জামাতে ই ইসলামের নিবন্ধন বাতিল ইসলামের বিজয়ের নিদর্শন!!!

লিখেছেন লিখেছেন সাইদ ০২ আগস্ট, ২০১৩, ১২:৪৮:৪৩ দুপুর



বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।আসসালামুআলাইকুম।

জামাতে ই ইসলামীর নিবন্ধন বাতিলে একপক্ষ আজ খুশীতে নাচতেছে আরেকপক্ষে নেমে এসেছে শঙ্কা। বাংলাদেশে কি ইসলামের বিজয় দূরীভূত হয়ে গেলো? হাইকোর্টের রায় মোটেও অপ্রত্যাশিত নয়।হাড়ির একটা ভাত টিপলেই বোঝা যায় বাকি ভাত গুলোর অবস্থা। বর্তমান সরকার,বিচার বিভাগের আচরণ থেকে এই রায় ছিল অনুমেয়।আমি বরং অবাক হয়েছি এই রায়ে এক সন্মানিত বিচারপতি নাকি ভিন্নমত পোষণ করেছেন।সরকারের মতের বিরুদ্ধে রায় দেওয়ার মতো সাহসী বিচারপতি এখনোও আছেন!!বিচার বিভাগের জন্য এটা একটা ভালো লক্ষণ।

গ্রামের এক সাধারণ লোক গ্রাম ছেড়ে কিছুদিনের জন্য দুরে কাজের সন্ধানে যাবে।তার কিছু সম্পদ আছে।সে এই সম্পদ গুলোকে গ্রামের একজনের কাছে আমানত রেখে যেতে চায়।যাতে ফিরে এসে সে এইগুলো বুঝে পায়।গ্রামের ভদ্র,বিশ্বস্ত একজনের কাছে সে আমানত রাখাকে নিরাপদ মনে করে।সে তার আমানত রেখে যায় এবং ফিরে এসে তার কাছ থেকে বুঝেও পায়। পরে গ্রামের লোকটি এই ভদ্রলোকের রাজনৈতিক পরিচয় জানতে পারে।একথা খোদ অন্ধ আওয়ামীলিগার, অন্ধ বিএনপি এবং সাধারণ জনগনও মনে করে আমানত রাখার ক্ষেত্রে জামাত-ই-ইসলামীর লোকদেরকে বিশ্বাস করা যায়।

আরেকটি ঘটনা।বাড়ীতে এক জনের যুবতী মেয়ে আছে।বাবা কাজের জন্য বাড়ীতে থাকেন না।মা এবং মেয়ে মিলে বাড়িতে থাকেন।মায়ের মনে শঙ্কা জাগে।না জানি রাতে তাদের কোনো বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয় কিনা।মেয়ের শঙ্কায় মা একজন যুবককে বাড়িতে রাখতে চায়।যাতে এই যুবক মায়ের মনের অজানা শংকাকে সাহস দিতে পারে।মা যে যুবক কে বাড়ীতে থাকার জন্য অনুরোধ করে সেই যুবক আর কেউ নয়।সে একজন ইসলামী আন্দোলনের কর্মী যাকে আমরা রগ কাটা শিবির বলে অভিহিত করে থাকি।

চারিত্রিক গুনাবলী বলেন, বিশ্বস্ততা বলেন এই সব ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষের দল গুলো থেকে সাধারনভাবে (ব্যাতিক্রম দুই একজনের ক্ষেত্রে থাকতে পারে) ইসলামী ভাব সম্পন্ন দলের লোকেরা অনেক এগিয়ে।এইগুলো সমাজে অনেকটাই প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে সাধারণ জনগণ এমনকি প্রতিপক্ষের দলের লোকদের মধ্যেও।আমার বিস্নয় এখানেই।সাধারণ জনগণ তাহলে কেনো ইসলামী ভাব সম্পন্ন দলগুলোকে ক্ষমতার কেন্দ্রে বসানোর এখনও সুযোগ দেয় নাই?

১৯৭১ সালে জামাত-ই-ইসলামী পাকিস্থানের অখন্ডতার প্রতি সমর্থন করেছিলো।সেই সময় এক শ্রেনীর রাজাকারদের নির্যাতনও প্রতিষ্ঠিত।দল মত নির্বিশেষে অনেক দুষ্ট প্রকৃতির সুযোগ সন্ধানী লোকেরা এর সুযোগ নিয়েছিলো।মানুষের মধ্যে সেই ১৯৭১ সাল থেকে এই ধারণা প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে যে সব রাজাকারই ছিলো জামাতে ইসলামীর সাথে জড়িত। ১৯৭১ এর নির্যাতনের জন্য পুরোপুরি জামাতে ইসলামী দায়ী।রাজাকার শব্দটাকে সুকৌশলে অত্যান্ত ঘৃনীত একটা গলিতে রুপান্তরিত করা হয়।মীরজাফর এর গালি থেকে রাজাকার গালিটির ওজন অনেকগুণ বেশী।সাধারণ জনগনের মধ্যে রাজাকার নামক এই গালিটি এতো ব্যাপক ভাবে প্রচারণা করা হয় যে "মরতে রাজী তবে রাজাকার নামক অপবাদ শুনতে রাজী নয়।" এতো বড় অপবাদ নিয়ে সমাজের সাধারণ জনগণ সমাজে নিরাপত্তার অভাব বোধ করে।এসবই করা হয়েছে কৌশলে এবং এর দায়ভার আজ পুরোপুরি জামাতে ই ইসলামীর ঘাড়ে দাড় করানো হয়েছে।অন্য কোনো ইসলামী দল রাজনীতিতে এসে ক্ষমতার জন্য গুরত্ত্বপূর্ণ হয়ে উঠলে তাদেরকেও এই রাজাকারের অপবাদ শুনতে হবে।তাই আজকে মুক্তিযুদ্ধের পরে জন্মগ্রহণকারী একদল তরুনকে রাজাকার নামক গালিটির অপবাদ শুনে বেড়াতে হয়।তাদের অপরাধ তারা ইসলামী ভাব সম্পন্ন দল কে সমর্থন করে। এতবড় একটা অপবাদ মাথায় নিয়ে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে বসতে হয়তো অনেক সময় লাগবে।এই তরুনদেরকে আরোও ৩০ বছর হয়ত অপেক্ষা করতে হতে পারে এই অপবাদ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য।

আজকের নিবন্ধন বাতিল হয়তো ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের কে সেই সুযোগটিই করে দিয়েছেন আল্লাহ তাআলা।এই আদেশ অন্য সব ইসলামী আন্দোলনকারী দলগুলোকে ঐক্যর কাছাকাছি নিয়ে আসবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।আল্লাহ সর্বশক্তিমান/সবকিছুর মালিক এটা অন্য ইসলামী দলগুলোর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।এই কথাটা যারা বিশ্বাস করেনা তারা কোন যুক্তিবলে নিজেদেরকে মুসলমান বলে পরিচয় দেয় এটা আমার মতো অধমের মাথায় আসেনা।ইসলাম একটা আদর্শ।এই আদর্শকে কখনোই সংবিধানের দোহাই দিয়ে মুছে ফেলা যাবেনা।সাময়িকভাবে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হলেও বিজয় সুনিশ্চিত।দরকার শুধু তাকওয়া বৃদ্ধি এবং ধৈর্য ধারণ।হে আমার রব তুমি সব ইসলামী আন্দোলনের ভাই বোনদের কে ঈমানী শক্তি বাড়িয়ে দাও।সবর করার ক্ষমতা বাড়িয়ে দাও।নিশ্চয় আপনার কৌশল শ্রেষ্ঠ কৌশল।

আল্লাহ হাফেজ

বিষয়: বিবিধ

২৬৩৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File