খন্দক প্রান্তরে আলীর রাঃ বিরত্ব...

লিখেছেন লিখেছেন ওমার আল ফারুক ৩১ মে, ২০১৪, ০৯:৫৯:৩৬ সকাল

খন্দকের যুদ্ধ।

পরিখার ওপারে দশ হাজার মুশরিক সৈন্য। আর এপাড়ে প্রতিরোধের জন্য দাঁড়ানো আড়াই হাজার মুসলিম।

মদীনায় প্রবেশের মুখে পরিখা দেখে মুশরিক বাহিনী বিমূঢ় হয়ে পড়েছিল। কারণ পরিখা খনন করে প্রতিরোধের কৌশলের সাথে আরবরা পরিচিত নয়। বিমূঢ় ভাব তাদের কেটে যাবার পর তার অস্থির হয়ে পড়ল। পরিখা অতিক্রমের জন্যে অগভীর ও প্রশস্ত কোন জায়গা তার তালাশ করতে লাগল। পাহাড়ের কিনারে যেখানে পরিখা শেষ হয়েছে, সেখানে এমন একটি সুবিধামত জায়গা তার পেয়ে গেল।

তার পরিকল্পনা করল এই পথে তারা দুর্ধর্ষ ও অজেয় একটি ক্ষুদ্র বাহিনী প্রেরণ করবে। তার ওপাড়ে গিয়ে পরিখার এই অংশকে শত্রুমুক্ত রাখবে এবং সেই সুযোগে অবশিষ্ট সৈন্য ঐ পথে নগরে প্রবেশ করবে। তার ক্ষুদ্র বাহিনীর সেনাধ্যক্ষ নির্বাচন করল আরবের সর্বজনবিদিত শ্রেষ্ঠ বীর আমর ইবনে আব্দে ওদ্দ এবং অমিত সাহসী তরুণ সেনাধ্যক্ষ আকরামা ইবনে আবু জেহেলকে। আরবের মানুষের সাধারণ ধারণা, আমর একাই এক হাজার যোদ্ধার সাথে লাড়াই করে জিততে পারবে। আমর প্রথমে তার ঘোড়া নিয়ে লাফিয়ে পরিখা অতিক্রম করল। তারপর অন্যান্যরা। আমর ওপাড়ে পার হয়েই ভয়াল আকারে তর্জন-গর্জন শুরু করে দিল, কে আছ একেতো শত্রুর একটি দল পরিখা অতিক্রমে সমর্থ হয়েছে! তার উপর পরিখা অতিক্রম করেছে আমর-এর মত পালোয়ান। প্রথমটায় মুসলমানরা চমকে েিগয়ে কিছুটা বিমূঢ় হয়ে পড়েছিল। সে কারণেই আমর প্রথম দিকে তার আস্ফালনের কোন জবাব পেল না। আমরের তর্জন-গর্জন অব্যাহত। আহবান জানাচেহ্ছ কাউকে সে যুদ্ধের। ‘এই যে আমি আছি’ বলে শেরে খোদা হযরত আলী বেরিয়ে এলেন। আমরের তুলনায় হযরত আলী বালক-সদৃশ। আমর মহাবীর ও বহুদর্শী এক বিশাল পালোয়ান। আর হযরত আলী মাত্র এক নব্য তরুণ। মহানবী (সা) হযরত আলীকে লক্ষ্য করে ত্বরিত কণ্ঠে বললেন, ‘জানো তো, সে আমর।’ হযরত আলী ঘুরে দাঁড়িয়ে সসম্ভ্রমে বললেন, ‘সে আমর, আমিও আলী।’ বলেই হযরত আলী মহানবীর অনুমতি নিয়ে উলংগ তরবারী হাতে ছুটলেন আমরের দিকে। শুরু হলো যুদ্ধ। মুহূর্তেই ধুলায় অন্ধকার হয়ে গেল স্থানটা। অস্ত্রের ঝনঝনানি ছাড়া কিছুই দৃষ্টিগোচর হলো না কারও। ভয়াবহ এই যুদ্ধের একদিকে শক্তি, অন্যদিকে ঈমানের তেজ। শক্তির সাথে ঈমানের তেজের লড়াই। মহানবীর (সা) কণ্ঠে তখন করুণ প্রার্থনা, হে আল্লাহ, বদর যুদ্ধে ওবায়দাকে গ্রহণ করেছে, ওহোদের অনল পরীক্ষায় হামজাকে তুমি নিয়েছ, আর এই আলী তোমার সন্নিধানে উপস্থিত। সে আমার পরমাত্মীয়। আমাকে একদম স্বজন-বর্জিত করো না। মুসলমানরা বাক্হীন রুদ্ধশ্বাসে ধুলায় অন্ধকার যুদ্ধক্ষেত্রের দিকে তাকিয়ে। তাদের উদ্বিগ্ন, অচঞ্চল চোখ অপেক্ষা করছে ফলাফলের। এক সময় ধুলায় অন্ধকার যুদ্ধক্ষেত্রে থেকে আল্লাহু আকবার নিনাদ ধ্বনিত হলো হযরত আলীর কণ্ঠে। সংগে সহস্র কণ্ঠে আবেগ আনন্দ-আপ্লুত প্রতিধ্বনি উঠল, আল্লাহু আকবার।

এই বিজয় আনন্দের বন্যাবেগ সৃষ্টি করল মুসলমানদে মধ্যে।

বিষয়: বিবিধ

১২৬৮ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

228587
৩১ মে ২০১৪ সকাল ১০:২১
সন্ধাতারা লিখেছেন : ভালো লাগলো খু-ব অনেক ধন্যবাদ
228588
৩১ মে ২০১৪ সকাল ১০:২৩
শাহ আলম বাদশা লিখেছেন : এককথায় চমৎকার!!
228612
৩১ মে ২০১৪ দুপুর ১২:০৯
সন্ধাতারা লিখেছেন : Really amaizing !!!!!!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File