“অধিকারের নামে ওরা কি চায় ধর্ষিতা হওয়ার অধিকার”?

লিখেছেন লিখেছেন ওমর শরীফ ১৭ নভেম্বর, ২০১৪, ০৩:১১:৫৮ দুপুর



বাংলাদেশ টেলিভিশন একটি বখাটে অনুষ্ঠানের ব্যাবস্থা করেছিল। এতে সমান অধিকারের দাবীদার মেয়েরা টি.ভি দর্শকদের কাছে অভিযোগ উত্থাপন করে বলে,

“মা আমার ভাইকে একা বাইরে যেতে দেয়,কিন্তু আমাকে একা বাইরে যেতে দেয়না”(অর্থাৎ মা এ দ্ধারা সমান অধিকার লংঘন করেছে )”।

অথচ সেও এটা জানে যে,তাকে একা বাইরে যেতে দিলে দুষ্ট ছেলেরা তাকে ধর্ষণ-বলাৎকার করার ভয় আছে,কিন্তু তার ভাইয়ের সে ভয় নেই। তাহলে সে কি একা বাইরে গিয়ে ধর্ষিতা হওয়ার অধিকার দাবী করে?

ইসলাম নারীকে এত মর্যাদা দেওয়ার পরও যারা এর সফল বাস্তবায়ন না করে;বরং এর বিরুদ্ধে প্রগতি ও অধিকার দাবী করে ,তাদের এই দাবীর অর্থ হলো তারা বাহিরে ইচ্ছামত একদিকে যৌন তৃপ্তি লাভ করতে চায়, অন্যদিকে এভাবে প্রচুর অর্থের অধিকারী হতে চায়।

সরকার নিজেই হিজাব নিষিদ্ধ করার প্রচেষ্টায় সমাজটাকে একটা ইভটিজিং সমাজে পরিনত করছে। যারা আধুনিক ফ্যাশনের নামে উলংগ থাকতে চায় তাদের কথা আলাদা। কিন্তু হিজাব পড়ে যে নারীরা সম্ভ্রম রক্ষা করছে তাদের সেই হিজাবকে নিষিদ্ধ করে তারা শুধু ইসলামকেই ঘায়েল করার চেষ্টা চালাচ্ছে না বরং তারা তাদের মা-বোনদেরকেই উলংগ করার পায়তারা করছে।আর তাইতো প্রকাশ্য নামী-দামী হোটেলের আড়ালে গড়ে উঠছে একের পর এক পতিতালয়? যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা এসব অনাচার-ব্যাবিচারের সাথে জড়িয়ে পড়ছে।

ইসলামে নারীদের অন্যান্য সকল ধর্মের তুলনায় সবচেয়ে বেশী মর্যাদা ও অধিকার দেয়া হয়েছে।

তাদের নিরাপত্তার স্বার্থেই তাদের মর্যাদা রক্ষার জন্য এসব নিয়ম-নীতি নির্ধারিত করে দেয়া হয়েছে।

এই আদর্শ যারা পরিত্যাগ করে চলছে,তারাই তাদের মর্যাদা হারিয়ে ফেলছে,তারা সুযোগমত ধর্ষন বলাৎকারের শিকার হচ্ছে।

অধিকারের নামে যারা আজ রাসূল (সাঃ)এর আদর্শকে অবজ্ঞা করার চেষ্টা করছে,আমার মনে হয়,তাদের এতটুকু বোধশক্তিও নেই যে,রসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর আদর্শ কেউ পছন্দ না করলে,তা মেনে না চললে,তাতে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর ও ইসলামের কোনো ক্ষতি হবেনা;বরং যারা তা মেনে না চলবে,তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। রসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর আদর্শ মেনে চলাটা তার প্রতি অনুগ্রহ নয়;বরং তার আদর্শই তাদের প্রতি অনুগ্রহস্বরুপ।



মধ্যবিত্ত শ্রেণীর লোকদের মধ্যে রসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর আদর্শের তেমন গুরুতর কোন ব্যতিক্রম দেখা যায়না।তারা যেমন শুনে,যেমন জানে,তেমনি মেনে চলতে চেষ্টা করে।

কিন্তু দুঃখজনক ব্যতিক্রম পরিলক্ষিত হয় উচ্চশ্রেনীর ও নিন্মশ্রেনীর লোকদের মধ্যে।উচ্চশ্রেনীর লোকেরা ধনগর্বে গর্বিত হয়ে নিজেরাই নিজেদের আত্মার অধঃপতন ঘটায় এবং বিভিন্ন অনভিপ্রেত মন্দ কাজ-কর্মে জড়িত হয়ে রসূলুল্লাহ (সাঃ)এর আদর্শ অগ্রাহ্য ও অবহেলা,এমনকি অনেকে উপহাস করে থাকে।তাদের পরিবারে আদর্শ-বিরোধী ও দৃষ্টিকটু কাজ-কর্মই চলতে থাকে,কিন্তু শয়তান তাদের কাজ-কর্মগুলোকে তাদের নিজেদের কাছে সুশোভিত,আনন্দদায়ক ও সুখকর করে তুলে ধরে।তাই তারা তাদের জঘন্য কাজকর্মগুলোকেও খারাপ বলে মনে করতে পারেনা।তাদের ছেলে-মেয়েরাও এভাবেই গড়ে উঠে।

পয়লা বৈশাখ,দেওয়ালী,দোল,নিউ ইয়ার্স ডে,ভেলেন্টাইন ডে, খ্রীষ্ট-মাস ডে, থার্টি ফাষ্ট নাইট এবং এ ধরনের বহু উৎসব উদযাপনে তাদের কিশোর-কিশোরী ও যুবক-যুবতীরা এবং মডেলিষ্ট ও সুন্দরী প্রতিযোগিনীরা স্ব-স্ব পেশাগত বেশে রাজপথে ও মাঠে-ঘাটে বাঙ্গালী সংস্কৃতির মহড়াস্বরুপ অর্ধনগ্ন ও প্রায় নগ্ন হয়ে সকলেই একত্রে নাচানাচি,কোলাকুলি,বস্ত্র হরন ও ঘষাঘষি করে পরিবেশকে কলুষিত ও অসহনীয় করে তুলে।

মধ্যবিত্ত শ্রেণীর যারা তাদের সংস্রবে আসছে,তারা সবদিক থেকে ধ্বংস হয়ে পরিশেষে বিভিন্ন কুকাজে লিপ্ত হচ্ছে।

আর নিন্মশ্রেণীর অধিকাংশ লোক যাদের কাছ থেকে কিছু সাহায্য-খয়রাত লাভের সম্ভাবনা দেখে,সাহায্য-খয়রাত লাভের আশায় তাদেরই রীতি-নীতি ও কাজ-কর্ম মেনে নেয়।



রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর আদর্শ সকল স্তরে বাস্তবায়িত হলে যে কোন শ্রেণীর লোকের অবস্থাই এমন অধঃপতনে যেত না। দৈনন্দিন জীবন-যাপন হতে শুরু করে রাজনীতি ও রাষ্ট শাসনসহ সার্বিক ব্যাপারে তিনি যে আদর্শ রেখে গেছেন, আজ পর্যন্ত অন্য কোন মনীষী বহুবিধ জ্ঞান খাটিয়ে,যথেষ্ট চেষ্টা-শ্রম ব্যয় করে এর ধারে-কাছেও পৌঁছতে পারেনি;বরং বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মনীষী রসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর আদর্শের বিরোধী কোন পন্থায় একদিকে শান্তির কিছু চমক দেখালেও এর জন্য অন্যদিকে বহু সমস্যার সৃষ্টি করে গেছেন। এতে প্রকৃতপক্ষে মানুষ শান্তির মুখ দেখতে সক্ষম হয়নি। তাছাড়া শুধু হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর আদর্শ ছাড়া পৃথিবীর লয় পর্যন্ত অন্য কোন আদর্শে ইহলোক ও পরলোক- উভয় লোকের কল্যানের ব্যবস্থা থাকার কোন অবকাশ নাই।



আমরা আমাদের মা-বোনদের নিরাপদ দেখতে চাই। না,সরকারের পক্ষ থেকে পুলিশ বাহিনী দিয়ে তাদের নিরাপত্তা হেফাজত কাম্য নয়,বরং আমরা আমাদের মতো করে আমাদের মা বোনদের নিরাপদে রাখতে চাই। আমরা চাই তারা হিজাব নিয়ে সম্মানের সাথে সমাজে চলাফেরা করুক। সরকার সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা দিতে জানে না,ওরা অপরাধী-সন্ত্রাসীদের রক্ষার জন্যই ক্ষমতায় আসে। তাই সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের মা-বোনদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চাই না,সরকার নিজেই আপদ হয়ে আমার মা-বোনদের সামনে যেন না দাড়ায় শুধু এটুকুই চাই।

বিষয়: বিবিধ

১৯৮৫ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

285320
১৮ নভেম্বর ২০১৪ রাত ১২:০৪
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো
আসলে এর মাধ্যমে নারিদের ভুল শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। নিরাপত্তা দেওয়া যেন অপরাধ।
১৮ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:২৭
228919
ওমর শরীফ লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ Rose Good Luck
285336
১৮ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০১:১৪
লজিকাল ভাইছা লিখেছেন : যেমন আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রীর অফিসের যে রকম নিরাপত্তা, আবার প্রধানমন্ত্রী কোথায়ও গেলে নিরাপত্তা ব্যাবস্থা অন্য সাধারনের চেয়ে হাজার গুন বেশী, কারণ সে দেশের সবচেয়ে মুল্যবান ব্যাক্তি। এখন প্রধানমন্ত্রী যদি বলেন, আমি শুক্কুর আলীর মত একা একা, অফিস থেকে বাসায় যেতে চাই , একা একা বাজারে যেতে চাই, তাহলে কি টা উনার জন্য ঠিক হবে, উনাকে কি আমরা বুদ্ধিমান বলবো? বলবো না।
তেমনি আমাদের মা,বোন, স্ত্রীরা ও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ, তাই ইসলাম তাদের নিরাপত্তার জন্য, তাদের কে একা একা কোথায়ও যেতে নিষেদ করেছে। অনেক অনেক থন্যবাদ ভাইয়া। জাযাকাল্লাহু খাইরান ।
১৮ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:২৭
228920
ওমর শরীফ লিখেছেন : Praying ধন্যবাদ Good Luck

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File