সত্য ঘটনা অবলম্বনে (২০): অপারেশন

লিখেছেন লিখেছেন ড: মনজুর আশরাফ ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৬:৪৮:২০ সন্ধ্যা

তোমরা গাড়ি থেইক্কা নামবা, বাড়িত ঢুকবা আর গুলি করবা।'

'জ্বি সার।'

'টাকলু (কামরুল) তো তোমাগো কইসেই যে যা ইচ্ছা করবা কোন সমস্যা নাই - ফুল প্রটেকশন পাবা'।

জ্বি সার।'

'ইয়াবা আর মাল একসাথে টাইনা আইস অপারেশন এ। ... জাত। জুতা ও পিন্দ নাই।'

ছাত্রলীগের লাল চোখের লোকটা একটু লজ্জার হাসি দিল। এডিসি র প্রতি তার পূর্ণ নির্ভরতা।

'তোমার লোকদের কৈস তো? লিস্ট ধৈরা নামাবা।'

'সার, টাকাটা এডভান্স পাই নাই তো?'

' বাইন ... । দিলি তো মুখখান খারাপ করায়া। টাকা পাইলে তো নেশায় বুদ হইতা। আর কাউরে টাইম মত পাইতাম না। আগে একবার শিক্ষা হইসে না? বস্তিতে কনস্টেবল পাঠানোর পর ও আসস নাই তোরা। তগো তো মা..বাজির শেষ নাই।'

ছাত্রলীগের লোকটা এখন ও লজ্জার হাসি দিল।

এডিসির মনে হল লোকটা লাজুক প্রকৃতির। আসলে লোকটা ভয়ঙ্কর ক্রিমিনাল। পেশাদার খুনি। বিশ্ব-বিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের আহবায়ক। বয়সের কোন সীমা পরিসীমা নাই। বিশাল ভুরি, কুচকুচে কালো গলা। হলুদ দাত। কপালে কাটা দাগ।

এই লোকটা খুনের পর শরীর পিস করতে দারুন মজা পায়। কারও সাহায্য লাগে না। সাইকো টাইপের।

শুনছি ডেড বডি পিস করে ঠিক মত বস্তায় ভরতে সিদ্ধ হস্ত। চারদিক ময়লা কম করে। এক ঘন্টায় পুরা রুম ক্লিন করতে পারে। কনস্টেবল বলছে এক ঘন্টা পর রুমে দেখা যাবে সুন্দর গুছানো একটা বস্তা। আর সে সিগারেটে সুখটান দিচ্ছে।

লোকটা স্বরাষ্ট্র পরিমন্ত্রী টুকুর ডান হাত। ডান হাত বলা কম হবে। টুকুর আদেশে টুকুর থুথু খাইতে ও পারবে। কেন জানি কাইলাটারে দেখলেই মুখে গালি আসে!

কাইলাটা র্যবের (RAB ) এর পোশাকে আর ও গুন্ডা লাগছে। তার উপর সেন্ডল পড়া।

'যা তোরা রওনা দে। কাম শেষে ফোন দিবি। সোজা ঢাকা রওনা দিবি।'

**

স্বাধীনতার মাস। বিজয়ের মাস। স্বাধীনতার চেতনাধারীদের রাজত্ব।

এক দল RAB এর পোশাকি উন্মুক্ত একে-৪৭ আর পিস্তল হাতে নেমে পরছে লক্ষী পুরে জামায়াত নেতা ডা: ফয়েজের বাসায়।

এর পরের ঘটনাএরকম:

পৌনে বারটার দিকে গাড়ির শব্দ শুনেই বেলাল বুঝল কারা এসেছে।

একদল জনগনের সেবক 'পুলিশ' আর 'র্যব' বাসায় এসেই মেইন গেটে তালা দেখে পেছনের দুইটা দরজা ভাঙ্গা শুরু করল। বেলাল ছাদে উঠে সানসেটে শুয়ে পড়ল। ডা: ফয়েজ ড্রেস চেইঞ্জ করে তৈরী হয়ে গেলেন। অন্যান্যরা তিনতলায়। সেবকেরা একের পর এক দরজা ভেঙ্গে এগিয়ে আসছে।

ডা: ফয়েজ সোফায় বসে তার স্ত্রী আর ছেলের বউকে হাত ধরে দুই পাশে বসালেন। তারপর বললেন, "আমাকে তোমরা মাফ করে দিও"। দরজা পর্যন্ত চলে আসল ওরা। তিনি দরজা খুলে সালাম দিলেন। ওরা বলল, আপনি কে? তিনি বললেন, আমি ডা. ফয়েজ। একজন খুশি হয়ে বলল, গুড! ারপর ওনার হাত ধরে ছাদে নিয়ে গেল। যাওয়ার আগে মোবাইলগুলো নিয়ে পরিবারের অন্যান্যদের বেড রুমে রেখে ছাদে উঠার গেটটা আটকে দিয়ে গেল। দারোয়ানের ছেলেটাকে ভেবেছিল বেলাল। সেজন্যে ওকেও ছাদে নিয়ে গিয়েছিল। পরে যখন তিনি বললেন, ও তো আমার ছেলে না। ও আমাদের দারোয়ানের ছেলে। তখন ওকে নিচে একটা রুমে তালা মেরে গেল। ওরা বিভিন্নজনকে ফোন দিয়ে আসতে বলার জন্য বলল। উনি রাজি হলেন না। বিভিন্ন তথ্য জানতে চাইল উনি বললেন না। ওদের সাথে প্রচন্ড ধস্তাধস্তি হল। পরিবারের সবাই আতঙ্কে শব্দ শুনছিল নিচ থেকে।। তারপর হঠাৎ ধুপ করে কিছু নিচে পড়ার শব্দ হল। সাথে সাথে ওরা নিচে নেমে এল। নিচে পড়ে ওনার মাথাসহ শরীর থেতলে গিয়েছিল। ওরা নিচে এসেই একজন গুলি করে দিল।

আরেকজন বলল, "এটা কি করলি? তোরা কি মানুষ না?" তারপর লাশটা নিয়ে সদর হাসপাতালে রেখে গেল। ওখানে বান্নার এক ডাক্তার বন্ধু লাশ দেখে বান্নাকে ফোন করে জানালো। ওরা টিএনটির লাইন কাটেনি। বান্না টিএনটিতে ফোন করে বলল, "আব্বু তো শহীদ হয়ে গেছেন।"

(এ পর্ব চলবে .. )

বিষয়: বিবিধ

১৯৬৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File