স্মৃতির পাতা থেকে.. (ইহা কি অপমৃত্যু?)

লিখেছেন লিখেছেন নতুন মস ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১২:৪০:৫২ দুপুর

কলেজের রাজ্যে পা দিলাম তখন।অনিচ্ছা নিয়েই ভর্তি হলাম ঐ কলেজটিতে।আর কোথাও চান্স পাইনি।

ওখানেই দেখা ঐ বালিকার সাথে।সুমি অনেক হাসিখুশি,চমত্‍কার স্বভাব।আমি যা দেখেছি।

তবে ক্লাসের অনেককেই ও তুই বললেও আমাকে কেন যে তুমি বলত জানি না।আমিও ওকে তুই বলতে পারিনি। ক্লাস ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে আমার পুরনো দিনের ভাল অভ্যাস।সখ বলা চলে।

শুধু ব্যবহারিক ক্লাস আর যে স্যারদের ক্লাস ভাল লাগত তা করতাম।

পদার্থ ক্লাসটি ছিল চরম বিরক্তিকর

এই স্যার বেশি নালিশ করতেন ক্লাস ফাঁকি দেবার জন্য।

তবে রসায়ন ক্লাস ছিল মোটামুটি বেশ।

কোন নামি দামী স্কুল কলেজে পড়িনি তাই নামটা না হয় উহ্য থাকলো।স্যারেরা ভাল।ভয়ংকর দ্বায়িত্ব পালন করতেন মনে হয়।

সর্বদা দেখি আব্বুর কাছে তথ্য পৌছাতেই থাকত অহেতুক।

তাতে আমার কি?

তবে যাইহোক কলেজ জগতে ফাস্ট গার্ল ছিল সুমিই।সঠিক নামটা ওটাই কিনা জানি না।রহস্য থাক।ও ৪.৯৬ পেয়েছিল এস.এস.সিতে অবশ্যই ভাল ছাত্রী।আমার দেখা পরিশ্রমী,মেধাবী এবং সাহায্যকারী একটি বালিকা।প্রায় তিন কিলো হেটে আসত কলেজ করতে তারপর প্রাইভেট ব্যাচে পড়ত তারপর খেয়ে না খেয়ে শুধু একনিষ্ঠভাবে পড়ার পিছনে ছুটত।স্যারদের বড় একটা আকাঙ্ক্ষা জুড়ে ও আর ক্লাসে ঢুকলেই আমার সমালোচনা কেন যে স্যারেরা করত।কেউ বোসম ফেন্ড ছিল না কোন কালে,

থাকবে কিভাবে আমি কার সাথে না ঘুরতাম,না ক্লাসে যেতাম, আর কারও ব্যক্তিগত ব্যাপারে আমার মোটেও আগ্রহী ছিল না।

তার উপর ঘর হচ্ছে আমার বন্ধু।

কলেজের ফাস্ট টার্ম থেকেই গনিতে ফেল করতে থাকলাম।যেহেতু মেইন সাবজেক্ট ছিল না তাই বেঁচে গেছি কলেজ পরীক্ষাগুলোতে।যেবার

পদার্থে ফেল করি তখন ত সোজা আব্বুর কথা চল তোমাকে কমার্সে ভর্তি করে দেই।পাশ করলেও সি বা ডি পাবা।

আমিও একচুল নড়লাম না।যাও তুমি পড়।আমি সাইন্সেই পড়ব।ইংলিশকে ভয় পেতাম জমের মত এই সাবজেক্টের জন্য এস এস সিতে এপ্লাস পাইনি।

তবে হাল ছেড়ে না দিয়ে পড়তাম।

ঐ মুহুর্ত্বে সুমি হচ্ছে সেই গভীর চোরাবালিতে ডুবে শ্বাস বন্ধ হওয়া উপক্রম বালিকার পথপ্রদর্শক রূপে কাজ করে।ওর পরামর্শ শুনে দুজন স্যারের কাছে ব্যাচে পড়া শুরু করলাম।ব্যাচে পড়ি ইংলিশ বছরখানেক আর ম্যাথ তিন মাসের মত দুটোতেই আলহামদুলিল্লাহ ভাল মার্ক পেয়েছিলাম।

ক্লাসমেটদের বাসায় কখনই যাওয়া হত না।

আব্বু সাংগঠনিক প্রোগ্রামগুলোতে টিসি,টি এস,নিজ উদ্দোগে পাঠালেও কেন যেন অন্য কার বাসা যাওয়া পছন্দ করতে না।ফলে যাওয়া হত না এটা জীবনে সত্যি কল্যাণকর ছিল।যার ফলে ক্লাসমেটদের সাথে বরাবরের মত কেমন যেন ছাড়াছাড়া বন্ধন ছিল।তখন টেস্ট পরীক্ষা দিচ্ছি।আমার সামনের সিটটা সেদিন খালি ছিল একটা পরীক্ষার পর।

খুব অবাক।

ওর বেস্ট ফ্রেন্ডকে বলতাম কেন ও আসেনি।

ও ত অসুস্থ।অসুস্থ থাকার কথা শুনতে শুনতে ফাইনাল পরীক্ষা চলে এল।দেখতে যাইনি।ফাইনাল পরীক্ষার দিন হলে ওর সাথে দেখা।শুকনো মুখ,ক্লান্ত দেহ।ওর সমস্যাটা আরও স্পষ্টভাবে শুনলাম।সারা শরীর জুড়ে ব্যাথা।সঠিক রোগটা ডাক্তাররা বলতে পারেনি।অনেক ধরনের ডাক্তার দেখিয়েছিল বলল।

তারপর পরীক্ষা শেষ হল।

রংপুর নগরীকে ছুটি জানালাম।

আরও অনেক দিন পর সার্টিফিকেট আনতে গিয়েছি।দীর্ঘ বিরতি বলা যায়।সবার খোঁজ নিতে গিয়ে হোঁচট খেলাম।

ওর বিয়ে হয়েছে শুনলাম তবে

পরো ক্ষণেই কেন যে ঐ মেয়েটাই বলল যে ও ত আত্নহত্যা করেছে।

হঠাত্‍ মনে হল সত্যি বলছে কি ও।যে মেয়েটা ছিল এখন নেই।

যখন বাবা মা দেখল মেয়ে অসুস্থ। খুব ভাল রেজাল্ট হয়নি তখন এক প্রকার জোর করেই খালাত ভাইকে ঘর জামাই রেখে বিয়ে দিয়ে দেয়।বিয়ের কয়েক দিনের মাথায় ঘটে যায় এই রহস্যজনক ঘটনাটি।আমার মন কেন অপমৃত্যুটাকে মানতে চায় না।ওকে যদি খুন করা হত ভাল হত।হয়ত অলৌকিকভাবে বেঁচে যেত জাহান্নামের আগুন থেকে।জানি না আসলে চিন্তাটা সঠিক কিনা।

খুব ইচ্ছে ছিল ওর অনেক পড়াশুনা করবে।হাসি খুশি একটা মেয়ে।আজও আমার চোখে ভাসে।বালিকাটি

খুব অভিমানী ছিল বটে।

#নতুন_মস

সূর্যবাড়ি

বিষয়: বিবিধ

১১০১ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

181798
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ১২:৪২
বাংলার দামাল সন্তান লিখেছেন : Rose Rose Roseধন্যবাদ Rose Rose Rose
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ১২:৪৯
134387
নতুন মস লিখেছেন : আপনাকেও
181803
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ১২:৫৭
সিটিজি৪বিডি লিখেছেন : জোর করে ভালবাসা হয় না..জোর করে বিয়ে করাও ঠিক না..জোর করে বিয়ে দেয়াও ঠিক না..না না না..
181875
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:৪৩
সজল আহমেদ লিখেছেন : চালিয়ে যান সাথেই আছি ভাইয়া।
182082
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৯
182422
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ১০:৪৪
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : একই মানুষ জীবনের একেক মোড়ে এঁকেকরকম আচরন করে। জীবন বড়ই বিচিত্র Yawn Yawn
182987
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০২:০৫
মুমতাহিনা তাজরি লিখেছেন : ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File