সমাজের গাথুঁনিতে রাজনীতির প্রভাব অনেক কম...

লিখেছেন লিখেছেন লোকমান বিন ইউসুপ ২৮ আগস্ট, ২০১৪, ০৬:০০:৩২ সন্ধ্যা

আপনি কত বছর বয়সে রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছেন?

আপনি রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার আগে কোন্ নীতির তত্তাবধানে ছিলেন?

মানুষ কি সবাই রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে বাধ্য? মানুষ কি সাধারন ভাবে সবাই রাজনীতি করে? তারা বড়জোড় কোন রাজনৈতিক দলের সমর্থক ।

নারীরা কি সবাই রাজনীতি করে? শিক্ষক,ব্যাংকারস, ডাক্তার,আইটি পারসন ,প্রকৌশলী,শ্রমিক সবাই কি রাজনীতি করে? শিশুরা কি রাজনীতি করে? প্রবীন বয়োজৈষ্ঠরা কি সবাই রাজনীতি করে? আপনার পরিবার ও পরিচিত সবাই কি রাজনীতি করে?

এদের সবার প্রতি আমাদের দায়িত্ব আছে। আর এই দায়িত্ব পালন সাধারন অর্থে সমাজনীতি।

খেয়াল করে দেখবেন আমি রাজনীতির বিরুধিতা করিনি। যারা রাজনীতি করছেন তার থেকে সরে আসতেও বলিনি।

এখন প্রশ্ন হল আপনি রাজনীতিকে সবার উপর ফরজে আইন করে দেবেন কিনা। যদি না দেন তবে রাজনৈতিক সচেতন থেকে সামাজিক কাজ করলে কোন অসুবিধা দেখিনা। তাবলিগ দাওয়াহর কাজ করে। আমরা নৈতিক কাজের পাশাপাশি সামাজিক কাজের কথা বলছি। সবকিছুকে ইসলামের বিরুদ্ধে নিয়ে যাওয়া আর হারাম ঘোষনা করতে পারা কিছু ইসলামপন্থীর মনবৈকল্য। আশা করছি অনেকের মধ্যে সে রোগ নেই। রাজনীতি সমাজনীতি আলাদা করা মানে হচ্ছে কোন অংশকে করতে মানা করা নয়। আমি সে রকম কিছুই বলছিনা। একজন মানুষের পক্ষে সমাজবিজ্ঞান, রাষ্টবিজ্ঞান, দর্শন, বিবিএ, বিজ্ঞান সব বিষয়ে অনার্স করা পসিবল না। ঠিক তেমনি রাজনীতি, সমাজ ও নৈতিকতার কাজ একসাথে চালানো দুরুহ। তাই সামাজিক আন্দোলন যারা করবে তারা নিশ্চয় ভোট দিবেন। আর রাজনীতি যারা করবে তারাতো সমাজের জন্যেও কাজ করেন তবে তাদের মুল ফোকাসডটা থাকে নিজের রাজনীতি এবং দেশ বিদেশের বিরোধী রাজনৈতিক শক্তির দিকে। ইসলামের ফরজে আইনের বাইরের বাকী বিষয়গুলো সবার সমানভাবে পালন না করলেও চলে। কেহ সামাজিক কাজ করলে কেহ রাজনীতি করলে আমি সংঘাত বা বৈপরীত্যের কিছু দেখছিনা। ধরুন আপনি বিদেশে আছেন। আপনার পক্ষে রাজনীতি করা কঠিন। আপনি যদি আপনার এলাকায় একটি ক্লাব গঠনের মধ্য দিয়ে সামাজিক কাজ করেন তবে কি সমস্যা? প্রজাতন্ত্রের সব মানুষ দিয়ে সক্রিয় রাজনীতির বিষয়ে রাষ্টের বাধা আছে।অনেক পেশা আছে যাতে থেকে রাজনীতি করা যায় না কিন্তু সামাজিক কাজে উৎসাহ আছে। আপনি নিশ্চয় ক্ষমতায় গিয়ে বিসিএস কর্মকর্তাদের আপনার বিরোধী রাজনীতি করতে দিবেননা। সবাই যেমন কবিতা লিখবেনা তেমনি সবাই রাজনীতিও করবেনা। রাজনীতি নিশ্চয় যাকাতের মত নয়। এটা কেহ কেহ পালন করলে হয়ে যাবে।

রাষ্ট চালাতে হলে রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে হবে। কিন্তু সমাজ চালাতে হলে রাজনীতি না করলেও হয়। সুতরাং রাষ্ট রাজনীতিবিদদের জন্যে। যাদের রাজনীতি ভাল লাগেনা এবং রাজনীতি করার সুযোগ নেই তারা সমাজনীতি করবে।

রাজনীতি উপর থেকে আপনাকে সমাজসেবা দিচ্ছে। আপনার আশে পাশের সবার দায়িত্ব রাজনৈতিক পার্টি এবং সরকার এসে নেয়না। প্রত্যেকে যদি তার পরিবার,আশে পাশের মানুষ,রিলেটিভ,বন্ধুবান্ধব,কলিগস সহ কাছের মানুষের দায়িত্ব নেয় তবে একটি অর্থবহ শান্তিপূর্ন নীরব পরিবর্তন সম্ভব।

আপনিই চিন্তা করে দেখুন আপনি আপনার কাছের মানুষদের দায়িত্ব পালন করলে আপনার মতই প্রতিষ্ঠা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ব্যাপারখানা মোটেও এবসার্ড নয়।চিন্তা করে দেখুন ভাল মানুষরা ইন্ট্রোভার্ট থেকে আরও সামাজিক হয়ে উঠলে আশে পাশের মনন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ন নীরব পরিবর্তন আসবে যা হবে নৈতিকতার উপর ভিত্তি করে।

একজনকে সব কাজ দেয়া বাস্তব নয়... একজন সব কাজ করাও বাস্তব নয়। একজন সকল টাইপ কাজ করাও ঠিক নয়। বর্তমান বিশ্ব স্পেশালিস্ট হওয়ার সময়। রাজনৈতিক ব্যক্তি সামাজিক দায়িত্ব পালনে মনোসংযোগ করতে পারেননা তাই সমাজের গাথুঁনিতে রাজনীতির প্রভাব অনেক কম।

বিষয়: বিবিধ

১১১০ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

259303
২৮ আগস্ট ২০১৪ রাত ১১:৩১
বৃত্তের বাইরে লিখেছেন : আপনার লেখাগুলোতে সবসময় সমাজ পরিবর্তনের গঠনমূলক প্রস্তাবনা থাকে। দেশে দাওয়াহ কাজের ক্ষেত্রে এত প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও চেষ্টা করে যাচ্ছেন সেজন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। দেশের বাইরে(আমি আমার দেখা অভিজ্ঞতা থেকে বলছি)দাওয়াহ কাজের প্রচারের ক্ষেত্রে সুবিধা হল এখানে যারা আসে তারা দেশের রাজনীতির প্রভাব থেকে মুক্ত। আর ইয়াং জেনারেশনের দেশের এবং বহির্বিশ্বের রাজনীতি নিয়ে কোন আগ্রহ নেই, তারা এসব আলোচনাও করেনা। সবার উদ্দেশ্য থাকে ইসলাম কে জানা,পরিবারে সন্তানদের ইসলামী অনুশাসনে গড়ে তোলা এবং সামাজিক কাজের মাধ্যমে ধর্ম প্রচার। বেশি বেশি সামাজিক কাজের মাধ্যমে ধর্মের পজিটিভ দিকগুলো তুলে ধরা বেশি সহজ হয় যেহেতু পারিপার্শ্বিক নানা কারনে ইসলামের প্রতি মানুষের বিরূপ ধারনা রয়েছে। বাংলাদেশেও রাজনীতিকে দাওয়াহ কাজের সাথে না জড়িয়ে একে ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দে রেখে যদি কাজ করতে পারেন তাহলে ইসলাম প্রচার আরও সহজ হবে বলে মনে হয়। ধন্যবাদ আপনাকে।
259368
২৯ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৮:২১
কাহাফ লিখেছেন : সুন্দর ও জীবন ঘনিষ্ঠ বিষয়ে লেখার জন্যে অনেক ধন্যবাদ।
259394
২৯ আগস্ট ২০১৪ সকাল ১১:২৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : রাজনিতি করুন বা না করুন সকলের উপরই তা প্রভাব বিস্তার করে। যে সময় টাকে বলা হতো একনায়কতান্ত্রিক বা সামন্ততান্ত্রিক সময় তখন যে কোন সাধারন মানুষ ও রাজা বা নবাবের কাছে কৈফিয়ত চাইতে পারতেন। কিন্তু এই তথাকতিত গনতন্ত্রের যুগে সরকারি কর্মচারিরা কৈফিয়ত দিতে বাধ্য নন! মানুষের অধিকার আদায়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। রাজনিতি জিবন থেকে আলাদা কিছু নয়। আমরা জিবন থেকে রাজনিতি আলাদা করে ফেলে সেই অসৎ ব্যাক্তিদের হাতে রাজনিতি কে তুলে দিয়েছি যারা আমাদের ক্ষতি ও শোষন করাকেই তাদের অধিকার মনে করে নিয়েছে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File