিশু খুন হয়ে গেছে!

স্রেফ বোমের হামলায় বা গুলির আঘাতে খুন না, প্যালেষ্টাইনে চলছে সিলেক্টিভ কিলিং। গুনে গুনে খুন করা হচ্ছে ছেলে বাচ্চাদেরকে যেন বড় হয়ে হামাসে জয়েন করতে না পারে। আর প্র্যাগনেন্ট মহিলাদেরকে যেন ভবিষ্যত যোদ্ধাদেরকে জন্ম দিতে না পারে। ইসরাঈলি এমপি Ayelet Shaked প্রকাশ্যে তার দেশের সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দেয় “Kill the [Palestinian] mothers to stop other little snakes being born”! [link- http://www.davidicke.com/headlines/mothers-of-all-palestinians-must-be-killed-israeli-mp/] ইসরাঈলি আর্মি তাদের টি-শার্টে এডভের্টাইজ করে “shoot a pregnant Palestinian woman and kill tow”! [link- http://news.sky.com/story/678761/israeli-army-t-shirts-mock-gaza-killings]

ইসরাইলের সমস্ত ভয়াবহ অন্যায়ের প্রতি ওয়েষ্টের এমন দেখেও না দেখার ভান করার এবং উলটা সাপোর্ট করার কারন অনেক গভীরে। একথা বললে মোটেও বাড়িয়ে বলা হবেনা যে- ওয়েষ্টের অর্থনীতি আর মিডিয়ার মাথা মাথা ব্যক্তি এবং কোম্পানীগুলো হয় ইহুদী অথবা ইহুদী মালিকানাধীন অথবা ইহুদী নিয়ন্ত্রনাধীন। CIA যেভাবে গোপনে গোপনে অনেক উপরের লেভেলের মানুষকে রিক্রুট করে, তারচে’ একশ’ গুন বেশী দক্ষতায় MOSSAD রিক্রুট করে ওয়ার্ল্ড লীডারদেরকে। আমি মোটেও অবাক হবোনা যদি ভবিষ্যতে কোনোদিন ফাঁস হয় ২০১৪ সালের ইসরাইল হামলার সময় ওবামা-কে ইসরাইলের পক্ষে শক্ত অবস্থান নেয়ার জন্য তার আভ্যন্তরীন কোনো গোপন তথ্য দিয়ে তাকে সরাসরি ব্ল্যাক মেইল করে বা যে কোনোভাবেই হোক ওবামাকে রিক্রুট করেছিল মোসাদ।

তবে এই সবকিছুর মধ্যে ইসরাইলকে আপনার একটা ক্রেডিট দিতেই হবে। তারা তাদের জোড়-জবরদস্তি করে বানানো রাষ্ট্রকে রক্ষা এবং এর জমি বাড়ানোর জন্য যত কুটনামী, নোংরামী, হিংস্রতামী থেকে শুরু করে যা যা করা দরকার, তার কিছু বাদ রাখেনি, রাখবেও না।

তাদের বিপরীতে আমাদের অবস্থা দেখুন?!

প্যালেষ্টাইনের ১৯৪৭ সালের ম্যাপ দেখেছেন? প্রথম প্রশ্ন তো এখানেই- যে রাষ্টের চারপাশে লেবানন, সিরিইয়া, ইরাক, সৌদি আরব, জর্ডান আর ইজিপ্ট দিয়ে ঘেরা, সে দেশে কী করে ১৯৪৮ সালে ইসরাইল আকাশ থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসে?! আর ধরলাম, কোনোভাবে এসে বসলো, কী করে গত ৬৬ বছরে প্যালেষ্টাইনে বসে প্যালেষ্টাইনকে ঠেলতে ঠেলতে ছোট্ট একটা এলাকায় এনে ঠেসে ধরেছে, সেইসাথে দখল করে নিয়েছে আশেপাশের দেশগুলোর অনেক গুরুত্বপূর্ণ জমিও, আর এই দেশগুলো ইসরাইলের কিচ্ছুটি করতে পারলোনা!! উলটা তারা কী করে? পৃথিবীর সবচে tallest building বানায়! সোনা দিয়ে গাড়ি বানায়! সাগরের মধ্যে কৃত্রিম দ্বীপ বানায়! মরুভূমির মধ্যে ক্যাসিনো বানায়! এমন ক্যাসিনো, এমন সিটি যা কিনা ভোগ-বিলাসিতায় লাস-ভেগাসকে টেক্কা দেয়! টুরিষ্ট ডেসটিনেশান বানায়!

ফেইসবুকে Aminul Islam Rassel ভাই’র একটা কমেন্ট পড়েছিলাম। তিনি লিখেছিলেন, “ইসরাইল ফিলিস্তিনীদের non-human মনে করে আর আরবরা sub-human মনে করে। গ্রিক ট্রাজেডির hubris or hamartia ?!” রুঢ় বাস্তব কথা। রোগিংগাদেরকে যেমন বাংলাদেশীরা মানুষ মনে করেনা। আফগান মুহাজিরদেরকে যেমন পাকিস্তানিরা নোংরা চোখে দেখে। মুসলিমরা যেখানে মুসলিমদেরকে মানুষই মনে করেনা, সেখানে স্রেফ একটা ইসরাইলি বন্দীকে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য ইসরাইল শত শত বন্দী ছেড়ে দেয়, একটা ফিল্ম আছে- বেইসড অন ট্রু স্টোরি- নাম ভুলে গেছি। ঘটনা ছিলো ইসরাইল তার তিনজন না কয়জন যেন সৈন্যের লাশের হাড্ডিগুড্ডি যা বাকী আছে স্রেফ তা ফেরত আনার জন্য পর্যন্ত ১২ বছর কীভাবে গোপনে মিশন চালিয়ে সফল হয়েছে! গত স্ট্যাটাসে একটা ইসরাইলি ছেলের কথা লিখেছিলাম, যে অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় বড় হয়েও ইসরাইল যাচ্ছিলো আর্মি ট্রেনিং নিতে আর আমাকে বলেছিলো, “even though we don't live in Israel we still belong to Israel.”

আর আমরা?

উট পাখির মত নাক-মুখ বালুতে গুঁজে থেকে ভান করি যেন ‘আমি কিছু জানিনা! প্যালেষ্টাইন আমার কে?! ওখানে ওরা মরছে, তো আমি কী করবো?! আমার নিজের লাইফেই ঝামেলার শেষ নাই!’

সত্যি কথা বলতে এজন্যেই ওয়েষ্টার্ন এবং ইওরোপীয়ান দেশগুলোতে যেসব বিশাল বিশাল প্রতিবাদ মার্চ হচ্ছে, দেখবেন সেখানে সাদা চামড়ার মানুষ বেশী। কারন ওয়েষ্টের মাথাগুলো সব ইহুদীদের কাছে বিক্রি হয়ে গেলেও, সাধারন মানুষের মানুষ হিসেবে এথিক্যাল কমন সেন্স মুসলিমদের চে’ হাজারগুনে বেশী- গত প্রায় সাত বছরে ওয়েষ্টে থেকে আমার ব্যক্তিগত অবজারভেশান। আমি নিজে সোশাল সাইন্স আর জেন্ডার স্টাডিজ পড়াতে গিয়ে স্টুডেন্টদেরকে ক্লাসে যেসব ভিডিও দেখাই, যেসব কনটেন্ট পড়াই, বাংলাদেশের কোনো ইউনিভার্সিটি বা কলেজে আমি তা পড়াতে গেলে শিউর আমাকে “জিহাদিষ্ট” বলে ধরে নিয়ে যাবে! অথচ এখানে আমি নিজের থেকে এসব দেখাই বা পড়াই না, সাবজেক্ট লীড যে/যারা কিনা নিজেরা খ্রীষ্টান তারাই এসব বের করে দেন পড়ানোর জন্য, যেন স্টুডেন্টরা বুঝতে পারে এথনোসেন্ট্রিজম কী জিনিষ, ডিসক্রিমিনেশানের চেহারা কত রকমের হতে পারে, মিডিয়া কতটা সিলেক্টভ এবং ব্লাইন্ড, আর ওয়ার্ল্ড পলিটিক্স কতটা ‘পলিটিক্যাল’!

আমার মনে আছে, জেন্ডার স্টাডিজের একটা ক্লাসে আমি এই নিউজটা দেখাচ্ছিলাম কোনো জাতি/গোষ্ঠীকে সাইকোলজিক্যাল ব্রেকডাউন পয়েন্টে নিয়ে যাওয়ার জন্য ঐ জাতি/গোষ্ঠীর ফীমেল-বডিকে হিউমিলিয়েট করা, ইনসাল্ট করা এক ধরনের ‘স্ট্রাটেজী’ এটা বুঝানোর জন্য [link- http://worldobserveronline.com/2013/06/13/rape-iraqi-women-us-forces-weapon-war-photos-data-emerge/] প্রোজেক্টর অফ করে ক্লাসের লাইট অন করে দেখি, ক্লাসের কয়েকটা ছেলে মেয়ে লিটারেলী কাঁদছে! সত্যি বলছি, ওয়েষ্টের সাধারন মানুষের মধ্যে যে ইন-জেনারেল মানবিকতা আছে তার ছিঁটেফোঁটাও যদি মুসলিমদের মধ্যে তাদের নিজেদের ধর্মের মানুষজনের জন্য থাকতো, তাহলে আজকে ইসরাইল থাকতো কোথায়! আর এমেরিকা থাকতো কোথায়!

আর যারা সামান্য হলেও মানুষ হিসেবে অন্য মানুষদের কেয়ার করেন, প্লীজ, রিকশনারী চিন্তাভাবনা না করে কনস্ট্রাক্টিভ চিন্তা করুন। ইসরাইল ৬৬ বছর ধরে যে সমস্যা তৈরী করেছে তার সমাধান একদিনে সুইসাইড বোম্বিং করে বা দুইদিনে প্রতিবাদ করে শেষ করে ফেলতে পারবেন না। ইসরাইল এতদিন চুপে চুপে করতো, বিভিন্ন দেশে গিয়ে তাদের লোকাল বেশভূষা ধারন করে নিজেদের আড়াল রেখে করতো, এখন খুললাম খুল্লা ঘোষনা দিয়েছে তারা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড স্কলারশিপ প্রোগ্রাম চালু করেছে এমন এমন জিনিয়াসদেরকে স্কলারশিপ দিবে যারা সোশাল মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্লাটফর্মে ইসরাইলের পক্ষে জনমত তৈরী করবে। যদি ইসরাইলের জন্য সাপোর্ট তৈরী করতে না পারে, তাহলে প্যালেষ্টাইনের পক্ষে অন্ততঃ কনফিউশান তৈরী করবে! এ কারনেই দেখবেন প্রচুর মুসলিম আছে যারা হামাসকে মনে করে টেররিষ্ট অর্গানাইজেশান! [ঠিক যেমন এমেরিকা-বৃটেনের কাছে নেলসন ম্যান্ডেলার গ্রুপ ছিলো টেররিষ্ট অর্গানাইজেশান!]

আবারো বলছি, কনস্ট্রাক্টিভ কিছু করুন। বিশেষ করে দুইটা ক্ষেত্রে- (1) Education (2) Media. সামর্থ্য থাকলে গরীব কারো পড়ালেখার ভার বহন করুন। একটু বেশী সামর্থ্য থাকলে বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির সাথে যোগাযোগ করে আপনার বাবা বা মায়ের নামে স্কলারশিপ চালু করুন। বা লোকাল এলাকায় স্কলারশিপ চালু করুন। ইসরাইল এই দু’টো জায়গা (শিক্ষা এবং মিডিয়া) দখল করে নিয়েছে, বাকী সব তাই আপনা আপনি তার হাতে এসে পড়েছে।

আর আপাততঃ শর্ট টার্মের জন্য, যদি আইফোন বা এন্ড্রয়েড ব্যবহার করে থাকেন, BUYCOTT BAR CODE SCANNER নামের এপ্লিকেশানটি ডাউনলোড করে নিন। যে কোনো কিছু কেনার আগে এই এপ্লিকেশান দিয়ে বারকোড স্ক্যান করে নিন। যদি কোনো পণ্য ইসরাঈলের তৈরী হয়, বা কোম্পানিটি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ইসরাইলকে সাপোর্ট করে থাকে তাহলে এই এপ্লিকেশানটি আপনাকে তা সনাক্ত করতে সাহায্য করবে। অনেকেই আপনাকে বলবে, ধুর, এইসব বয়কটে কিছু হয়না। অনেক লজিক দিবে, অনেক বিশ্ব-অর্থনীতি শেখাবে, কিন্তু আপনার-আমার বয়কটের অগ্রীম ভয়ে অলরেডী নড়েচড়ে বসেছেন ইসরাইলের ফাইনান্স মিনিষ্টার। দেখুন এখানে- http://worldobserveronline.com/2014/07/17/israeli-finance-minister-expresses-boycott-fears/

আপনি যেখানে থাকেন, সেখানে যত ছোট-বড় প্রতিবাদ হচ্ছে, অংশ নিন। একলা না, ফ্যামিলি, ফ্রেন্ডস এবং পরিচিত সবাইকে যেতে উদ্বুদ্ধ করুন।

আর হ্যা, ফেইসবুক-টুইটার সহ সমস্ত সোশাল মিডিয়ায় কথা বলা বন্ধ করবেন না। যখন মেইনস্ট্রীম মিডিয়া নিরব থাকে, তখন ফেইসবুকের মত মিডিয়াই হয়ে উঠে Alternate media. আপনার থেকে আরো দশজন জানবে, সেই দশজন থেকে আরো দশজন, এভাবেই কিন্তু জনমত গড়ে উঠে।

#FreeGaza #FreePalestine #PrayforPalestine #WeAreAllPalestinian #WaronTerror #Genocide #EthnicCleansing #GazaUnderAttack #IsraeliTerrorism #USATerrorism #StandingwithGaza

Chintito Chintabid

July 23

বিভিন্ন ইস্যুতে আমাদের একটা প্রশ্ন করতে দেখা যায় এইযে এত স্ট্যাটাস দেই, টুইট করি, ছবি শেয়ার করি এতে আদৌ লাভ হয়কি? আমাদের কথাতো আর কেউ শোনেনা। অনলাইনে ঝড় তুলেই লাভ কি?

সোশাল মিডিয়াতে সক্রিয় থাকার প্রয়োজনীয়তাটা চ্যানেল ফোরের ব্লগে চার্লস ম্যাসনের Why Israel is losing the social media war over Gaza শীর্ষক আর্টিকেলটি পড়লে আরো ভালোভাবে বোঝা যায় (লিঙ্ক কমেন্টে)। তিনি প্রমাণ দিয়ে বুঝিয়েছেন গতানুগতিক মিডিয়া কিভাবে সত্য প্রকাশের ক্ষেত্রে সোশাল মিডিয়ার কাছে হেরে যাচ্ছে।

গতানুগতিক মিডিয়াতে একটা খবর আসার আগে তাকে নানাভাবে রাঙ্গিয়ে-মুছিয়ে, নিজেদের মতো করে প্রকাশ করা হয়, যার ফলে খবরগুলো হয় একচোখা। আর অন্যদিকে সোশাল মিডিয়াতে খবরগুলোতে রঙ চড়ানোর সুযোগ থাকেনা, যুদ্ধক্ষেত্র থেকে শক্তিশালী কোন ছবিসহ আপনার কাছে মুহুর্তে পৌছে যায়, কোন মধ্যম ব্যক্তির হস্তক্ষেপ ছাড়াই। ফলে খবরগুলো হয় অনেক বেশী জীবন্ত ও সত্য। রিপোর্টাররা গ্রাউন্ডে থেকে কোন রকম এডিটরের/বসের হস্তক্ষেপ ছাড়াই কিছু খবর প্রকাশ করতে পারছে। যেগুলো অন্যান্য মিডিয়ার চেয়ে বিবেককে জাগ্রত করতে সক্ষম হচ্ছে অনেক বেশী। মানুষও এখন সোশাল মিডিয়াতে কোন বিষয় সম্পর্কে জানতে বেশী স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। আমেরিকার মতো প্রো-ইসরায়েলী দেশে সোশাল মিডিয়ার কারণে মতামতে ব্যপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

গাজা ইস্যুতেই দেখা গেছে ট্যুইটার ও ফেসবুকের মাধ্যমে ফিলিস্তিনী মৃত শিশুদের ছবিদিয়ে অনলাইন সয়লাব হয়ে গেছে। বিশ্বের পক্ষে সেটা থেকে চোখ ফিরিয়ে নেয়া সম্ভব হয়নি, মানুষ মাত্রই ক্ষোভে ফেটে পড়েছে যার কিছু নিদর্শন আমরা দেখতে পাচ্ছি বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ মিছিলে, সেলেব্রিটিদের প্রতিক্রিয়ায়, সাধারণ মানুষের ইসরায়েলের প্রতি ধিক্কারে। ফিলিস্তিন থেকে মেসেজগুলোতে দেখা যাচ্ছিল নিরীহ সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ, মৃত্যু, অন্যদিকে ইসরায়েল এক হামাসের রকেটের অজুহাত দিয়ে খুব একটা কুলিয়ে উঠতে পারেনি, কারণ হাজার হাজার ফটো দেখার পর মানুষ সিদ্ধান্ত যা নেয়ার নিয়ে ফেলেছে। এমনকি নেতানিয়াহু হামাসের খোড়া টানেলের ছবিসহ টুইট করেও সেই মঞ্চস্থ খবর আর ফটো দিয়ে মানুষের মন ঘুরিয়ে দিতে সম্ভব হয়নি। আমাদের নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকেই বলতে পারি এবারকার যুদ্ধটা সবার শেয়ার করা ছবিগুলোর কারণ হৃদয়ে অনেক বেশী রক্তক্ষরণ ঘটতে সক্ষম হয়েছে।

রাস্তার বিপ্লবের সাথে অনলাইনের বিপ্লবকে তুলনা করা ঠিক নয়, তবে এর প্রভাবকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। প্রথমত আমরা আমাদের ভেতরের ফুসতে থাকা রাগ, আবেগ, দু:খ এখানে একে অন্যের সাথে প্রকাশ করতে পারি। অন্যের সচেতনতা দেখে নিজের বিবেককে জাগ্রত করতে পারি, কিছু করার জন্য উদ্যমী হতে পারি। অনেকের গবেষণামূলক পোস্ট থেকে তথ্য/ইতিহাস/বিশেষজ্ঞ মতামত জানতে পারি। সুতরাং অনলাইনে সোচ্চার থাকাটা একদম ফেলনা নয়। আমাদের কোন ভালো মিডিয়া নেই বলে এতোদিন হায়হুতাশ করতাম, আল্লাহ আমাদের জেনারেশনকে সত্য প্রকাশের একটি মাধ্যম দিয়ে দিয়েছেন, আসুন সেই সুযোগকে সর্বাত্মকভাবে কাজে লাগাই।

বিষয়: বিবিধ

২০০২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

248344
২৬ জুলাই ২০১৪ দুপুর ১২:৩২
হতভাগা লিখেছেন : এসব মানবাধিকার কর্মীরা গাঁজার হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ করলে তাদের পেমেন্ট বন্ধ হয়ে যাবে ।

জাতি সংঘের এক মানবাধিকার কর্মী বলেছেন , ইসরায়েল হয়ত যুদ্ধাপরাধ করছে ।

তাদের এটিচ্যুড এই এক শব্দেই বোঝা যায় ।
248368
২৬ জুলাই ২০১৪ দুপুর ০২:৫১
বেআক্কেল লিখেছেন : আমনে কুন মানব ধর্মের কতা বইলছেন, পাশের দেশের দাদাগো ধর্মে, একটি হনুমান কিংবা একজন বান্দরের যে সম্মান, সে মানের সম্মান একজন মুসলমানের নাই। কলিকাতায় একডা ইদুরের যে ধর্মীয় মর্যাদা একজন মাইনষের সে মর্যাদা নাই।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File