পৃথিবীকে বিছানা বলাকি কুর'আনে বৈজ্ঞানিক ভুল?

লিখেছেন লিখেছেন বিন রফিক ১৯ আগস্ট, ২০১৪, ০৪:৩৭:৩১ বিকাল

প্রথমে কয়েকটি আয়াত উল্লেখ করি।কুর'আনের আয়াত ব্রাউজ করতে ভিজিট করুন tanzil.net

সূরা বাক্বারা (২>২২)

"তিনি তোমাদের জন্য পৃথিবীকে বিছানা স্বরূপ বানিয়েছেন..."

সূরা ত্ব-হা (২০>৫৩) এবং সূরা যুখরুফ (৪৩>১০)

"তিনি তোমাদের জন্যে পৃথিবীকে বিছানা বা শয্যা করেছেন"

অথবা অনুবাদ -"যিনি পৃথিবীকে তোমাদের জন্য বিস্তৃত গালিছারূপে সৃষ্টি করেছেন"

অর্থ্যাৎ পৃথিবীকে গালিচার মত বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।

কুর'আনের এই বক্তব্যকে বৈজ্ঞানিক সত্যের বিরোধী মনে হয়। কেননা বিজ্ঞান বলে পৃথিবী চ্যাপ্টা বা সমতল নয়, গোলাকার (Spherical)।

ব্যাখ্যাঃ

১. এটাকে ভুল মনে হবার কারণ, মানুষ মনে করে শুধু সমতল বা চ্যাপ্টা তলের উপরই মাদুর বা গালিচা বিছানো যেতে পারে। এটা ঠিক নয়। বর্তমান যুগে এটা খুবই প্রচলিত যে গোলাকার বলের উপরিপৃষ্ঠে খুব সহজেই গালিচা বিছানো যায়। যেমন ধরুন নিচের গোলকের উপরিভাগে আপনি চাইলে গালিচা বিছিয়ে দিতে পারেন।



কুর'আন কিন্তু বলেনি আমি পৃথিবীকে চ্যাপ্টা করে বানিয়েছি। সেটা হল আমাদের বোঝার ভুল।

তাহলে, এই আয়াতের উদ্দেশ্য কী?

সূরা যুখরুফের ৪৩ নং আয়াত পুরোটা পড়লে জানা যায় -

"যিনি তোমাদের জন্যে পৃথিবীকে করেছেন বিছানা এবং তাতে তোমাদের জন্যে করেছেন পথ, যাতে তোমরা গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পার।"

অন্য আয়াতে আছে, "...যাতে তোমরা সহজে চলাফেরা করতে পার"

ভূতত্ত্ব সম্পর্কে ধারণা থাকলে আমাদের এই আয়াত নিয়ে মোটেই প্রশ্ন উঠবে না।

আমরা জানি, পৃথিবীর উপরিভাগ বা ভূত্বক (Crust) কঠিন হলেও অভ্যন্তর ভাগ উত্তপ্ত অবস্থায় রয়েছে।

পৃথিবীর গঠনকে চারটি স্তরে বিভক্ত করা যায়-

১. Crust বা উপরিভাগ। এটা সম্পূর্ণ কঠিন অবস্থায় আছে।

২. Mantle উপরিভাগ পরবর্তী আবরণ। এ অংশের সান্দ্রতা বেশি।

৩. Outer Core (বহিঃস্থ শাঁস)। এ স্তর তরল যার সান্দ্রতা Mantle এর চেয়ে কম।

৪. Core (অভ্যন্তরভাগ। কেন্দ্রস্থ এই অংশ সম্পূর্ণ কঠিন।



ভিতরে উত্তপ্ত তরল কঠিনের মিশ্রণকে স্থিতিশীল রাখার জন্য উপরে ভূত্বক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। ভূত্বক না থাকলে পৃথিবী কোন মতেই বাসযোগ্য হত না। যেমন ধরুন উপরে প্রথম চিত্রের গোলকটি যদি শুধু শিক দিয়ে বানানো হয়, কোন আবরণ না দেওয়া হয়, তাহলে এবার পৃথিবীকে এরকম চিন্তা করুন আর ভাবুন আমাদের স্বাভাবিক কাজকর্ম তখন চলত কিনা।

২. আমরা জানি কোন গোলক যত বড় হবে তথা এর ব্যাসার্ধ যত বড় হবে এর পৃষ্ঠের বক্রতা তত কম হবে। পৃথিবী একটি বিশাল ক্ষেত্র যার ব্যাস প্রায় ৬৪০০ কি.মি (প্রায় ৪ হাজার মাইল)। আমরা দৈনন্দিন জীবনে পৃথিবীপৃষ্ঠের খুব সামান্য অংশ নিয়ে কাজ করি। এই অংশটুকু বাস্তবে গোলকের অন্তর্গত বক্র চাপ হলেও উপলদ্ধি করার মত নয়। যেমন এক মাইল পরিমাণ দূরত্বেও মাত্র ১ ডিগ্রির মাত্র ৭০ ভাগের এক ভাগ কোণ তৈরি হয়। মাত্র ১ ডিগ্রি পরিমাণ বক্রতা উপলদ্ধি করা যাবে পৃথিবীপৃষ্ঠে ১১২ কি.মি পথ বিবেচনা করলে।

তাহলে, গণিতের ভাষায় যেই ক্ষেত্রের ব্যাসার্ধ অতি বিশাল তার তলকে সমতল বলা চলে।

ইসলাম ও বিজ্ঞান বিষয়ে আরো পোস্টঃ http://www.alomoy.com/search/label/Islam-and-Science?max-results=25

সূত্রঃ

১. আল কুর'আনে বিজ্ঞান- ইসলামিক ফাউন্ডেশান

২. http://en.wikipedia.org/wiki/Structure_of_the_Earth

৩. http://www.colorado.edu/physics/phys2900/homepages/Marianne.Hogan/inside.html

বিষয়: বিবিধ

১৩৪৪ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

255953
১৯ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:১৬
সন্ধাতারা লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ খুব ভালো লাগলো
১৯ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৩
199515
বিন রফিক লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ
256026
১৯ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৮:১৬
গ্রামের পথে পথে লিখেছেন : আল্লা এত কিছু বল্লেন!! তবে পৃথিবী যে সমতল নয় বরংচ গোলাকার সে কথাটা পরিস্কার করে বেলেন্নি কেন?
২০ আগস্ট ২০১৪ রাত ০১:১৯
199726
নুর আয়শা আব্দুর রহিম লিখেছেন : Bangla! Is Islam Solution for Humanity By Dr.Zaki…: http://youtu.be/BKaEx29v1Lg
কোরআনের ব্যখ্যা জেনে নিন শিক্ষিত জন থেকে। Surprised
২২ আগস্ট ২০১৪ সকাল ১১:০২
200692
বিন রফিক লিখেছেন : কুর'আনের উদ্দেশ্য শুধু বৈজ্ঞানিক আলোচনা করা নয়। এটি হল জীবন বিধান, সতর্ক বাণী। এখানে মানুষকে মনে করিয়ে দেওয়া হচ্ছে সে শুণ্য ত্থেকে এত সাজানো গোছানো এই পৃথিবী পায়নি।
২২ আগস্ট ২০১৪ সকাল ১১:২২
200696
গ্রামের পথে পথে লিখেছেন : তা হলে শুন্য থেকে আল্লা পয়দা হয় কেমন করে @ রফিক ভাই?
256064
১৯ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৯:৪৫
বুড়া মিয়া লিখেছেন : আপনি ফ্ল্যাট-আর্থ কন্সেপ্টও পড়ে নেন।

ফ্ল্যাট না স্ফেরিক্যাল এ নিয়ে এখনও মনে হয় যুক্তি-তর্ক চলমান। সত্য জানতে হয়তো আমাদের আরও অনেক সময় পারি দিতে হবে অথবা হয়তো জানতেই পারবো না!
256153
২০ আগস্ট ২০১৪ রাত ০১:২০
নুর আয়শা আব্দুর রহিম লিখেছেন : ধন্যবাদ
২০ আগস্ট ২০১৪ রাত ০১:৩১
199739
গ্রামের পথে পথে লিখেছেন : জোকার লায়েক???

https://www.youtube.com/watch?v=bk5q9TeGo14
২০ আগস্ট ২০১৪ রাত ০১:৪৮
199744
নুর আয়শা আব্দুর রহিম লিখেছেন : ওনার সাথে সামনে এসে বলার আহবান করুন থাকে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File