লতিফ সিদ্দিকীকে দেশে আনার নেপথ্যের যত কারণ..

লিখেছেন লিখেছেন আহমেদ আরিফ ২৫ নভেম্বর, ২০১৪, ০৯:১৯:২৯ রাত

প্রায় তিন ডজনের বেশী মামলা এবং এক ডজন গ্রেফতারী পরোয়ানা নিয়ে বীরের বেশে দেশে ফিরেছেন হজ্ব, তাবলিগ, জামায়াত নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যকারী লতিফ সিদ্দিকী। শুধু যে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন তা নয়। নিজ বক্তব্য থেকে বিন্দু পরিমাণ না সরার কথাও বলেছেন তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন এসে যায়, বিতর্কিত মন্তব্য করেও বিন্দুমাত্র অনুতপ্ত না হয়ে নিজের বক্তব্যে অটল থাকার ঘোষণা দেওয়া লতিফ সিদ্দিকী কি করে জামাই আদরে দেশে আসতে পারল?

যে দেশে বিরোধী দলগুলোর নেতাদের ধরে জেলে ঢোকানোর পর মামলা হয়; যে দেশে মাহমুদুর রহমানের মত একজন সম্পাদকের বিরুদ্ধে জেলে থাকার পরও রাস্তায় গাড়ি ভাঙচুর করেছেন- এমন তথাকথিত অভিযোগে রিমান্ড মঞ্জুর হয় সে দেশে এক ডজনের বেশী গ্রেফতারী ফরোয়ানা নিয়ে লতিফের মত একজন বিতর্কিত ব্যক্তির বীরের বেশে দেশে ফেরাটা মোটেই অস্বাভাবিক নয়।

পাঠক, প্রশ্ন করতে পারেন লতিফ সিদ্দিকীর বীরের বেশে দেশে ফিরে পুলিশকে বিমানবন্দরে হুমকি দেওয়া যদি মোটেই অস্বাভাবিক ব্যাপার না হয় তাহলে স্বাভাবিক ব্যাপার কি? পাঠকের প্রশ্নের জবাবে উওরের বদলে পাল্টা প্রশ্ন রাখছি, লতিফ সিদ্দিকী কোন সময়ে দেশে এসেছে কিংবা কোন সময়ে দেশে আসার গ্রীন সিগনাল পেয়ে দেশে আসার সাহস করেছে? সহজ উওর- যখন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হানাহানি, এইচটি ইমামের ‘বেঁফাস সত্যে’ চরম বেকায়দায় আওয়ামীলীগ।

৫ই জানুয়ারীর প্রহসনের হাস্যকর ‘মুই কি হনুরে’ টাইপের নির্বাচন নিয়ে বেকায়দায় থাকা আওয়ামীলীগ ইমেজ রক্ষা করতে নানামুখী চেষ্টা করে আসছিলো শুরু থেকেই। সে চেষ্টায় ছাই দেন শেখ হাসিনার অতি ঘনিষ্ট, অতি আস্থাভাজন খ্যাত এইচটি ইমাম। চাকরির তদবীর নিয়ে গেলে শেখ হাসিনা কি কি প্রশ্ন করে ছাত্রলীগ কিনা এটি নিশ্চিত হন, কিভাবে ছাত্রলীগ ক্যাডারদের বিসিএস ক্যাডার বানানো হবে, এমনকি বিসিএস (ছাত্রলীগ) ক্যাডারদের ব্যবহার করে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে ৫ জানুয়ারীর নির্বাচন কি কায়দায় করিয়ে নেওয়া হয়েছে তাও ফাঁস করে দেন এক বেফাঁস বক্তব্যের মাধ্যমে এইচটি ইমাম। ঝড় উঠে রাজনীতিতে। নানা ভাবে ঝড় সামাল দিতে ব্যর্থ হয়ে এইচটি ইমাম উড়াল দিয়েছেন লন্ডনে। ইমাম দেশ থেকে আউট, লতিফ ইন।

রাজনীতিতে এইচটি ইমাম ঝড়ে বেকায়দায় পড়া আওয়ামীলীগের বেহাল দশার মাঝেই ছাত্রলীগের গুন্ডা-পান্ডা, মাস্তানদের দলীয় ভাগ-ভাটোয়ারা, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সিলেট, চবিসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারকীয় তান্ডব। শুধু একদিনেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামীলীগের ৫জন খুন হয়েছে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, বিএনপি-জামায়াত নয় আওয়ামীলীগের প্রতিপক্ষ এখন ‘আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, সেচ্ছাসেবক লীগ’।

৫ জানুয়ারীর নির্বাচন নিয়ে নতুন করে শুরু হওয়া ‘ছিঃ ছিঃ’ এবং গুন্ডা-পান্ডা, মাস্তানে ভরা ছাত্রলীগ, যুবলীগ, সেচ্ছাসেবক লীগারদের থেকে দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে এমন একটি ইস্যু দরকার ছিল যে ইস্যুটি অনেক বড়। আর বর্তমান পরিস্থিতি কাভার দেওয়ার মত ট্রাম্পকার্ড় আওয়ামীলীগের কাছে একটাই আছে। এবং সে ট্রাম্পকার্ডটি হচ্ছে ‘ধমপ্রাণ মুসলমানরা’। তাই মানুষের ধর্মীয় আবেগকে কাজে লাগিয়ে লতিফ গেইম খেলতে শুরু করেছে আওয়ামীলীগ। গ্রীন সিগনালের অপেক্ষায় থাকা লতিফ সিদ্দিকীকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ঘরে বসে থাকার উপায়ও নেই। সর্বশেষ, লতিফের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিকে সামনে রেখে ১০ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছে ইসলামী দলগুলো। আর এতেই চাপা পড়ে যাচ্ছে, এইচটি ইমামসহ বর্তমান সময়ের আলোচিত ইস্যুগুলো। এদিক থেকে আওয়ামীলীগকে সফল বলা যায়।

আহমেদ আরিফ

মন্তব্য প্রতিবেদন।

শীর্ষ নিউজ.কম

ফেসবুক https://www.facebook.com/ahmedarif2011

বিষয়: বিবিধ

১৩২৪ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

287978
২৫ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০৯:৪৯
ফেরারী মন লিখেছেন : Surprised Surprised Surprised Surprised ও মাই গড
287981
২৫ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০৯:৫৩
ফখরুল লিখেছেন : সহমত।Thumbs Up Thumbs Up Thumbs Up Thumbs Up আওয়ামী লীগ মোড় তৈরি করতে তারা সব করতে পারে।
287985
২৫ নভেম্বর ২০১৪ রাত ১০:০৪
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : একমত!
একরেপর এক ইস্যু তৈরি করে ধামাচাপা দেওয়া বড় কিছু।
288075
২৫ নভেম্বর ২০১৪ রাত ১১:৩৮
লোকমান লিখেছেন : এভাবে এক ইস্যু কে অপর ইস্যু দিয়ে ঢেকে দেশে আর কত অপকর্ম হবে?
288100
২৬ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০১:১৬
নাছির আলী লিখেছেন : আওয়মী লিগি ইস্যু তৈয়রী করতে যেমন পটু ঢাকতেও তেমনি পারদর্শী , সুতরাং এদের কাছে ইসলাম তো নিরাপদ নয় !বর্তমানে দেশের মানুষ এবং দেশের সম্পদ কোন কিছুই এদের কাছে নিরাপদ নয়।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File