কুরআন কি মানবরচিত গ্রন্থ?

লিখেছেন লিখেছেন তাইছির মাহমুদ ১১ মে, ২০১৮, ১২:৫১:৫৩ দুপুর

রামাদ্বান অত্যাসন্ন । আর বাকি মাত্র চার অথবা পাঁচ দিন। এই মাসটির আগমনী বার্তা কারো জন্য অনাবিল আনন্দের। কারো জন্য আবার বিষাদের। কেউ বলছেন, আহলান সাহলান মাহে রামাদ্বান। কেউ বলছেন- এই যা! রামাদ্বান চলে এলো। সারাদিন সিগারেট-বিড়ি থেকে বঞ্চিত হতে হবে । তবে রামাদ্বান শান্তি ও মুক্তির বার্তা নিয়েই আমাদের দোরগোড়ায় সমুপস্থিত। তাই আমরা সকলেই বলি- "খোশ আমদেদ মাহে রামাদ্বান"।

সে যাক। রামাদ্বান হচ্ছে কুরআন নাজিলের মাস, রামাদ্বান কুরআন চর্চার মাস। রামাদ্বান এলে জিবরিল (অাঃ) নিয়মিত আল্লাহর রাসুলের (সাঃ) কাছে আসতেন। তাঁকে সঙ্গে নিয়ে পবিত্র কুরআনের অনুশীলন

করতেন । তাই রামাদ্বানে বেশি করে কুরআন পড়া ও বুঝার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে । একাধিক খতম করার চেষ্টা করা, তবে কমপক্ষে একবার তেলাওয়াত সম্পন্ন করার তাগিদ এসেছে ।

পৃথিবীতে এমন কোনো গ্রন্থ নেই; যা পড়লে সাওয়াব পাওয়া যায়। একমাত্র গ্রন্থ হচ্ছে কুরআন। যার একটি অক্ষর তেলাওয়াত করলে বা উচ্চারণ করলেই দশটি পণ্য লেখা হয়ে যায় । আর রামাদ্বানে সেটি বেড়ে যায় অনেক গুণ। আর তাই রামাদ্বানকে যারা স্বাগত জানান, তাঁরা এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না ।

দৈনন্দিন কর্মব্যস্ততার মধ্যে ত্রিশ দিনে কুরআন খতম করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাই রামাদ্বানের পাঁচদিন আগেই আজ শুরু করলাম । আল্লাহ ভরসা যতটুকু সম্ভব। সুরা বাকারার একষট্রি আয়াত পর্যন্ত পড়লাম আজ। আজকের মর্নিং তাফসির থেকে আমার উপলব্ধিতে আসা একটি বিষয় সকলের সাথে শেয়ার করতে চাই।

কুরআনের প্রথম সুরা বাকারা শুরু হয়েছে, 'আলিফ-লাম-মীম" দিয়ে । কুরআনের ১১৪টি সুরার মধ্যে বেশ কয়েকটি সুরা এ ধরনের বিচ্ছিন্ন অক্ষর দিয়ে শুরু করা হয়েছে। যাকে বলা হয়, হুরুফে মুকাত্তায়াত। এই আলিফ-লাম-মীম এর প্রকৃত অর্থ কী, তা সঠিক করে কেউ বলতে পারেননি । মুফাসিসরগণ বিভিন্নভাবে তাফসীর করেছেন। কেউ বলেছেন, এটা আল্লাহর বিশেষ রহস্য। কেউ বলেছেন, আলিফ দিয়ে আল্লাহ, লাম দিয়ে জিবরিল ও মীম দিয়ে মুহাম্মদ বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা জিবরিল (আঃ) এর মাধ্যমে মুহাম্মদ (সাঃ) এর ওপর কুরআন অবতীর্ণ করেছেন । তবে সব ব্যাখ্যাই অনুমাননির্ভর। এসব ব্যাখ্যার কোনো দলিল নেই। কারণ আল্লাহ তায়ালা এই অক্ষরগুলো কোন অর্থে অবতীর্ণ করেছেন- তা পরিস্কার করে বলে দেননি।

কিন্তু আজ যখন তেলাওয়াত করছি, তখন মনের মধ্যে একটি উপলব্ধি এলো। সুরার প্রথমে বিচ্ছিন্ন অক্ষরগুলো নাজিল করার একটি বিশেষ উদ্দেশ্য হতে পারে? তা হলো, কুরআন যে মানবরচিত কোনো গ্রন্থ নয়- এর একটি প্রমাণ । এই গ্রন্থের প্রতিটি অক্ষর ও কথামালা সৃষ্টিকর্তার । কারণ কোনো মানুষ এই গ্রন্থ রচনা করলে তিনি (লেখক) প্রতিটি অক্ষরের ব্যাখ্যা দিতে পারতেন । মুহাম্মদ (সাঃ) নিজে কুরআন রচনা করলে তিনি বলতেন না, আমি এই অক্ষরগুলোর অর্থ জানি না। কেউ কোনো গল্প, উপন্যাস কিংবা কবিতা লিখে বলেন না, আমি এই দুই লাইনের অর্থ জানিনা। লেখক অবশ্যই জানবেন তিনি কোন উদ্দেশ্যে, কী বুঝাতে, কী লিখেছেন। তাই কুরআন যে মানরচিত কোনো গ্রন্থ নয়- এই বিচ্ছিন্ন অক্ষরগুলো তা বুঝতে আমাদেরকে সহযোগিতা করে। তবে আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন তিনি কোন উদ্দেশ্যে নাজিল করেছেন। যারা মনে করেন কুরআন মানবরচিত গ্রন্থ, তাদের কাছে আমার এই ব্যাখ্যা কি চিন্তার খোরাক জমাতে পারে?

তাইসির মাহমুদ

লন্ডন, যুক্তরাজ্য

১১ মে ২০১৮

বিষয়: বিবিধ

৭৫৩ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

385337
১২ মে ২০১৮ সন্ধ্যা ০৭:০৫
শেখের পোলা লিখেছেন : পবিত্র কোরআনে এ হরফে মুকাত্তায়াত গুলিকে আল্লাহর কোড নং বলে মনে করা হয়। হরফে মুকাত্তায়াত বিশিষ্ট কয়েকটি সুরা জরিপ করে দেখ গেছে যে ঐ হরফ গুলি ঐ সুরায় যতবার ব্যবহার হয়েছে তার যোগফল ১৯ দ্দারা বিভাজ্য। কোরআনে ১৯ সংখ্যাটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হয়ত এখানেও তা হতে পারে। আল্লাহই ভাল জানেন।
385568
২১ জুন ২০১৮ সন্ধ্যা ০৬:১৭
তাইছির মাহমুদ লিখেছেন : Yes

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File