ইলিমুনাতি, ব্লাক ম্যাজিক, জ্বিন এবং তাবিজ-কবজ ইত্যাদির ব্যাপারে ইসলামের প্রকৃত অবস্হান। পর্ব: ১ম পর্বের পরিমার্জিত সংষ্করণ-

লিখেছেন লিখেছেন ঘুম ভাঙাতে চাই ০৮ নভেম্বর, ২০১৬, ১০:০৪:০৪ সকাল



বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।

আলোচ্য বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হলেও পরিতাপের বিষয় বাংলা ভাষায় কালো জাদু, জ্বিন ও শয়তান, তদবির ও তাবিজ-কবজ ইত্যাদির ব্যাপারে ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গি ও কুরআন সুন্নাহ ভিত্তিক সমাধানের দিকটি নিয়ে লেখালেখি খুবই নগণ্য পর্যায়ের আর যেসব আছে তাও পরিপূর্ণ সমাধান বা ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরতে অক্ষম, আবার অধিকাংশই লেখাই সত্য-মিথ্যার মিশ্রণে তৈরী করে ইসলামিক মোড়কে পরিবেশন করা হয়েছে যা মানুষকে তাবিজ-কবজ,জ্বিনের তদবিদ ইত্যাদিতে ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করেছে ও করছে। আলহামদুলিল্লাহ! সাম্প্রতিক সময়ে শিরক ও বিদআতের ব্যাপারে মোটামোটি সোচ্চার আলিমরা তাবিজ-কবজের বিরুদ্ধে কিছুটা কঠোর অবস্হান নিয়েছেন, মানুষকে সাবধান করছেন। কিন্তু প্রধান সমস্যা হল -"প্রতিনিয়ত জ্বীন বা কালো জাদু-টোনা বিষয়ক নানান অপ্রত্যাশিত ঘটনায় মানুষকে পরতে হচ্ছে যখন তারা সমাধানের জন্য হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন কিন্তু এমন পরিস্হিতিতে কুরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী মানুষের করণীয় কি?" তার ব্যাপারে এসব আলিমরা স্পষ্টভাবে তেমন কিছু বিস্তারিতভাবে বলতে চাননা বা এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করেন, ফলে প্রচলিত রীতি নীতি, ধ্যান-ধারণা অনুযায়ী সমাধানের আশায় অধিকাংশ মানুষই ছুটে যান ওঝাবাবা, গণক, জ্যোতিষি বা মাওলানাদের কাছে এবং ফীরে আসেন গলায়, হাতে, কোমরে ও বাড়ি বন্ধ করার তাবিজ-কবজ নিয়ে আর সীমিত সময়ে আশ্চর্যজনকভাবে সেসব কাজও করে টনিকের মত। বিশেষ করে বিয়ে ও প্রেম, কাউকে বশে আনা, ব্যবসায় উন্নতি, জমি বিক্রি ইত্যাদি কাজে তদবির-তাবিজ-কবজের উপরে মানুষের বিশ্বাস ও আস্হা বেড়েই চলেছে দিন দিন। যখনই কেউ বলতে চায়, কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ী এসব স্পষ্ট শিরক- মানুষ তা মানতে চায়না, রেগে যায়, কেউবা যুক্তি দেয়:- আল্লাহর কালাম দিয়েই তো তাবিজ, তবে এত বিরোধীতা কিসের জন্য? এমনকি খোদ আমার আত্নীয় স্বজনের মাঝে এর প্রভাব এতটাই মারাত্নক ও ব্যাপক যার জন্য ক্ষতির শিকার আমি নিজেও।

তাই এই বিষয়ে কুরআন সুন্নাহ ভিত্তিক বিস্তারিত লেখালেখি, প্রচার ও প্রসারের কাজ অতি প্রয়োজনীয় হয়ে পরেছে। আমি আশা করব ভবিষ্যৎে অন্যরাও এসব নিয়ে বেশি বেশি লিখবেন, ইনশাআল্লাহ!

আমি প্রথমে যেভাবে শর্টকাট ওয়েতে অল্প কথায় লেখাটাকে শেষ করতে চেয়েছিলাম, তা আমার কাছে সঠিক মনে হয়নি তাই লেখাটাকে একটা সুন্দর কাঠামোতে সাজাতে চাইছি (ইনশাআল্লাহ)।

লেখাটাকে আমরা কয়েকটি অংশে ভাগ করব-

১. ইবলিসের উল্থান

২. জীন-শয়তান এবং কারিন শয়তানের পরিচয়

৩. তাবিজ কি? আমাদের ব্যবহৃত তাবিজ কি সত্যিই কুরআনের আয়াত দিয়ে তৈরী হয়? কিভাবে তাবিজ ধ্বংস করা যায়?

৪.ব্লাক ম্যাজিক বা কালো জাদুর ইতিহাস। কিভাবে কালো জাদু কাজ করে?

৫. কিভাবে একজন জাদুকর ওঝা, গণক, পীরবাবা, মাওলানা কতিপয় ব্যক্তিকে চেনা যায়?

৬. কুরআন হাদিসে কালো জাদু

৭. বদ নজর, কালো জাদু, জীনে আক্রান্তের সুন্নাহ সম্মত চিকিৎসা পদ্ধতি

৮. ইলিমুনাতি ও শয়তানের উপাসনা


অদৃশ্যের সূচনায় সুরা ফাতিহা:

সুরাতুল ফাতিহা আল কুরআনের প্রথম সুরা। মহান আল্লাহ এই সুরায় নিজের পরিচয় তুলে ধরেছেন তাই একে আমরা কুরআনের ভূমিকা বা সূচনা বক্তব্য বলতে পারি। মহান আল্লাহ এরপর সুরা বাকারার সূচনা করেছেন।

সুরা বাকারা ও অদৃশ্যের প্রতি বিশ্বাস:

এরপর আল্লাহ তায়ালা বক্তব্য শুরু করলেন এভাবে, "এটি এমন কিতাব যাতে কোন সন্দেহ বিদ্যমান নেই এবং এটি সেসব ব্যক্তিদের জন্য পথপ্রদর্শক যারা যৌক্তিক কারণে অদৃশ্যের প্রতি বিশ্বাস স্হাপন করে।"

এই মহাবিশ্ব এর ব্যাপ্তি সুবিশাল এবং মানুষের দৃশ্যমান জগত খুব সীমিত। অর্থাৎ মানুষের জ্ঞান ও ক্ষমতা শুধুমাত্র সীমিত দৃশ্যমান জগতেই সীমাবদ্ধ আবার দৃশ্যমান জগতের বড় অংশই তার কাছে অদৃশ্যমান বা অজানা। বর্তমান মানব সভ্যতা যতই জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানান শাখায় প্রচুর উন্নতির বড়াই করুক, মহাকাশ গবেষণা ও অন্যান্য দিকের উদাহরণ টানুক, "তবুও কি এই সুবিশাল জগতের সমস্ত দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান বস্তু ও রহস্য সম্পর্কে মানুষ পূর্ণাঙ্গরূপে জানতে সক্ষম?" তার মহাকাশযানগুলো পৃথিবীর ক্ষয়মান খনিজ শক্তির উপর নির্ভরশীল, তার গবেষণার জন্য বিপুল অর্থের প্রয়োজন, আরো দ্রুতগতির মহাযান-দক্ষ জনবল-বিজ্ঞানী ইত্যাদি তৈরী করতে বছরের পর বছর সময়ের প্রয়োজন- অর্থাৎ মানুষ শুধুমাত্র নিজের সীমিত শক্তি-সামর্থ ও জ্ঞান এবং সবেশেষে সীমিত জীবনের উপর নির্ভর করে এই মহাবিশ্বের রহস্য ভেদ করতে অক্ষম, এটাই মানুষের সীমাবদ্ধতা। এজন্যই মহান আল্লাহ আমাদেরকে মহাবিশ্বের রহস্য সম্পর্কে জানাতে চাইছেন যা আমাদের অজানা ও অদৃশ্য। আর এই প্রদত্ত জ্ঞানে কোন সন্দেহ নেই, কারণ তিনিই এসমস্ত কিছুর স্রষ্টা, সমস্ত রহস্যের মূলে মূলত তিনিই।

প্রথম পর্বের সমাপ্তি............................

বিষয়: বিবিধ

৩২২৩ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

379586
০৮ নভেম্বর ২০১৬ সন্ধ্যা ০৬:২১
স্বপন২ লিখেছেন : ভালো লাগলো / অনেক ধন্যবাদ /
379626
১১ নভেম্বর ২০১৬ সকাল ১০:০৩
হতভাগা লিখেছেন : অন্যের ঘুম ভাঙ্গাতে চাইলে আপনাকে সবার আগে ঘুম থেকে উঠতে হবে
১১ নভেম্বর ২০১৬ সকাল ১১:৫৮
314298
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : উদাহরণ দিন তো ভাইয়া।
379667
১২ নভেম্বর ২০১৬ রাত ০৮:১৩
জাকারিয়া কবির লিখেছেন : ভালো লাগলো
২০ নভেম্বর ২০১৬ দুপুর ০৩:৪৪
314416
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : ধন্যবাদ ভাইয়া। এতগুলো লেখা জমে আছে কিছুই শেষ করতে পারছিনা। ব্লগে বসাই হয়না।
379876
২১ নভেম্বর ২০১৬ সকাল ১১:১১
দ্য স্লেভ লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ..শুরু না হতেই শেষ করলেন,,,,দ্রুত পোস্ট দেন...
380742
১৭ ডিসেম্বর ২০১৬ সকাল ০৬:৪১
আনিসুর রহমান লিখেছেন : Intersting but important post. ... Cut off middle of my reading! Now waiting for your next post. Thanks
381350
২০ জানুয়ারি ২০১৭ রাত ০১:৩০
ক্রুসেড বিজেতা লিখেছেন : ভালো লাগল,, জাযাকাল্লাহ্।
381444
২৪ জানুয়ারি ২০১৭ দুপুর ০২:০৩
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : আপনার সুন্দর লিখাটির জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আমিও তাবিজে বিশ্বাসী নই;

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File