আন্দোলন ও নির্বাচনী ছক ।

লিখেছেন লিখেছেন মহি১১মাসুম ১৪ জুন, ২০১৩, ০১:১৩:৫২ রাত

[u]



[u]আন্দোলন ও নির্বাচনী ছক ।

দেশের রাজনীতি ও চায়ের কাপে ধুঁয়া ওড়ছে মাত্র দুটি বিষয়ে

এক) তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি ও দুই) যুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার ও জামাতকে নিয়ে । এ নিয়ে একটি দূর্বল চিন্তা তুলে ধরলাম ।

জুন-আগষ্টঃ বর্তমানে চারটি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের কারনে ১৮ দলীয় জোটের রাজপথের আন্দোলন স্থবির । আবার সরকার ট্র্যাইবুনালের রায় গুলোও স্থবির করে রেখেছে । সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পর বিরোধী দলীয় জোট রাজপথ উত্তাল করতে চাইবে আর সরকার তখন ট্র্যাইবুনালের দু/চারটি রায় ঘোষনা করবে । রায় নিয়ে জামাত জ্বালাও পোড়াও চালাবে । সরকার এ নিয়ে বিএনপিকে দুষবে । এসবের মধ্যেই রোজা ও ঈদ আসবে, বিরোধী দল ঈদ পরবর্তী সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি বা সরকার পতনের আন্দোলন জোড়ালো করার কথা বলবে ।

সেপ্টেম্বর-নভেম্বরঃ এ সময়টাতে বিরোধী দল জোড়ালো আন্দোলন গড়ে তুলতে চাইবে । আর সরকার নভেম্বর মাসের মধ্যে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে আসবে, আন্দোলন নিয়ন্ত্রের অংশ হিসেবে । পাশাপাশি যুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের দু/একটি চুড়ান্ত রায় কার্যকর করাবে । এ নিয়ে জামাত সারাদেশে বিক্ষোভ ও ধ্বংশ যজ্ঞ চালাবে, সরকার বিক্ষোভ দমন না করে ক্ষেত্র বিশেষ উস্কে দিবে, পরিস্থিতি বিবেচনায় ৭১ এর দায়ে জামাতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করবে । জামাত সংগঠন ও নেতাদের বাঁচাতে চুড়ান্ত পর্যায়ের ধ্বংশ লীলা চালাবে ।

ডিসেম্বর-জানুয়ারীঃ সরকার বিএনপির প্রতি জামাতের দায়ভার চাপিয়ে অভিযোগের অঙ্গুলি তুলবে এবং সরকার বলবে তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে আলোচনার পরিবেশ জামাত নষ্ট করেছে । জামাত শিবিরের মরণ কামড়ে বাস্তবিক অর্থেই ধ্বংশ যজ্ঞ জনজীবনকে অসহনীয় করে তুলবে, জনগন বলবে না পারলে সরকার একাজে হাত দিল কেন, পরিবেশ নিয়ন্ত্রনে পুলিশ সক্ষম নয়, কেন আর্মি নামাচ্ছে না । এই অজুহাতে সরকার জরুরী অবস্থা ঘোষনা করে সেনাবাহিনীকে মাঠে নামাবে । তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির সমাধান না করে সরকার জরুরী অবস্থার মধ্যেই সাংবিধানিক সংকটের অজুহাতে নির্বাচন ঘোষনা করবে ।

সরকার জামাতের রাজনীতি ও যুদ্ধাপরাধের বিচারকে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব দলের মধ্যে ঐক্য ও ভোটার সমর্থক বাড়ানোর চেষ্টা করবে । আওয়ামী লীগের অব্যাহত প্রচারণায় বিএনপি অনিচ্ছা সত্ত্বেও নির্বাচনী ইস্তেহারে যুদ্ধে মানবতা বিরোধী বিচারকে নিয়ে সুনির্দিৃষ্ট ঘোষনা আনতে বাধ্য হবে । এতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন অপরাপর সংগঠন স্বস্থিবোধ করলেও জামাতের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সাথে বিএনপির দূরত্ব তৈরী হবে ।

এক্ষেত্রে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট নির্বাচন বয়কট করবে নাকি অংশ গ্রহন করবে ! নির্বাচনের সিদ্ধান্ত গ্রহনে বিএনপি জোট দোদুল্যমান ও জটিল পরিস্থিতির সম্মূখীন হবে । বর্তমান বাস্তবতায় নির্বাচন বয়কট করার সম্ভাবনা থাকলেও ঐ সময়ে উদ্ভূত পরিস্থিতির বাস্তবতায় নির্বাচনে অংশ গ্রহন করতেও পারে । বিএনপি জোটভূক্ত ছোটদল গুলির আগ্রহ ও জরুরী অবস্থায় মাঠে থাকা সেনাবাহিনীর উপস্থিতি নির্বাচনকে নিরপেক্ষ করাবে এ ধারনা থেকে বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহন করার সম্ভাবনাকে ওড়িয়ে দেয়া যায় না । তাছাড়া আওয়ামী লীগকে খালি মাঠে বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দিয়ে পরবর্তীতে আন্দোলন করে হটানোর সম্ভাবনা কতটুকু তাও বিএনপিকে সন্দিহান ও বিভ্রান্তিতে ফেলবে । জাতীয় পার্টিকে নির্বাচন বয়কটে রাজী করাতে পারলে বিএনপি জোটও বয়কট করবে । আবার আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে আনতে সক্ষম হলে বিএনপি জোট দ্বিধাদ্বন্ধ নিয়েই আন্দোলনের অংশ হিসাবে বা বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে না দেয়ার প্রত্যয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবে । এভাবে সরকার এগুতে পারলে বাকীটা কি হবে, তা অন্য দিন না হয় আলোচনা করব ।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা যে যার মত শেষ পরিণতির ছক তুলে ধরছেন । এটাও ঠিক, রাজনীতিকে সব সময় সমীকরনের ছকে ফেলা যায় না, রাজনীতির গতি প্রকৃতি ইস্যুকে নন ইস্যু ও নন ইস্যুকে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর মর্যাদায় নিয়ে যেতে পারে ।

যাহোক, এতো আমার ভাবনা, আপনার ভাবনা-চিন্তা জানাবেন কিন্তু ।[/u][/u]

বিষয়: রাজনীতি

২১৩৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File