ছাত্রাবাসের ভেতরে ঢুকে ধরে গুলি করে ছাত্রবাসটি তাদের রক্তে থৈ থৈ করে। আবার কারোর পা রক্তে আটকে যায়। হঠাৎ করে যেন মনে হলো এ যেন কোন যুদ্ধ ত্রে।

লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল জাব্বার s ২৮ এপ্রিল, ২০১৪, ০৯:৪৩:১৮ সকাল

সাতক্ষীরায় ছাত্রাবাসের চারিপাশ ঘিরে ফেলে পুলিশ মুর্হুমুহু গুলি চালিয়েছে। এসময় পুলিশের গুলিতে সাতক্ষীরা শহর ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আমিনুর রহমান (২৭) নিহত হয়েছেন। এছাড়া ৭/৮ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তাদেরকে সাতক্ষীরা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রোববার বেলা ৩টায় সাতক্ষীরা শহরের কামালনগরস্থ মুকুলের বাড়ির ছাত্রবাসে এ ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার সময় মুহুর্মুহু গুলির শব্দে গোটা এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। এলাকার সাধারণ মানুষ দিকবিদিক ছোটাছুটি শুরু করে। পুলিশের ভয়ে অনেকেই বাড়ির প্রধান ফটকে তালা দিয়ে কেউ ঘরের খাটের তলে আবার কেউ ছাদে গিয়ে আশ্রয় নেয়। এলাকাবাসী বলছে, হঠাৎ করে যেন মনে হলো এ যেন কোন যুদ্ধ ত্রে। একটি ছাত্রবাসে ছাত্ররা যখন দুপুরের খাবার খাচ্ছিল তখনিই এমন আচমকা ঘটনায় আমরা হতবিহবল হয়ে পড়েছি। এদিকে পুলিশের গুলিতে আমিনূর রহমানের শাহাদৎবরণের খবর তার গ্রামের বাড়ি কালিগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর গ্রামে পৌঁছালে সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যে সৃষ্টি হয়। তার বৃদ্ধ পিতা মফিজউদ্দিন সরদার ও তার মাতা ছবিরন নেছা অপর ছেলে মেয়েদের গলা জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাদের আহাজারীতে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। তারা বুক চাপড়াচ্ছে আর চিৎকার করে বলছে ‘হে আল্লাহ আমার বাবার কি অপরাধ ছিল। সে তো মানুষদের কুরআনের পথে, হাদিসের পথে ও ইসলামের পথে দাওয়াত দিতো। তার তো আর কোন অপরাধ ছিলো না। এই অপরাধে পুলিশ যদি আমার বাবাকে মেরে থাকে তাহলে কুরআনের কথা মতো বাবার সঙ্গে জান্নাতে দেখা হবে। অপরদিকে এলাকার তরুন ও মেধাবী এই ছাত্রনেতার মৃত্যুতে গোটা সাতীরা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

এদিকে সাতীরা শহর ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আমিনূর রহমানকে হত্যা ও ৭/৮জন নেতাকর্মী আটক করে রাস্তায় এনে একে একে গুলি করে। পুলিশের নির্মম এই দৃশ্য দেখে এলাকার অনেকেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। আর বাড়ির মহিলা ও শিশুরা হতভম্ব হয়ে যায়। সকলেই যেন এই দৃশ্য দেখে কিংকর্তব্য বিমুড় হয়ে পড়ে। পরে পুলিশ গুলিবিদ্ধদের রক্তাত্ব অবস্থায় হাত-পা ধরে ধরে গাড়িতে ছুড়ে মারে। এ সময় তারা চিৎকার করে ওঠে। পুলিশের তত্ত্বাবধায়নে সাতীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

একাধিক গুলিবিদ্ধ নেতা জানান, দুপুরে খাওয়া দাওয়া করার সময় গোয়েন্দা সংস্থার এক সদস্য হঠাৎ করে ছাত্রাবাসের ভেতরে ঢুকে আমিনুর রহমানকে ধরে বুকে গুলি করে। এতে তার কলিজা, ফুসফুস বের হয়ে যায়। এরপর সে তার পায়ে একাধিক গুলি করে। এসময় সে মাটিতে লুটে পড়ে। ছাত্রবাসের ভেতরে থাকা অন্যান্যেদের ধরে ধরে পায়ে গুলি করে। ছাত্রবাসটি তাদের রক্তে থৈ থৈ করে। আবার কারোর পা রক্তে আটকে যায়।

বিষয়: বিবিধ

৯৮৫ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

214196
২৮ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:০৫
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : আল্লাহ।
214226
২৮ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১১:১৫
মেঘ ভাঙা রোদ লিখেছেন : ছাত্রাবাসের ভিতর আকাম কুকাম করলে তো গুলি চালাবেই। এই সময়েও কেন তারা সেখানে একত্রিত হতে গেলো।
214251
২৮ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১১:৪১
দ্য স্লেভ লিখেছেন : এরা এদেশের পুলিশ হতেই পারেনা। এদেশে পূর্বেও পুলিশ ছিল। তারা এসব করেনি। এসব কোনো কালেও ঘটেনি। আমার ধারনা এজেন্টরা পুলিশের পোশাক পরে এসব করছে। অথবা এজেন্টদেরকে পুলিশে চাকুরী দেওয়া হয়েছে
214267
২৮ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ১২:১৪
শফিউর রহমান লিখেছেন : এমন জুলুম নীরবে সহ্য করছে যে জাতি সেই জাতির সবার জন্য আরও জুলুম অপেক্ষা করছে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File