রাজনৈতিক সহিংসতা ঝিনাইদহে কয়েকটি বিদ্যালয়ে চলছে খোলা মাঠে পাঠদান

লিখেছেন লিখেছেন টুটুল বিশ্বাস ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০১:৩৪:২০ দুপুর



ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহ জেলায় গত ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনে রাজনৈতিক সহিংসতার কারনে মহেশপুর, কাটচাদপুর,শৈলকুপা উপজেলায় শিশুদের চলছে খোলামাঠে পাঠদান। বই-খাতার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা বসার জন্য বাড়ি থেকে নিয়ে আসছে চট। সেই চটের ওপর বসেই ফাঁকা মাঠেই চলছে তাদের পাঠদান। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের স্কুলটি। এই অবস্থা ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার গাড়াবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার মামুনসিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ত্রিপল বিছিয়ে ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষকেরা। আগুনে পুড়ে যাওয়ায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী বেঞ্চের অভাবে মাটিতে বসে ক্লাস করছে। আগুনে শ্রেণীকক্ষ পুড়ে যাওয়ায় শৈলকুপা উপজেলার ললিত-ভূইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও ক্লাস হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে।নির্বাচনবিরোধীদের দেওয়া আগুন ও ভাঙচুরের ফলে ঝিনাইদহ জেলায় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় সদর, শৈলকুপা, মহেশপুর ও কোটচাঁদপুর উপজেলার ২২টি প্রাথমিক স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় ওপরের ওই তিনটি স্কুলের। ক্ষতিগ্রস্ত তিন স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা ইউরোবিডি নিউজডটকম জানান, উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাহায্য এখনো পৌঁছায়নি।জেলার বাকি ১৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষতির পরিমাণ খুব বেশি না হলেও এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা বিঘœ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা। আগুন দেওয়া ও ভাঙচুরে ক্ষতির পরিমাণ তিন কোটি টাকা বলে জানা গেছে।গাড়াবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, শিশু শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ২৮০টি শিশু শ্রেণীকক্ষের অভাবে বাইরে বসছে। শিক্ষকেরা জানান, আগুনে তাঁদের বিদ্যালয়ের ৪০ জোড়া বেঞ্চ পুড়েছে। ১৫টি টেবিল, ২০টি চেয়ার পুড়ে ছাই হয়েছে। অফিস রুমে আগুন দেওয়ায় স্কুলের সমস্ত খাতাপত্র, বই, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পুড়ে গেছে। ভবনসহ ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩০ লাখ টাকার। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুকুমার দা জানান, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে যোগাযোগ করে পাঠদানের জন্য কিছু উপকরণ আর বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের দাবি করেছেন। পাশাপাশি আপাতত বসার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা হয়নি। তিনি নিজের পকেটের ছয় হাজার টাকা দিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ কিনে আপাতত পাঠদানের ব্যবস্থা করেছেন।স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর আরেক শিক্ষার্থী শাহেদ খান ইউরোবিডি নিউজডটকম জানায়, এভাবে চট পেতে ক্লাস করতে ভালো লাগে না।কোটচাঁদপুরের মামুনসিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুল মতিন জানান, তাঁদের স্কুলে কোনো কাজ করা হয়নি। বসার ব্যবস্থা না থাকায় তাঁরা ঠিকমতো ক্লাস নিতে পারছেন না।পার্শ্ববর্তী ফুলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আশরাফুন্নাহার জানান, তাঁদের স্কুলের পাঁচটি কক্ষের একটিতে আগুন দেওয়া হয়। সেই কক্ষ বন্ধ রাখায় বিদ্যালয়ের ৩৬৭ জন শিক্ষার্থীর ঠিকমতো ক্লাস নিয়ে কষ্ট হচ্ছে।ঝিনাইদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দিলীপ কুমার বণিক ইউরোবিডি নিউজডটকম জানান, তাঁরা এখনো কোনো বরাদ্দ পাননি। যে কারণে সেভাবে কাজ করা সম্ভব হয়নি। তবে স্থানীয়ভাবে পড়ালেখার পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। দু-একটি প্রতিষ্ঠানে বেশি সমস্যা রয়েছে। তাঁরা চেষ্টা করছেন সেগুলোতে দ্রুত শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টির।

বিষয়: বিবিধ

১১২০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File