শিশুদের উপর এ অবিচারের শেষ কোথায়???

লিখেছেন লিখেছেন শারমিন হক ১৬ আগস্ট, ২০১৫, ০২:২০:২৬ দুপুর

সামাজিক অবক্ষয় সমাজ ধ্বংসের মূল কারিগর।সমাজে যখন সামাজিক বিষয়গুলোর ক্ষয়প্রাপ্তি শুরু হয় তখনই সমাজের অধঃপতন ঘটতে শুরু করে যার নাম সামাজিক অবক্ষয়।সামাজকি বিষয়গুলোর মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ হচ্ছে প্রধান।আর সমাজব্যবস্থায় এই মনুষ্যত্ববোধ লোপ পেলে কিংবা ঘাটতি থাকলে সমাজে নেমে আসে নানা ধরণের বিশৃঙ্খলা।সমাজে অসামাজিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাওয় হচ্ছে সামাজিক অবক্ষয়ের লক্ষণ।বর্তমানে আমাদের সমাজে অসামাজিক কর্মকাণ্ড দিনে দিনে বেড়েই চলেছে ,কমার কোন লক্ষণ।এই অসামাজিক কর্মকাণ্ড এমন ধারায় হচ্ছে যেখানে থাকছে না মানবতার কোন স্থান।সামাজিক অবক্ষয়ে সমাজব্যবস্থা প্রতিনিয়ত কলুষিত এবং কলংকিত হচ্ছে।যার আকার এতটাই প্রবল যে সাধারণ মানুষের হৃদয়কে রক্তা্ত্ত করে স্তম্ভিত করে দিচ্ছে।

সভ্যতার এত উন্নতি হওয়া সত্ত্বেও বর্তমানে সমাজব্যবস্থা এমন একটি পর্যায় এস পৌছেছে য়েখানে আমাদেরকে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে আসলেই আমরা মানুষ না পশু?

হ্যা,আমি শিশুহত্যার কথাই বলছি।এমন পৈশাচিকতা জন্তু-জানোয়ারকেও হার মানায়।হয়তো এমন নারকীয় হত্যাকাণ্ড মানুষ সভ্য হয়ে গড়ে ওঠার আগেও করেনি।মানুষ কতটা পাষণ্ড হলে এমন পৈশাচিক কাজ করতে পারে তা ধারণার বহির্ভূত।

টিকন,সামিউল,আদনান এরা সবাই কোমলমতির নিষ্পাপ শিশু।কিন্তু,সবাই নির্মম হত্যার শিকার।প্রতিনিয়তই বেড়ে চলেছে শিশু হত্যা ।কেন এ জঘণ্য পাপকাজ সমাজকে আকড়ে ধরতে চাচ্ছে,কোথায় এর শেষ!

চট্টগ্রামের চান্দগাওয়ের শিশু টিকন।মা গার্মেন্টেসের শ্রমিক।ছোট শিশু মায়ের জন্য মন কাদে।মায়ের জন্য সময়ে অসময়ে কান্না করা কেড়ে নিল তার জীবন।শুধু মাত্র কান্না করার অপরাধে নির্দয় মামার শাসনের নামে দুঃশাসনের পিটুনীতে মৃত্যু হয় টিকনের।

সিলেটের কুমারগাওয়ে চতুর্থ শ্রেনীতে পড়ুয়া সামিউল কিছু বিকৃত মানুষের লালসার শিকার হয়ে জীবনের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে।দরিদ্র পরিবারে সন্তান সামিউল সবজি বিক্রি করে সংসারের যোগান চালাতে বাবাকে সাহায্য করত।কিছু সম্পাদশালী লোক চোরের অপবাদ দিয়ে খুটির সাথে বেধে অমানবিকভাবে নির্যাতন চালায়।এ যেন মধ্যযুগীয় বর্ববরতাকেও হার মানিয়েছে।শিশুটি মৃত্যর পূর্বে পানি চেয়েছিল কিন্তু তাও পায়নি।হত্যাকারীরা পৈশাচিকতার চরম শিখরে ওঠে হত্যার দৃশ্য ভিডিও করে ইন্টারনেটে দেয় যা দেখে মানুষের হৃদয় ক্ষতবিক্ষত হয়েছে।

রাজশাহীর পবা উপজেলায় স্ত্রী এর উপর রাগ করে ছয় বছরের আদনানকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে এক নির্দয় পিতা।মানুষের মায়া নামক অনুভূতি কি হারিয়ে গেল না যাচ্ছে? কি নিষ্ঠুর হয়ে যাচ্ছে মানুষের হৃদয়।বাবার হাতে ,বাবার হাতে কিংবা অন্য মানুষদের হাতে এসব কি ঘটছে?তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে এমন লোহমর্ষক ঘটনার বৃদ্ধি সকলেই হতবাক!

সর্বশেষ মায়ের পেটে গুলিবিদ্ধ বেচে যায় আট মাসের এক নবজাতক।

এগুলো কেন হচ্ছে?কোথায় মানবতা?

শিষ্টচারিতা,মাদকাসক্তি,অসুস্থ রাজনীতি,সৌজন্যবোধ,মূল্যবোধের অবক্ষয়,বেকারত্ত্ব,ইসলামিক শিক্ষার অভাব,পারিবারিক শিক্ষার অভাব,অপসংস্কৃতি,কু-সংস্কার,বিশ্বাসহীনতা,মোবাইলফোন ,ইন্টারনেট,,মন্যুষত্ববোধ ,বিচার ব্যবস্থা সহ প্রত্যেকটি বিষয় এমন নিকৃষ্ঠতম ঘটনার জন্য দায়ী।

দেশের সাধারণ মানুষদের চাওয়া-প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হোক,দেশে শান্তি ফিরে আসুক,কোমলমতি শিশু গুলো অকালে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পাক।সরকারী হস্তক্ষেপ এবং প্রশাসন ব্যবস্থা পারে মানুষের এসব আশাকে সত্য করতে।

বিষয়: বিবিধ

১১৫৯ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

336165
১৬ আগস্ট ২০১৫ দুপুর ০২:৩০
নারী লিখেছেন : সভ্যতা যত আগাচ্ছে মানুষ হচ্ছে ততই অসভ্য ততই পাগল
336212
১৬ আগস্ট ২০১৫ বিকাল ০৫:৫৩
নাবিক লিখেছেন : কি বলবো, এখন উল্টো করে একটা কথা বলতে ইচ্ছে করে "পশু হও মানুষ হয়ো না।"
336215
১৬ আগস্ট ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:১১
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : মানুষের মধ্য থেকে ধৈর্য ও মানবতাবোধ চলে গেছে। আর শিশুরা সহজ শিকার।
336233
১৬ আগস্ট ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:২৪
আবু জান্নাত লিখেছেন : দিন দিন মানবতা হারিয়ে যাচ্ছে। সুন্দর পোষ্ট, অনেক অনেক ধন্যবাদ
336283
১৬ আগস্ট ২০১৫ রাত ০৯:৪৯
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : বিচারহীনতা, অজ্ঞতা, নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষার অভাবে শিশু হত্যার উৎসব চলছে।
336424
১৭ আগস্ট ২০১৫ দুপুর ০৩:৫০
অভিমানী বালক লিখেছেন : সময় উপযোগী লেখনী,
এক কথায় বলা যেতে পারে "মানবতা বর্তমানে বিকলাঙ্গ"।
336762
১৯ আগস্ট ২০১৫ রাত ০২:২০
মামুন আব্দুল্লাহ লিখেছেন : মানবতা উঠে গেছে বদলে দিয়েছে সব
কেউ কারো নয় আজ কেউ কারো নয় ।
মানবতা আজ মহা বিপন্ন ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File