আশুরা, কারবালা, ফালতু শোক ও দালালী

লিখেছেন লিখেছেন আবূসামীহা ১২ অক্টোবর, ২০১৬, ০৯:৫৫:০২ সকাল

আশুরার ফজ়ীলতের সাথে কারবালার কোন সম্পর্ক নাই। এইটা পয়লা বুঝতে হবে। আশুরার গুরুত্ব কারবালার ঘটনার আরো হাজ়ারো বছর আগে থেকেই নির্ধারিত।

দ্বিতীয় কথা হইল কারবালার বিয়োগান্তক ঘটনা আশুরার দিন সংঘটিত হইছে, তাই ঘটনাটা তার সাধারণ যে গুরুত্ব তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গেছে। অর্থাৎ আশুরার দিনের কারণে সাইয়্যিদুনা হুসাইন ইবন আলীর (রাঃ আঃ) শাহাদাত স্বাভাবিকের চেয়ে আরো বেশি মর্যাদাবান হয়ে গেছে। কিন্তু হুসাইনের (রাঃ) শাহাদাতের কারণে আশুরার মর্যাদা বাড়েনি, কারণ এর মর্যাদা আগে থেকেই স্থিরীকৃত।

তৃতীয় কথা হইল, মুসলমানরা কোন শোকের বার্ষিকী পালন করে না। ঘটনা যতই বিয়োগান্তক এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যতই গুরুত্বের অধিকারী হন না কেন শোক প্রকাশের সর্বোচ্চ সীমা তিন দিন। শুধুমাত্র নারীদের ক্ষেত্রে তাদের স্বামীদের জন্য শোক প্রকাশের সময় ৪ মাস ১০ দিন। এরপরে শোকের ঘটনা মনে হলে ঈমানদাররা শুধুমাত্র ইস্তিরজা‘ করবে, অর্থাৎ “ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রজি‘ঊন” বলবে। সাইয়্যিদুনা হুসাইনের (রাঃ আঃ) পূত্র ইমাম জ়য়নুল আবেদীন [আলী ইবন হুসাইন ইবন আলী (রাঃ আঃ)] তাঁর প্রপিতামহ রসূলুল্লাহ [ﷺ]থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি (ﷺ) বলেছেন, “কোন মুসলিম যখন কোন দুঃখ/মুসীবতে পতিত হয়, আর যখন সে তা স্মরণ করে এবং তা যতই আবছা ও অতীত হোকনা কেন, তখন সে বলে ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রজি’ঊন’, আল্লাহ্ তাকে এমন পুরষ্কার দেবেন যা বিপদে পড়ার দিনের কষ্টের সমতুল্য।” (আহমদ ও ইবন মাজাহ) [ইমাম ইবন কাসীর, আল-বিদায়াহ্ ও আন—নিহায়াহ [৮/২২১]। তাই প্রতি বছর নিজেদেরকে কষ্ট দেবার মত লোক দেখানো ফালতু শোক প্রকাশ করার কোন ভিত্তি আমাদের দীনে নাই।

চতুর্থ কথা হইল, সাইয়্যিদুনা হুসাইন (রাঃ আঃ) একটা মহান উদ্দেশ্যে জীবন কুরবানী দিয়েছেন। তিনি ছিলেন রসূলুল্লাহর [ﷺ] সবচেয়ে প্রিয় কন্যার সন্তান, তাঁর [ﷺ] প্রিয়পাত্র, আলিম, আবিদ ও বেহেশ্তের তরুণদের সর্দার। তাঁকে যারা হত্যা করেছে তাদেরকে দায়মুক্তি দেয়ার মত দালালী করা থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে। আজকাল সালাফিয়্যার ভেকধারী কিছু মাদখালী ইনিয়ে বিনিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করবে যে হুসাইনের (রাঃ) হত্যাকাণ্ডের জন্য ইয়াজ়িদ ইবন মুআবিয়া দায়ী নয় এবং ইয়াজ়িদ ভাল মানুষ ছিল। তাদের কথা শুনলে মনে হবে হুসাইন (রাঃ) নিজেই তাঁর নিহত হবার জন্য দায়ী। এসমস্ত দালালদের ব্যাপারেও সাবধান হতে হবে। মনে রাখতে হবে হুসাইনের (রাঃ আঃ) মত মানুষেরা সবসময় উম্মতের প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন। আর মদীনার হারামকে লংঘন করে এতে মুসলমানদের হত্যা করা ও মুসলিম নারীদের ধর্ষণের অনুমতি দানকারী ইয়াজ়িদ কখনোই হুসাইনের (রাঃ আঃ) হত্যার দায় এড়াতে পারে না।

বিঃদ্রঃ এখানে সত্যিকার সালাফীদের ব্যাপারে কিছু বলা হয় নি। এখানে শুধুমাত্র মাদখালীদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, যারা সালাফী হবার মুখোশ পরে থাকে। কিন্তু সবসময় সবধরণের সরকারের দালালীতে রত থাকে।

বিষয়: বিবিধ

১১৮৫ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

378615
১২ অক্টোবর ২০১৬ সকাল ১০:৩৬
হতভাগা লিখেছেন : আশুরাকে ঘিরে তাজিয়া মিছিল , তরুনদের পিঠের উপর স্বেচ্ছায় ছুরি চালানো - এসব জিনিস হিন্দুদের রথ যাত্রার মত মনে হয় ।

এরকম প্রতিকৃতি নিয়ে মিছিল করা , নিজেদের শরীরকে রক্তাক্ত করা ইসলাম সমর্থন করে না ।
378627
১২ অক্টোবর ২০১৬ দুপুর ০৩:১৬
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : এই বিষয়ে বাংলাদেশের মুসলিম সমাজের মধ্যে বিশেষ কোন বিভেদ ছিল বলে মনে হয়না। কিন্তু কি কারনে কিছু লোক ইয়াযিদ কে নিরপরাধ প্রমানে উঠেপড়ে লেগেছে সেটা বুঝতে পারিনা। এই সুযোগে কিন্তু কিছু নব্য শিয়া মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।
378806
১৮ অক্টোবর ২০১৬ দুপুর ০৩:১৪
ফখরুল লিখেছেন : ১০ ই মহরম নিয়ে বিশ্ববাসি এখনো অন্ধকারে রয়ে গেছে। অনেক ধন্যবাদ সুন্দর লেখার জন্য।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File