উত্তেজিত বিশ্ববাসী, কিভাবে হবে শান্ত...?

লিখেছেন লিখেছেন সত্যের ২০ জানুয়ারি, ২০১৫, ০১:০৭:৫৬ দুপুর



বিষয়টি বুঝার জন্য, উদাহারণ স্বরুপ একটি বিদ্যালয়ের প্রতি দৃষ্টিপাত করি।

সকল ধর্মের লোক (ইসলাম, খ্রিষ্টান, হিন্দু, বৌদ্ধ, ইহুদী......) বিদ্যালয়ের একটি শ্রেণীতে মিলেমিশে ক্লাশ করে । ধর্মীয় বিষয়টি ভিন্ন ক্লাশে তাদের ধর্মীয় শিক্ষক নেন ।

ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ধর্মীয় বিষয়ে নেই কোন বাড়াবাড়ি, মারামারি, নেই কোন ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ, কটুক্তি ।

আছে একসাথে উঠাবসা, খেলাধুলা, শ্রেষ্ঠ হওয়ার প্রতিযোগীতা ।

(যদি কোন ধর্মীয় দূর্ঘটনা ঘটে যায়, তবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও সকল ধর্মীয় শিক্ষক সম্মিলীতভাবে, দোষীকে সাময়ীক সাজা বা বহিষ্কার করেন, যাতে কোন হানাহানী বা মানবাধিকার লঙ্ঘিত না হয়)

এবার

বিশ্বটাকে বিদ্যালয়ের সাথে তুলনা করলে কি দেখা যায় ?

সকল ধর্মের জ্ঞানীরা/অনুসারীরা কি? শুধু তাদের ধর্মীয় বিষয় নিয়ে চিন্তা-ভাবনা, গবেষণা করে !!!

এমন কি? নিজ ধর্মের বা অন্য ধর্মের কোন নিয়ম-নীতিকে বিকৃতি, ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ, কটুক্তি করে না !!!

বরং প্রতি নিয়তঃ নিজ ধর্ম ও ভিন্ন ধর্মের প্রতি মুখের দ্বারা, প্রিন্ট মিডিয়া/ইন্টারনেট/টিভি/রেডিও দ্বারা ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ, কটুক্তি, অস্ত্রের দ্বরা......আক্রমণ চলছেই ।

বর্তমানে বিশ্ববাসীর উত্তেজিত হওয়ার প্রধান কারন, এই ধর্মীয় বাড়াবাড়ি বলে আমি মনে করি ।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন-لَا إِكْرَاهَ فِي الدِّينِ ۖ

ধর্মে জবরদস্তি নেই (২ঃ২৫৬)

এই আয়াতের মর্মার্থ কি !!!

নিজ ধর্ম বা অন্য ধর্মের প্রতি তথ্য সন্ত্রাস ও অস্ত্র সন্ত্রাস চালালেও কোন কিছু বলা, করা যাবে না, এমন নয়

বরং নিজ ধর্মের নিয়ম নীতি মুল ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী পালন করা, কোন পন্থায়ই নিজ ধর্মের ও অন্য ধর্মের নিয়ম নীতির বিকৃতি, ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ, কটুক্তি করা যাবে না ।

জোর জবরদস্তি করে, অর্থ-সম্পদের লোভ দেখিয়ে অর্থাৎ পার্থিব স্বার্থ দেখিয়ে ধর্মান্তরিত করা যাবে না ।

মুলতঃ কোন ধর্মের নিয়ম নীতি মনে প্রাণে গ্রহন না করে, পার্থিব স্বার্থে ধর্মান্তরিত হলে, স্ব-ধর্মের বহু নিয়ম নীতি জানার পরেও, আত্মস্বার্থে বিরোধিতা করে মেনে চলবে না ।

বিশ্ব বিবেগ যদি ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ, কটুক্তি, অন্যায়কারীর বিচার সাজা না করে তার পক্ষ নেয়, তাহলে ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী জংগী বলেন, সন্ত্রাসী বলেন, আত্মঘাতী বলেন, চোরাগুপ্তা যাই বলেন না কেন, যেকোন পন্থাই ধর্মের লোকেরা প্রতিহত করার চেষ্টা করবেই ।

<***>কিভাবে হবে শান্তঃ.........?

বিশ্বের কর্ণধার বিশেষ করে “জাতিসংঘ”, সকল ধর্মীয় অর্গানাইজ, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান......আরো যারা বিশ্ব শান্তির কথা বলে, শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তাদেরই ধর্মীয় বাড়াবাড়ির ব্যাপারে নিরপেক্ষভাবে চিন্তা ভাবনা করে নানা কর্মসুচী ও কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে ।

আমি ক্ষুদ্র জ্ঞানের মানুষ হিসাবে কিছু প্রস্তাব পেশ করছি

১) এক ধর্মের লোক নিজ ধর্ম ও অন্য ধর্মের নিয়ম-নীতির বিরুদ্ধে মুল ধর্মগ্রন্থের প্রমান ছাড়া বলতে পারবে না ।

২) যদি কোন ধর্মের মুল গ্রন্থের কোন বাণির অনুবাদ, ব্যাখ্যা করেন, তাহলে ঐ ধর্মের জ্ঞানীরা যে অনুবাদ, ব্যাখ্যা করেছেন, তাদের সাথে মিল করে প্রমান সহ উল্লেখ করবেন । অর্থাৎ ব্যক্তিগত মনগড়া অনুবাদ, ব্যাখ্যা করা যাবে না ।

৩) যে কোন ধর্মের প্রচলিত ভুল, নব আবিষ্কার (বেদাত) যা মুল গ্রন্থে ও জ্ঞানীদের অনুবাদ, ব্যাখ্যায় নেই, তা উল্লেখ করলে অবশ্যই মুল গ্রন্থের ও জ্ঞানীদের প্রমান দেখাতে হবে এবং অশ্লীল, কটাক্ষ ভাষায় না বলে শালীন ভাষায় বলতে হবে ।

৪) কেউ যদি স্ব-ধর্মের কোন প্রমান ছাড়াই বিরোধীতা করে, তাহলে ঐ ধর্মের জ্ঞানীরা তাদের ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী বিচার করবে । ভিন্ন ধর্মের লোকেরা দোষীকে আশ্রয় দিবে না, কোন পক্ষাবলম্বন করবে না ।

৫) এক ধর্মের লোক অন্য ধর্মের জ্ঞানীদের ও নিয়ম নীতির বিকৃতি, ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ, কটুক্তি করলে, স্বীয় ধর্মের লোকেরা, যে ধর্মকে আঘাত করেছে সেই ধর্মের নিয়ম অনুযায়ী বিচার করবে ।

৬) স্বেচ্ছায় ধর্মান্তরিত হওয়ার পর, পূর্বের ধর্মীয় সমাজে বাস না করে, তার নবগৃহীত ধর্মের সমাজে বসবাস করবে । তার পৈত্রিক সম্পত্তি প্রচলিত দামে বিক্রি করে দিবে । এতে কোন ধর্মের লোক বাঁধা দিতে পারবে না ।

৭) প্রথমবার ধর্মদ্রোহীর অভিযোগ হলে, কোন বাড়াবাড়ি ছাড়াই স্বীকার করলে, আর খাঁটি মনে জীবনে আর করবে না বলে বিশ্ববাসীর নিকট ক্ষমা চাইলে, অর্থদন্ড করে ক্ষমা করা যাবে । পুনরায় করলে সাজা অবধারিত ।

৮) প্রথমবার ধর্মদ্রোহী হোক বা পুনরায় হোক, যদি মিথ্যার আশ্রয় নেয়, বাড়াবাড়ি করে, আর তদন্তে ধর্মদ্রোহী প্রমানিত হয়, তাহলেও সাজা অবধারিত ।

বর্তমানে এই পয়েন্টগুলো ধর্মীয় উত্তেজনা নিরসনের জন্য, আমার নিকট গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে ।

জ্ঞানীদের দৃষ্টিতে বিশ্ব শান্তির জন্য আরো কোন বিষয় থাকলে চিন্তা-ভাবনা করবেন ।

ধর্মীয় বাড়াবাড়ি প্রতিরোধের জন্য সকল ধর্মের জ্ঞানীদের নিয়ে একটি কার্যকরী নিরপেক্ষ ধর্মীয় অর্গানাইজেশন গঠনের আহবান জানাচ্ছি ।

আমার লেখাতে অশান্তির কোন কথা বা ভুল ত্রুটি থাকলে মতামত দিয়ে জানালে সংশোধিত হব । ইন-শাহ-আল্লাহ!

আসুন বিশ্ব শান্তির জন্য, আমরা যে ধর্মের হই না কেন, শুধু নিজ ধর্মের মুল গ্রন্থ ও জ্ঞানীদের অনুবাদ, ব্যাখ্যা নিয়ে চিন্তা, গবেষণা করে স্ব-ধর্মের নিয়ম নীতি পরিপূর্ণরূপে পালন করি,

আর অন্য ধর্মের জ্ঞানীদের ও নিয়ম নীতির বিকৃতি, ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ, কটুক্তি করা থেকে বিরত থাকি ।

বিষয়: বিবিধ

১১৩২ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

300911
২০ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০২:২০
হতভাগা লিখেছেন : খলের হয় না অভাব ছলের

এত কথা বুঝি না - ব্লাসফেমী আইন আনতে হবে এবং কথার উপর কড়া হারে ট্যাক্স বসাতে হবে।
300964
২০ জানুয়ারি ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৩৮
মোতাহারুল ইসলাম লিখেছেন : ইন্নাদ্দ্বিনা এন্দাল্লাহেল ইসলাম। ইসলামে যেমন কাউকে জোর করে ঢুকানো যাবেনা, তেমনি কেউ ইসলাম নিয়ে কেউ তামাশা বা কটুক্তি করবে সেটাও বরদাশত করা যাবেনা।
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:২৮
244911
সত্যের লিখেছেন : রাইট

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File