ওরা দু'জন জমজ বোন

লিখেছেন লিখেছেন নেহায়েৎ ১৪ মার্চ, ২০১৫, ১০:৪৮:৩৯ সকাল

ওরা দু'জন জমজ বোন। একসাথে স্কুলে আসে। বাবা মারা গেছেন জন্মের কিছুদিন পর। ওদের মা বাজারে মাছ বিক্রি করেন। কোন দিন একবেলা কোনদিন দুইবেলা খাবার জোটে। বাচ্চা দুইটার প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে অপুষ্টির চিহ্ন সুস্পষ্ট। পোশাকগুলোর শতছিন্ন সেলাই দেখে স্কুলের এক স্যার দুইটা জামা বানিয়ে দু্ইবোনকে দিয়েছেন। পড়াশুনার ব্যাপক আগ্রহ বাচ্চা দুইটার, ছাত্রী হিসেবে মেধাবী। শিশুশ্রেনী হতে এই স্কুলে পড়ছে। বর্তমানে ৫ম শ্রেনীতে আছে। কিন্তু কখনও ফ্রি বা হাফ ফ্রি পায় না। তাদের মা স্কুল কমিটির কাছ ধরনা দেন কিন্তু কোন কাজ হয় না। কারণ স্কুল কমিটির সাথে তাদের চেনা-জানা নাই। আর যাদের চেনা-জানা আছে তাদের আর্থিক অবস্থা যাই হোক চাইলে কখনও না চাইলেও স্কুল কমিটি তাদের ফ্রি-হাফ ফ্রি করে দেন। এটা হলো সম্পর্কের ফল!!

আমি জোর করেও আজ পর্যন্ত বাচ্চা দুইটার হাতে কখনও দশ-বিশ টাকা দিতে পরিনি। তাদের মা সম্ভবত এভাবে নিতে নিষেধ করেছেন। সেদিন বাচ্চা দুইটা স্কুলে আসার সময় মায়ের কাছে দশ টাকা চেয়েছিল, তাদের মা আচ্ছামতো পিটিয়ে তাদের সাথে নিজেও কাঁদতে কাঁদতে স্কুলে এসেছেন। এসে এক শিক্ষিকাকে বলছেন, স্কুলে আসার সময় ট্যাকা চায়; বলুনতো আফা ক্যামনে ট্যাকা দিমু?!? খাওনের টাকা জোগাড় করতে পারি না, স্কুলে সদাই খাওয়ার টাকা ক্যামনে দিমু? তাই কতদিন বুছাইছি, আর আজ দিছি ইচ্ছামতো মাইর।

এসব কথা বলে উনি অঝোর ধারায় চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে কাঁদতে লাগলেন। তার যতো ক্ষোভ দুই মহিলার প্রতি শেখ হাসিনা আর খালেদা জিয়। তাদের দুজনের কারণে নাকি তাকে এখন বেশিরভাগ বেলা না খেয়ে থাকতে হয়। বাচ্চাদের স্কুলের টাকা জোগাড় করতে হিমসিম খেতে হয়। এই দুই মহিলার কারণে দেশের অবস্থা ভাল না; তাই তার মাছ বিক্রির অবস্থাও ভাল না, যতো বেশি দামে মাছ কিনতে হয় সেভাবে বেশি দামে বেচতে পারেন না। এই কারণেই এই দুই মহিলার প্রতি তার চোখের পানির অভিশাপ।

যেদিন দেশের অবস্থা ভাল হবে আবার তিনি মাছ বিক্রি করে দুই বেলা খাওনের টাকা জোগাড় করতে পারবেন। তিনি কারো কাছে হাত পাততে চান না ।

(এটা কোন বানোয়াট কাহিনী নয়, শতভাগ সত্য ঘটনা)

বিষয়: বিবিধ

১২৪৬ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

308802
১৪ মার্চ ২০১৫ সকাল ১০:৫৩
রাইয়ান লিখেছেন : তাদের চেয়ার এত উঁচুতে যে আমজনতার অভিশাপের বিষবাষ্প ওই পর্যন্ত পৌঁছায় না। তাই তারা তাদের মতই থেকে যান , আর আমরাই আমাদের নিজেদের অভিশাপে জ্বলে পুড়ে মরি ..... Sad
১৫ মার্চ ২০১৫ সকাল ০৯:২৮
249977
নেহায়েৎ লিখেছেন : আল্লাহ তাদেরকে অবকাশ দিয়েছেন একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত।
308810
১৪ মার্চ ২০১৫ সকাল ১১:১১
তোমার হৃদয় জুড়ে আমি লিখেছেন : অসাধারণ লাগলো। সত্যি চোখে পানি চলে আসলো। Sad Sad
১৫ মার্চ ২০১৫ সকাল ০৯:২৮
249978
নেহায়েৎ লিখেছেন : আমাদেরতো ওটাই সম্বল।
308818
১৪ মার্চ ২০১৫ সকাল ১১:৩৬
জোনাকি লিখেছেন : Sad
১৫ মার্চ ২০১৫ সকাল ০৯:২৯
249979
নেহায়েৎ লিখেছেন : পরীক্ষা এটাও পরীক্ষা
308825
১৪ মার্চ ২০১৫ দুপুর ১২:০০
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : নির্বাক!
১৫ মার্চ ২০১৫ সকাল ০৯:২৯
249980
নেহায়েৎ লিখেছেন : আল্লাহকে ডাকতে পারি আমরা।
308833
১৪ মার্চ ২০১৫ দুপুর ১২:৪০
আব্দুল গাফফার লিখেছেন : বাস্তব, Sad Sad অনেক ধন্যবাদ
১৫ মার্চ ২০১৫ সকাল ০৯:৩০
249981
নেহায়েৎ লিখেছেন : মাঝে মাঝে বাস্তব সিনেমা-নাটকের চাইতে অন্যরকম হয়।
308884
১৪ মার্চ ২০১৫ বিকাল ০৪:৫৮
আফরা লিখেছেন : মানুষের কষ্টের কথা শুনলে ভাল লাগে না ।
১৫ মার্চ ২০১৫ সকাল ০৯:৩০
249982
নেহায়েৎ লিখেছেন : কষ্ট কারই ভাল লাগে না। আমরা সুখের কথা শুনতে পছন্দ করি।
308892
১৪ মার্চ ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:২৬
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : আসসালামুআলাইকুম ওয়ারহমাতু্ল্লাহ!

এই ঘটনাগুলো কেনো জানি মনকে খুব বেশি নাড়া দেয়! তারপরেও উনাদের আত্নসন্মান বোধ আছে, হাত পেতে নয় নিজে উপার্জন করেই জীবনে পথ চলতে চান!

ঘটনাটি শেয়ার করার জন্য জাযাকাল্লাহু খাইর! Good Luck Praying
১৫ মার্চ ২০১৫ সকাল ০৯:৩১
249983
নেহায়েৎ লিখেছেন : ওয়াআলাইকুম সালাম। আসলে নাড়া দেয় আমাদের অনুভূতিকে, তাই মাঝে মাঝে অনুভব করি যে, আমরা পুরোপুরি অনুভূতিহীন হয়ে যাইনি।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File