ইসলামী ব্যাংক এখনো দেশে আছে?

লিখেছেন লিখেছেন পান্থ নজরুল ১৬ মে, ২০১৩, ০৫:৫৪:২৩ বিকাল

আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা এবং একদল সৎ ও দক্ষকর্মী বাহিনীর নিরলস প্রচেষ্টার ফলে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড আজ দেশের সেরা ব্যাংক। বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ গ্রাহকের বিশ্বাস ও আস্থার প্রতীক ইসলামী ব্যাংক। এটি ইসলামী শরীয়া মোতাবেক পরিচালিত হলেও ব্যাংকটির আধুনিক এবং অনুপম সেবার কারণেই বিভিন্ন ধর্মের হাজার হাজার নারী পুরুষ ব্যাংকটির গ্রাহক।

ব্যাংকটির কর্মকর্তা কর্মচারীদের আন্তরিক সেবা এবং হৃদয়গ্রাহী ব্যবহার গ্রাহকদের তুষ্ট করতে সমর্থ হয়েছে। আর এ কারণেই একটি কুচক্রী মহলের দূর্গন্ধময় অপপ্রচারের পরও এটি সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে। সম্ভবত ব্যাংকটির আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তার কারণেই মন্ত্রিপরিষদ ইসলামী ব্যাংকে হাত না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও দু’একজন গণবিচ্ছিন্ন মন্ত্রী ব্যাংকটি বন্ধ করে দেয়া হবে বলে একটু আধটু লম্প-জম্প করেছিল।

বাংলাদেশের শিল্প-কারখানা-ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়ন ছাড়াও সামাজিক কর্মকান্ডে ইসলামী ব্যাংকের অংশগ্রহণ ঈষর্ণীয়। দেশের প্রতিটি দুর্যোগে এ ব্যাংক জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। সমাজের দরিদ্র জনগণের বিশেষ করে গ্রামীন জনগণের জীবন-মান উন্নয়নে এ ব্যাংক বাস্তবধর্মী ব্যবস্থা নিয়েছে। লোক দেখানোর জন্য নয় প্রকৃতই গ্রামের হতদরিদ্র জনগণের গরিবি হঠাতে ইসলামী ব্যাংক টেকসই পদক্ষেপ নিয়েছে। যা ব্যাংকিং জগতে নজিরবিহীন।

ইসলামী ব্যাংক কাউকে খুশী করা কিংবা পদক পাওয়ার আশায় কাজ করে না। মহান রব্বুল আলামীনকে খুশী করা এ ব্যাংকের একমাত্র লক্ষ। আল্লাহ তা’য়ালার হুকুম ‘ব্যবসা হালাল-সুদ হারাম’ বাস্তবায়নে তৎপর রয়েছে ব্যাংকটি। স্রষ্টার আদেশ-নিষেধ পালনেই রয়েছে সৃষ্টির কল্যাণ। এ কারণেই আমরা দেখি বিশ্বমন্দায় বিশ্বের প্রায় সকল ব্যাংকে ধস নামলেও ইসলামী ব্যাংকগুলো ছিল মাতৃক্রোরের মতো নিরাপদ।

ইসলামী ব্যাংক সম্পর্কে উপরের কথাগুলো বললাম যে জন্যে তা হলো - গতকাল কিশোরগঞ্জের আদালত পাড়ায় ইসলামী ব্যাংকের একটি মামলার ফাইল দেখে একজন হিন্দু এপিপি তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন। তিনি যুগপৎ বিস্ময় এবং ক্ষোভের সাথে বলেন, ইসলামী ব্যাংক এখনো দেশে আছে? ভাবখানা এমন যে ইসলামী ব্যাংক তো অনেক আগেই 'শেষ' করে দেওয়া হয়েছে! তিনি ইসলামী ব্যাংক সম্পর্কে অকথ্য ভাষায় সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট গাল-গল্প উদগীরণ করেন যা শুনে উপস্থিত সবাই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। কিন্তু কেউ তার কটু এবং বিশ্রী কথার প্রতিবাদ করতে পারেন নি কারণ তিনি শক্তিশালী একটি দলের লেবেলধারী লোক।

একটি কথা সকলের মনে রাখতে হবে বা মনে রাখা উচিত, ইসলামী ব্যাংক কোনো দল বা গোষ্ঠীর ব্যাংক নয়। এটি দল-মত ধর্ম-বর্ণ নারী-পুরুষ যুবা-যুবতী ছাত্র-ছাত্রী নির্বিশেষে সকলের ব্যাংক। সুতরাং বিশেষ দলের পরিচয়ে ইসলামী ব্যাংক সম্পর্কে মিথ্যাচার বা অপপ্রচার করার সুযোগ নেই। মূলত ইসলাম বিদ্বেষী মতলববাজরা সুযোগ পেলেই নগ্নভাবে ইসলামী ব্যাংকের উপর চড়াও হয়। এদের টার্গেট মূলত ইসলাম বা ইসলামী বিধান।

ইসলামী ব্যাংকের অনিন্দ্য সেবার কারণে অন্য ধর্মের লোকেরা ব্যাংকটির সেবা গ্রহণ করলেও মুসলিমদের সাথে তাদের ইষৎ আত্মিক তফাৎ রয়েছে। যখন কোনো মুসলিম ইসলামী ব্যাংকিং বেছে নেয় তখন তার মনে হালাল-হারামের অনুভূতি কাজ করে। আর সে জন্যেই কোনো কুলাঙ্গার যখন ইসলামী ব্যাংককে রক্ত চক্ষু দেখায়, অশালীন মন্তব্য করে তখন মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে।

গণমানুষের প্রাণ-প্রিয় ইসলামী ব্যাংক সম্পর্কে অহেতুক অপপ্রচার বা মিথ্যাচার করে কিংবা রক্ত চক্ষু দেখিয়ে কোনো ফায়দা হবে না। এ ধ্রুব সত্যটুকু সংশ্লিষ্টরা যত জলদি অনুধাবন করতে পারবেন তত জলদি কল্যাণমুখী ব্যাংকিং ধারার প্রবর্তক ইসলামী ব্যাংকের সুফল ভোগ করতে পারবেন।

আমরা আশা করবো যারা না জেনে, না শুনে, না বুঝে ইসলামী ব্যাংক সম্পর্কে বিরূপ ধারণা পোষন করছেন তারা ব্যাংকটি সম্পর্কে জানুন, বুঝুন এবং সত্যকে উপলব্ধি করে বৈরীতা পরিহার করে ইসলামী ব্যাংকের অগ্রযাত্রার সাথী হয়ে নিজেকে গর্বিত করুন। পবিত্র কোরানের নির্দেশ ‘ব্যবসা হালাল-সুদ হারাম’ বাস্তবায়ন প্রচেষ্টায় শরীক হয়ে পরকালের সফলতা অর্জন করুন।

বিষয়: বিবিধ

১৬৩০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File