যুদ্ধাপরাধ আইনের সংশোধনী বিচারকে উপহাসে পরিণত করবে : বিচার প্রক্রিয়ার ওপর সরকার সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে....হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

লিখেছেন লিখেছেন বিবেকবান ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১০:৪১:৫৮ সকাল



আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনী যুদ্ধাপরাধের বিচারকে ‘উপহাসে’ পরিণত করবে বলে মন্তব্য করে প্রস্তাবিত ওই সংশোধনী বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছে নিউইয়র্কভিত্তিক খ্যাতনামা মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। ওই সংশোধনীকে আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী উল্লেখ করে সংগঠনটি বলেছে, সরকার এই বিচার প্রক্রিয়ার ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে। গতকাল এইচআরডব্লিউর এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘১৯৭ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ ও গুরুতর নির্যাতনের ন্যায়বিচার অত্যাবশ্যক। তবে সরকারকে আইন অনুযায়ী চলতে হবে। আদালতের আদেশ পছন্দ না হলেই সরকার ওই আদেশ বাতিল করে ভূতাপেক্ষ আইন পাস করতে পারে না। বাংলাদেশ সরকারের থামা উচিত, দীর্ঘ নিঃশ্বাস নেয়া উচিত এবং প্রস্তাবিত সংশোধনী বাতিল করা উচিত। অন্যথায় এ বিচার উপহাসে পরিণত হবে।’

দেশের বৃহত্তম ইসলামী রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর নেতা আবদুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়ার পর সরকার আইন সংশোধনের যে উদ্যোগ নিয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে এইচআরডব্লিউ এই বিবৃতি দিয়েছে।

এখন পর্যন্ত যেসব মামলার রায় হয়েছে এবং বিচার চলছে, সেসব মামলায়ও সরকারের আপিলের বিধান রেখে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আপিলের নিষ্পত্তি করার সময় নির্ধারণ করে দিয়ে যুদ্ধাপরাধ আইনের সংশোধনী মন্ত্রিসভায় পাস হয়েছে। আগামীকাল এই সংশোধনী সংসদে পাস হওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে কেউ খালাস পেলে সরকারের আপিলের সুযোগ ছিল। এছাড়া ৯০ দিনের মধ্যে আপিলের নিষ্পত্তি করার বিধান ছিল। এখন তা কমিয়ে ৬০ দিন করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ওই সংশোধনী ‘ইন্টারন্যাশনাল কোভন্যান্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস’-এর পরিপন্থী। বাংলাদেশ এতে স্বাক্ষর করেছে। ওই আইনের ১৪ ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো দেশের কোনো আদালত আইন অনুযায়ী কাউকে শাস্তি দিলে অথবা খালাস দিলে তার পুনরায় বিচার করা বা শাস্তি দেয়া যাবে না।’

বিবৃতিতে বলা হয়, গণমাধ্যমে খবর অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রায় দেয়ার সময় জনআকাঙ্ক্ষাকে বিবেচনায় নিতে তিনি বিচারকদের সঙ্গে কথা বলবেন।

এইচআরডব্লিউর বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার সমর্থিত বিক্ষোভ প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের মন্তব্য চলমান ও ভবিষ্যতের স্বচ্ছ বিচারের সম্ভাবনাকে প্রভাবিত করতে পারে। আসামিপক্ষের অনেক আইনজীবী বলেছেন, হামলার আশঙ্কায় তারা আদালতে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এইচআরডব্লিউ উদ্বিগ্ন যে, বিচারকরা অন্যান্য মামলায় ফাঁসি ছাড়া অন্য কোনো শাস্তি দিতে ভয় পেতে পারেন।

এইচআরডব্লিউর এশীয় বিভাগের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, সরকারের যেখানে বলা উচিত যে, আইনের শাসন অনুযায়ী আদালতের আদেশ মেনে চলতে হবে, সেখানে সরকারই বিচার প্রক্রিয়ার ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে বিতর্ক চলার মধ্যে এইচআরডব্লিউ নিরাপত্তা বাহিনীকে সংযত থাকার আহ্বান জানাচ্ছে। আগ্নেয়াস্ত্র শুধু তখনই ব্যবহার করা যায় যখন তা একেবারেই প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও যুদ্ধাপরাধের বিচারের সমালোচনা করে নিবন্ধ প্রকাশ করায় দৈনিক আমার দেশ এবং এর সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকেও হুমকি দেয়া হচ্ছে।

Click this link

বিষয়: বিবিধ

১১৫০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File