রাষ্ট্রের কাজে ধর্ম আসবে না?!

লিখেছেন লিখেছেন চিলেকোঠার সেপাই ২৪ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:১৮:৩১ রাত



- কথা হল ভাই, ধর্ম এবং রাষ্ট্র থাকবে সম্পূর্ণ আলাদা। ধর্ম রাষ্ট্র বা রাজনীতির মধ্যে আসবে না।

কিন্তু এমন উদাহারন তো দুনিয়াতে নেই। পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নত এবং শিক্ষিত দেশ অ্যামেরিকা। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র্যাং কিং এ প্রথম ১০০ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রায় ৬০ টি বিশ্ববিদ্যালয়ই আমেরিকায়। সেই আমেরিকায়ও প্রেসিডেন্ট শপথ নেয় বাইবেলে হাত রেখে। ডলারের গায়ে লেখা আছে “In God we trust” । সংসদীয় গনতন্ত্রের সূতিকাগার ইংল্যান্ডে আইন অনুযায়ি রানী ক্যাথলিক হতে পারবে না বা কোন ক্যাথলিককে বিয়ে করতে পারবে না। অর্থাৎ ধর্মের প্রভাব নেই রাজনীতিতে বা রাষ্ট্রে এমন উদাহারন নেই। কম আর বেশি।

- উদাহারন নেই। উদাহারন তৈরি করতে হবে।

হুম এটা একটা যুক্তির কথা। উদাহারন তৈরি করতে পারলে সেটা একটা ভিন্ন অবস্থা। তবে যারা ধর্মহীন রাষ্ট্র বানিয়েছিলো পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সরকারি নিপীড়ন এবং হত্যাত্যাকাণ্ড এরাই ঘটিয়েছে। জোসেফ স্টালিন, লেলিন, মুসেলিনি। ক্রিমিয়া গনহত্যা, মধ্য এশিয়ায় নির্যাতন, জিংজিয়াং এ। ভয়াবহতম শাসন ব্যবস্থা। আর উল্টো দিকে? পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে মানবিক শাসন ছিল ৬২৩ সাল থেকে ৬৫৩ পর্যন্ত এরাবিয়ান পেনিনস্যুলাতে। খোলাফায়ে রাশেদার শাসন। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন নমুনা পাওয়া যাবে না পৃথিবীর ১/৩ অংশের সম্রাট মাএ একজন দেহরক্ষী আর একটা উট নিয়ে কয়েক হাজার মাইল রাস্তা যাচ্ছে। তার মধ্যে আবার অর্ধেক রাস্তা দেহরক্ষী উটের পিঠে গেছে অর্ধেক সম্রাট। এটা অসম্ভব। এমন কোন উদাহারন নেই। আমাদের দেশের সহ বেশিরভাগ দেশের সংবিধানে এমন বিধান আছে রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে না। ৬৪০ এর দশকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সাম্রাজ্য ছিল খেলাফাত। সেই খলিফার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং কোর্ট খলিফার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। চিন্তা করেন তো রশিয়ায় পুতিনের বিরুদ্ধে মামলা বা ইউএসে ওবামার বিরুদ্ধে। এটা চিন্তা করাও সম্ভব না। বর্তমান রাশা বা ইউএসের চেয়ে খেলাফত অনেক বড় এবং ক্ষমতাবান ছিল। আচ্ছা আরব বাদ দেই। আমাদের দেশের কথা ভাবি। আমাদের দেশ বা ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে মানবিক শাসন ছিল কখন? উত্তর অবশ্যই বাবর, জাহাঙ্গীর বা আওরংগজেব। আচ্ছা মুসলিম শাসন বাদ দিলাম। মুসলিম শাসন বাদ দিয়ে যদি চিন্তা করি। তাহলে বলতে সম্রাট অশোকের কথা। সম্রাট অশোক কলিঙ্গ যুদ্ধের পর বুদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেন, এবং অসাধারন মানবিক শাসন শুরু করেন। বর্তমানে অশোক লিপি পাওয়া যায়, সেখানে সম্রাট অশোকের মানবিক শাসনের একটা নমুনা পাওয়া যায়। ইউরোপের সবচেয়ে মানবিক শাসন ছিল অবশ্যই স্পেনে ৮০০ শতকের দিকে, হ্যাঁ সেটাও মুসলিম শাসন। তখন স্পেনে যে পরিমান বই প্রকাশ হতো বছরে, স্পেনে এই সময়ে তার তিন ভাগের এক ভাগ হয়। এখন এর চেয়ে যদি ভাল উদাহারন তৈরি করতে পারেন আপনারা, আমি পরের দিনই ইসলামি থিওলজি বাদ দিয়ে আপনার দলে যোগ দেবো। কিন্তু কমরেড, যদি উদাহারন তৈরি করতে না পারেন তাহলে কি আপনি আপনারটা বাদ দিয়ে আমারটা গ্রহন করবেন?

- ঠুস...।

বিষয়: বিবিধ

১১০৫ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

378992
২৪ অক্টোবর ২০১৬ সকাল ০৬:০০
সাদাচোখে লিখেছেন : আসসালামুআলাইকুম।
আমি ব্যাক্তিগতভাবে ভীষন অবাক হই - ধর্মপ্রান মানুষ যখন দ্যা প্রতারকের সৃষ্ট ও আরোপিত, তথাকথিত নির্দিষ্ট বর্ডারযুক্ত - ভুখন্ড সমৃদ্ধ সার্বভৌম 'রাষ্ট্র' এবং ফ্যাসাদপূর্ন, প্রতারনা সদৃশ্য কর্মকান্ডকে কিংবা 'রাজনীতি'কে ইসলামের অনুষংগ বানিয়ে চিন্তাভাবনা করেন কিংবা ইসলাম নামক একটি প্রত্যয় যোগ করে তথাকথিত ইসলামী রাষ্ট্র কিংবা ইসলামী রাজনীতির ঘোলাপানিতে হাবুডুবু খেতে থাকেন।

আমার কষ্ট লাগে এটা ভাবতে যে - কেন, কোন আকর্ষনে ইসলাম প্রেমী এসব ভাই বোনরা কোরআন ও হাদীস কে বাইপাস করে প্রতারকের সৃষ্ট প্রতিটি টার্মকেই জনমানুষের সামনে 'ইসলাম' এর সামন্জস্য বলে কয়ে এ্যাক্সেটেবল করার জন্য কাজ করেন।

আমি সত্যিই বুঝতে অক্ষম কেন আমি বাইবেল হাতে মেকি শপথকে গুরুত্ব দিচ্ছি। ডলারের গায়ে ইন গড উই ট্রাস্টকে সামনে আনছি - অথচ কাজ কর্মে সর্বত্র 'এ টু জেড' যে বাইবেলকে ইগনোর করছে, জনসাধারনকে ধর্মীয় এই বোধে বদ্ধ করে প্রতারিত করছে - তা বুঝছি না এবং এর মধ্যে যে প্রতারনা আছে - তা প্রচার করছি না। সমভাবে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রতারনার হাতিয়ার ডলারের প্রতারনা প্রকাশ করতে পারছি না।
378993
২৪ অক্টোবর ২০১৬ সকাল ০৯:০৮
হতভাগা লিখেছেন : অন্য সব দেশে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মের নিয়মেই শপথ নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালিত হয় ।

খৃষ্টান অধ্যুষিত দেশগুলোতে ক্রিসমাসে সাধারণ ছুটি থাকে যেখানে মুসলমানদের ঈদের সময়ে থাকে না (ঐচ্ছিক বা কয়েক ঘন্টার)। সে সব দেশের রাজ কার্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্ম ভালই রাজ করে।

বাংলাদেশে যে অন্যান্য ধর্মের বিশেষ দিনেও সাধারণ ছুটি দেওয়া হয় সেটা আমার কাছে বাড়াবাড়িই মনে হয় ।


রাষ্ট্রের কাজে ধর্ম আসবে না?!


০ এটা শুধু বাংলাদেশকেই গেলানো হয় কারণ বাংলাদেশে মুসলমান বেশী বলে , আর বাংলাদেশকে সহজেই দাবানো যায়।।

যারা এই বড়ির প্রচারণা চালায় বা খাওয়ায় তাদের নিজেদের দেশে সেটা প্রচলন করে না , করলে সেসব দেশে দুই ঈদে সাধারণ ছুটি রাখতো।

379020
২৫ অক্টোবর ২০১৬ সকাল ০৫:১০
স্বপন২ লিখেছেন : ভালো লাগলো । অনেক ধন্যবাদ ।
379053
২৫ অক্টোবর ২০১৬ দুপুর ০২:৪২
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : চমতকার পোষ্টটির জন্য ধন্যবাদ। পৃথিবিতে ধর্মহিন যেসব রাষ্ট্র তৈরির চেষ্টা হয়েছে কোনটাই শান্তিপুর্ণ রাষ্ট্র হয়নি। এই সত্য জেনেও এরা লুকাতে চান!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File