মর্নিং তাফসির- (তিন)

লিখেছেন লিখেছেন তাইছির মাহমুদ ০৯ জানুয়ারি, ২০১৮, ০৪:১৪:৪৬ বিকাল

মর্নিং তাফসির- (তিন)

******************

বছর কয়েক আগে পবিত্র কুরআনের অনুবাদ ও তাফসির পড়তে শুরু করেছিলাম । প্রতিদিনই সকালে দু'চার আয়াত করে পড়ার চেষ্টা করি । এই চেষ্টা এখন শেষ পর্যায়ে। আজ সুরা 'নাসর' (ইজা জা-আ) পড়লাম। সুরা কাওসার পর্যন্ত যখন এলাম তখন মনে হলো- আমি যা পড়ি, যা শিখি তাতে কেন অন্যকে সম্পৃক্ত করছিনা। আমার শেখা থেকে যদি কারো পক্ষে একটি শব্দও শিখা সম্ভব হয় তাহলে মন্দ কী? মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের সাথে একজন মানুষকে সম্পৃক্ত করতে পারলাম। আর আজকাল তো ঘরে বসেই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নিজের ভালো কাজের সাথে অন্যকে সম্পৃক্ত করে নেয়া কিংবা অন্যের ভালো কাজের সাথে নিজে সম্পৃক্ত হওয়ার একটি অপার সুযোগ রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া সেই সুযোগটি করে দিয়েছে। এই বিরাট সুযোগ কেন হাতছাড়া করবো?

যেই ভাবা সেই কাজ। শুরু করলাম "মর্নিং তাফসির"। অনেকেই প্রশ্ন করেছেন- মর্নিং তাফসির কী? মর্নিং অর্থ আমরা সকলেই জানি- সকাল। আর তাফসির অর্থ ব্যাখ্যা। তাহলে আক্ষরিক অর্থে শব্দযুগলের অর্থ দাঁড়ায় 'সকালের ব্যাখ্যা' । কিন্ত যেহেতু আমরা তাফসির বলতে পবিত্র কুরআনের তাফসিরই বুঝি, তাই এখানে ভাবার্থ হচ্ছে: সকাল বেলায় পড়া কুরআনের ব্যাখ্যা বা তাফসির।

আজ সুরা 'নাসর' এর তাফসির পড়লাম। মাত্র তিনটি আয়াতের সমন্বয়ে একটি গুরুত্বপুর্ণ সুরা। এটি রাসুল (সাঃ) এর উপর নাজিল হওয়া সর্বশেষ সুরা । এর মধ্য দিয়েই কুরআন নাজিলের সমাপ্তি ঘটে। (নাসায়ী ৬/৫২৫)

সুরাটি নাজিল হওয়ার পর রাসুল (সাঃ) বলেছিলেন, আমাকে আমার মৃতু্যর খবর জানিয়ে দেয়া হয়েছে । আর আসলে হয়েছিলোও তাই । যে বছর সুরাটি নাজিল হয় ওই বছরই তিনি ইন্তেকাল করেন। (আহমদ ১/২১৭)

সুরার মুল বিষয়বস্তু হচ্ছে মক্কা বিজয়ের সুসংবাদ । আল্লাহ তায়ালা তার রাসুল (সাঃ) কে সুসংবাদ দিচ্ছিলেন যে, খুব শিগগিরই মক্কা বিজয় হবে। আর যখনই মক্কা বিজয় হবে তখনই মানুষ দলে দলে ইসলামে প্রবেশ করতে লাগবে। সাথে সাথে রাসুল (সাঃ)কে এই বলে উপদেশও দিলেন, যখন বিজয় আসবে তখন তিনি যেনো এই বিজয়ের জন্য আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা করেন। তার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেন। কারণ আল্লাহ তায়ালাই তো তাঁকে এই বিজয় দান করেছেন।

এই সুরার আরো একটি বড় শিক্ষা হচ্ছে, যে কোনো ধরনের বিজয় লাভে বা অর্জনে মনের মধ্যে অহমিকা চলে না আসা। বিজয় অর্জিত হলে শোডাউন বা বিজয় মিছিল করে প্রতিপক্ষের মনে কষ্ট দেয়া কিংবা হেয় করার চেষ্টা করা, কটাক্য করা অন্যায় । বরং নিজেকে ছোট করে দেখানো এবং বিজয় দানের জন্য আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা করা তার কাছে ক্ষমপ্রার্থনা করাই উত্তম। চলুন সুরা 'নাসর' এর অনুবাদ দেখে নিই।

বিসমিল্লাহ হির রাহমানির রাহিম

পরম করুনাময়, অসীম দয়ালু আল্লাহ তায়ালার নামে (শুরু করছি)।

এক) ইজা জা-আ নাসরুল্লাহি ওয়াল ফাতহ

যখন আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে সাহায্য ও বিজয় আসবে,

দুই) ওয়া রাআইতান না-সা ইয়াদখুলুনা ফি-দ্বী-নিল্লাহি আফওয়াজা।

তখন তুমি (হে নবী) মানুষদেরকে দেখবে দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবশে করছে।

তিন) ফাসাব্বিহ বিহামদি রাব্বিকা ওয়াসতাগফিরহু। ইন্নাহু, কা-না তাওয়াবা।

তখন তুমি (হে নবী) তোমার মালিকের প্রশংসা করো এবং তাঁর কাছেই ক্ষমা প্রার্থনা করো। অবশ্যই তিনি তাওবা কবুলকারী (পরম ক্ষমাশীল)।

তাইসির মাহমুদ

লন্ডন, যুক্তরাজ্য

৯ জানুয়ারি ২০১৮

বিষয়: বিবিধ

৬৩৭ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

384674
১০ জানুয়ারি ২০১৮ সন্ধ্যা ০৬:৫১
সাদাচোখে লিখেছেন : আসসালামুআলাইকুম।
মক্কা বিজয় এর পর আবু বকর রাঃ এর নেতৃত্বে হজ্জ হল আর তার পরের বছর রাসুল সঃ হজ্জ করলেন।


তো?

সুরাটি নাজিল হওয়ার পর রাসুল (সাঃ) বলেছিলেন, আমাকে আমার মৃতু্যর খবর জানিয়ে দেয়া হয়েছে । আর আসলে হয়েছিলোও তাই । যে বছর সুরাটি নাজিল হয় ওই বছরই তিনি ইন্তেকাল করেন। (আহমদ ১/২১৭)

384684
১১ জানুয়ারি ২০১৮ রাত ০১:২৩
মনসুর আহামেদ লিখেছেন : ভালো লাগলো ,

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File