কুরআনের গভীরে উপলব্ধিঃ ৫২ টি সূরার প্রধান বিষয়বস্তু (Theme), উদ্দেশ্য ও শিক্ষা - ড. আমর খালেদ

লিখেছেন লিখেছেন আহমাদ আল সাবা ২৬ নভেম্বর, ২০১৫, ০৪:৪৬:১৪ বিকাল

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম



ড. আমর খালেদের আরেকটি চমৎকার প্রোগ্রাম ছিল Quranic Though বা Contemplation on The Quran বা কুরআন নিয়ে গভীর চিন্তা। দীর্ঘ দশটি বছর এই চিন্তাটা আমর খালেদকে তাড়া করে বেড়িয়েছে। বিশেষত প্রতি রামাদান মাসেই তাকে এই চিন্তায় আচ্ছন্ন করে রাখতো। তিনি ভাবতেন মুসলিম বিশ্বের কুরআন পাঠ প্রকৃতপক্ষে কুরআনের সঠিক উপলব্ধি ও উদ্দেশ্যের সাথে যায় না। এজন্য তাদের কাছে কুরআন এক অপরিচিত গ্রন্থ মনে হতো। কেউ হয়তো পড়েই যায়, কোনো উদ্দেশ্য খুঁজে পায় না আয়াতগুলোর মাঝে। কেউ হয়তো আয়াতের অর্থ বুঝে কিন্তু এরপরের সব আয়াতগুলোর সাথে সম্পর্ক খুঁজে পায় না। আবার অনেকেই সবগুলো আয়াত উপলব্ধি করতে পারে কিন্তু পূর্ণ সূরার উদ্দেশ্য বা বিষয়বস্তু কী, সূরাটির মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের কাছে কী চাচ্ছে এবং এগুলো আমাদের জীবনের সাথে কীভাবে সম্পর্কযুক্ত, সেগুলো খুঁজে পায় না। এইসব চিন্তা করেই এই বই ও প্রোগ্রামের পদচারণা যা পাঠক ও কুরআনের মধ্যকার উপলব্ধিহীনতার অবসান ঘটাবে ইন শাআ আল্লাহ।

এতে কুরআনের সূরাগুলোরকে অতি সহজে উপলব্ধির জন্য সূরাগুলোর মূল আয়াত বা যেসব আয়াত, ঘটনাকে ঘিরে ঐসূরাগুলো নাযিল হয়েছে, সেগুলোকে স্পষ্ট করে তুলে ধরা। অর্থাৎ যে থিম বা বিষয়বস্তুকে ঘিরে পূর্ণ সূরা আবর্তিত হচ্ছে, যেটুকু বুঝতে পারলে পূর্ণ সূরাটুকু বোঝা খুবই সহজ হয়ে যাবে, সেইটুকুকে বোধগম্য ভাষায় সহজে তুলে ধরা হয়েছে। এতে ঐসব সূরাগুলোকে যেমন খুব সহজেই বুঝতে পারবেন, তেমনি বুঝতে পারবেন ঐসূরাগুলোর অন্যান্য আয়াতগুলোর প্রধান বিষয়ের আলোকেই। এছাড়া সমস্ত সূরাগুলোর মাঝে যে ঐক্য ও ধারাবাহিকতা আছে, সেগুলোও তিনি অনন্যরুপে বর্ণনা করে দেখিয়ে দিয়েছেন যে কুরআন কতটা সূশৃংখল!! এভাবে কুরআন পড়ার মাঝে সীমাবদ্ধ না থেকে, যেন এ থেকে উপলব্ধির মাধ্যমে উপকার পেতে পারি, সেই চেষ্টা তিনি করেছেন খুব সাধারণভাবে।

এভাবে তিনি প্রতিটি সূরার প্রধান বিষয়বস্তু ও উদ্দেশ্যকে অতি সহজে তুলে ধরেছেন। এভাবে প্রতিটি আয়াত কীভাবে ঐ বিষয়বস্তুকে ঘিরে আবর্তিত হচ্ছে তিনি কিছুটা আলোচনা করে দেখিয়েছেন। আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না কীভাবে প্রতিটি সূরার নাম তার প্রধান বিষয়বস্তুর সাথে সম্পর্কযুক্ত। এভাবে না বুঝলে কীভাবে উপকৃত হবো? সূরা বাকারাহ নাম যে সুরার প্রধান বিষয়বস্তু থেকে এবং এর সাথে সম্পর্কযুক্ত, এটি উপলব্ধিতে না আসলে কীভাবে সুরার প্রধান বিষয়বস্তু ও উদ্দেশ্য থেকে উপকার নেবো? বা আমাদের কিভাবে জীবনের সাথে সম্পৃক্ত করবো? তিনি এখানে সূরার নামগুলোকে সূরার প্রধানবিষয়বস্তুর সাথে কীভাবে সম্পর্কযুক্ত তা দেখিয়েছেন। তিনি আরো দেখিয়েছেন কীভাবে একটি সূরা তার পূর্বের ও পরের সূরার সাথে একই ধারায় লেগে আছে।

অর্থাৎ পূর্ণ কুরআনটি একই মালার গাথনির মত। এজন্য সুরা-কে আরবীতে Fence বা বেড়া বলা হয়। বেড়ার উদ্দেশ্য কি? অবশ্যই কোনো কিছুকে সুরক্ষিত করা। এভাবে বেড়ার মাঝে কোন ফাঁকা থাকতে পারে? না। কারণ ফাঁকা থাকলে সুরক্ষিত হবে না। তেমনি কুরআনও এভাবে সূরা হওয়ার কারণে প্রতিটি সূরা একে অন্যের সাথে সুরক্ষিতভাবে সুশৃংখলভাবে লেগে আছে।



প্রত্যেক সাহাবা কিন্তু প্রতিটি আয়াত বা সুরার অর্থ জানতো না কিন্তু তারা সবাই একটা বিষয় জানতো সেটা হল সূরার মূল বিষয়বস্তু ও উদ্দেশ্য। কারণ জীবনের সাথে কুরআনের শিক্ষাকে সম্পৃক্ত করতে হলে এগুলো জানার বিকল্প নেই।


এভাবে আমর খালেদ

(১) প্রতিটি সূরার শুরুতে কেন সূরাকে পাঠ করছি, বিষয়বস্তু এবং এ সুরার উদ্দেশ্য –তা আলোচনা করেছেন।

(২) এরপর সূরার নাম ও সূরার বিষয়বস্তু এবং এদের মাঝে পারস্পারিক সম্পর্ক ও উভয়ের যে একই উদ্দেশ্য, তা আলোচনা করেছেন।

(৩) এরপর সূরা থেকে কিছু আয়াত নিয়ে এগুলোকে ব্যাখ্যা করে সূরার নাম ও বিষয়বস্তুর সাথে যে পূর্ণ সূরাটি আবর্তিত হচ্ছে, সেগুলো আলোচনা করে বুঝানো হয়েছে।

(৪) এরপর এই সূরা ও এর পূর্বের ও পরের সূরার সাথে সম্পর্কের ধারাবাহিকতা আলোচিত হয়েছে এবং

(৫) শেষে বলা হয়েছে যে এই সূরায় এই এই বিষয় আলোচিত হয়েছে, এই এই শিক্ষা – সুতরাং আপনারা এই সূরা পড়ার সময় এগুলো মনে রেখে পাঠ করবেন, চিন্তা করবেন, শিক্ষা নেবেন এবং নিজের জীবনে প্রয়োগ করবেন আল্লাহর বাণীকে।

এভাবে পাঠের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি খুব সহজেই বুঝতে পারবে আল্লাহ এই সূরা থেকে তার নিকট কি চাচ্ছে, সূরার উদ্দেশ্য কি এবং আল্লাহর সাথে এই সূরার মাধ্যমে কীভাবে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে পারি।



এখন পর্যন্ত মোট ৫২টি সূরাকে এভাবে তিনি কঠিন পরিশ্রমের মাধ্যমে সম্পন্ন করেছেন আলহামদুলিল্লাহ।



রিসোর্স


(ENGLISH) Quranic Thoughts – Amr Khaled

http://tinyurl.com/p3l6r7o

ইংরেজি পিডিএফ – http://tinyurl.com/ojhsd75

ড. আমর খালেদ কে?

দেখুন এখানে - http://tinyurl.com/q8ha5zl

অথবা মূল সাইটে - https://alsabanow.wordpress.com/

The 500 most Influential Muslims, 2011 অনুযায়ী The Top 50 এর ২১ তম। The New York Times Magazine এর ২০০৬ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী তিনি আরববিশ্বের “The world’s most famous and influential Muslim television preacher” এবং তাকে টাইম ম্যাগাজিনে বিশ্বের ১০০ জন প্রভাবশালীদের একজন (১৩তম) হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ২০০৮ সালের উন্মুক্ত নির্বাচনে Prospect Magazine (UK) and Foreign Policy (United States) অনুযায়ী বিশ্বের ১০০ জন পাবলিক বুদ্ধিজীবীর মাঝে তিনি ৬ষ্ঠ তম হন। টাইম ম্যাগাজিন তাকে “Rock star for the Arab world” বলে অভিহিত করেছেন।

---------------------------------------------------------------

বিষয়: বিবিধ

১৭৯২ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

351577
২৬ নভেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৫:০৮
আফরা লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ খায়ের । উনার সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম সময় করে আরো জানব । ইনশা আল্লাহ ।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ শেয়ারের জন্য ।
২৭ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:৩৮
291966
আহমাদ আল সাবা লিখেছেন : এসব দাঈ ও ট্রেডিশনাল দাঈদের মাঝে বিরাট পার্থক্য আছে। ইনারা গভীর জ্ঞানসম্পন্ন দাঈ যারা আল্লাহকে শাস্তিদাতা হিসেবে পরিচিত না করিয়ে ইসলামের সূরা ফাতিহাতে যেভবে 'রাহমান ও রাহীম' এসেছে, সেই হিসেবে পরিচিত করিয়ে দেয়। এজন্য মূল্যবোধসম্পন্ন দাঈদের রিসোর্সগুলো বেশি জানা দরকার। জাজাকাল্লাহ আপনাকেও
351594
২৬ নভেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৩২
শেখের পোলা লিখেছেন : ইনাদের প্রচেষ্টা সার্থক হোক৷ আল্লাহ আমাদের জ্ঞান দান করুন৷ধন্যবাদ৷
২৭ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:৩৯
291967
আহমাদ আল সাবা লিখেছেন : আল্লাহুম্মা আমিন। Happy
351628
২৬ নভেম্বর ২০১৫ রাত ১১:১২
সাইফুল ঈদগাহ কক্স লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
২৭ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:৩৯
291968
আহমাদ আল সাবা লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ। Happy
351654
২৭ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ১০:৩৬
দ্য স্লেভ লিখেছেন : এভাবে পাঠের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি খুব সহজেই বুঝতে পারবে আল্লাহ এই সূরা থেকে তার নিকট কি চাচ্ছে, সূরার উদ্দেশ্য কি এবং আল্লাহর সাথে এই সূরার মাধ্যমে কীভাবে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে পারি।
২৭ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:৩৯
291969
আহমাদ আল সাবা লিখেছেন : ইয়াপ, সেটাই। আল্লাহ ইনাদের জ্ঞানের মাধ্যমে আমাদের উপকৃত করুন। আমিন। Happy

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File