ফলাফলের চরম বিপর্যয় , কারণ চিহ্নিত করে কার্যকরী ব্যবস্হা নিন।

লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল কাইয়ূম ০৯ মে, ২০১৭, ০৬:২৬:৫৭ সন্ধ্যা

ফলাফলের ক্রমশ বিপর্যয় ,

কারণচিহ্নিত করে কার্যকরী ব্যবস্হা নিন ।

- আব্দুল কাইয়ূম

শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড । মেরুদন্ডী প্রার্ণী যেমন মেরুদন্ড ছাড়া অচল , তেমনি একটি জাতি শিক্ষা ছাড়া অচল । তাই জাতিকে উন্নতির শিখরে পৌছাতে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে রয়েছে শিক্ষা প্রদানের নিরলস প্রচেষ্টা । এর ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে চলেছে । বাংলাদেশে রয়েছে অনেক প্রাকৃতিক সম্পদ । বলা হয়েছে বাংলাদেশে যে প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডার রয়েছে এই সম্পদের যথাযথ উত্তোলন ও ব্যবহার করা হলে প্রাকৃতিক সম্পদের দ্ধারা বাংলাদেশ বিশ্বের মানচিত্রে উন্নত দেশ হিসেবে স্বীকৃত হবে । কিন্তু এই অপার সম্পদ ও অপার সম্ভাবনা থাকার পরও বাংলাদেশের মানুষ আজ জীবিকার সন্ধানে ছুটে বিদেশে । সম্পদ উত্তোলনের দক্ষ পরিচালক , কর্মী না থাকায় সম্পদের যথাযথ উত্তোলন সম্ভব হচ্ছে না । তাই প্রাকৃতিক সম্পদ ও খনিজ সম্পদের উত্তোলনের জন্য একজাখ সৎ, দক্ষ , নৈতিক মানুষের প্রয়োজন। যারা দেশের জন্য হবে নিবেদিত প্রাণ , আকড়ে ধরে রাখবে দেশের সম্পদকে । শুধু প্রাকৃতিক সম্পদ নয় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার যেকোনো কাজে মানবসম্পদের প্রয়োজন।

তাই সর্বপ্রথম আমাদের মানবসম্পদ উন্নয়ন আবশ্যক।মানবসম্পদ উন্নয়েন জন্য শিক্ষার ছাড়া বিকল্প নেই । কেননা একজন শিক্ষিত লোক পারে একটি শিক্ষিক জাতি গড়তে । একজন বিখ্যাত মনীষী বলেছিলেন " আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও , আমি তোমাদের একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দেব । " একজন শিক্ষিত লোক , সে তার পরিবারের জন্য গর্বের , সমাজের জন্য ভাল বন্ধু , দেশের জন্য সুনাগরিক ও সম্পদ ।

তাই শিক্ষিত লোক গড়ার জন্য বাংলাদেশ শিক্ষামন্ত্রনালয়ের প্রচেষ্টা অব্যাহত । আমাদের দেশের লোকসংখ্যার তুলনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কম হলেও মুটোমুুটি যোগান দিতে সক্ষম হয়েছে । এরপরও ঘাটতি থেকে যায় ।

অভিবাবক ও শিক্ষদের নিরলস প্রচেষ্ঠা রয়েছে তাদের সন্তানদের শিক্ষিত করে তুলার । এরপরও হতাশার সমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছে অভিবাবকরা । সম্প্রতি ৪ মে এসএসসি রেজাল্ট প্রকাশিত হয়েছে । এই রেজাল্টে অভিবাবকরা অসন্তুষ্ট , শিক্ষার্থীরা হতাশাগ্রস্হ । পূর্বের তুলনায় বর্তমান রেজাল্টের অবনতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে ।শুধু এবছরই নয় গত চারবছর ধরে এটি লক্ষ্য করা যাচ্ছে । বিগত বছর গুলোতেও যেন ক্রমশ রেজাল্টের হার কমে আসছে । এসএসসি পরীক্ষার বিগত চারবছরসহ চলতিবছরের পাসের হার উল্লেখ করছি। ২০১৩ সালে পাশেঁর হার ছিল ৯২.১১। ২০১৪ সালে ৯১.৩৪ গত বছরের তুলনায় কমেছে ০.৭৭ । ২০১৫ সালে ৮৭.০৪ বগত বছরের তুলনায় কমেছে ৪.৩০ । ২০১৬ সালে ৮৮.২৯ গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ১.২৫ । ২০১৭ সাল ৮১.৩৫ গত বছরের তুলনায় কমেছে ৬.৯৪ । দেখা যাচ্ছে যদিও ২০১৫ সালে ১.২৫ বেরেছিল তবে ২০১৩ থেকে ২০১৭ সালে মোট কমেছে ১০.৭৬ ।

এবার বিভাগগুলোর পরিসংখ্যান দেখা যাক -

ঢাকা ২০১৩ সালে ৯৩.৯৪ , .............. ২০১৬ সালে ৮৮.৬৭,২০১৭ সালে ৮৬.৩৯ ত্রমশ কমে গেছে।

রাজশাহী ২০১৩ সালে ৯৬.৩৪ ,......... ২০১৫ সালে ৯৪.৯৭ , ২০১৬ সালে ৯৫.৭০ , ২০১৭ সালে ৯০.৭০ ।

কুমিল্লা ২০১৩ সালে ৮৯.৯৭ , ২০১৪ সালে ৮৯.৯২ , ২০১৫ সালে ৮৪.২২, ২০১৬ সালে ৮৪.০০ , ২০১৭ সালে ৫৯.০৩।

যশোর ২০১৩ সালে ৯২.১৯ , ২০১৪ সালে....... , ২০১৫ সালে ৮৪.০২ , ২০১৬ সালে ৯১.৮৫ , ২০১৭ সালে ৮০.০৪ ।

চট্রগ্রাম ২০১৩ সালে ৯১.৪০ , ২০১৪ সালে ৯১.৪০ , ২০১৫ সালে ৮২.৭৭ , ২০১৬ সালে ৯০.৪৪ , ২০১৭ সালে ৮৩.৯৯ ।

বরিশাল ২০১৩ সালে ৯০.৬৬ , ২০১৪ সালে ৯০.৬৬ , ২০১৫ সালে ৮৪.৩৭ , ২০১৬ সালে ৭৯.৪১ , ২০১৭ সালে ৭৭.২৪ ।

সিলেট ২০১৩ সালে ৮৯.২৩, ২০১৪ সালে ৮৯.২৭ , ২০১৫ সালে ৮১.৮২ , ২০১৬ সালে ৮৪.৭৭ , ২০১৭ সালে ৮০.২৬।

দিনাজপুর ২০১৩ সালে ৯৩.২৬ , ২০১৪ সালে ৯৩.২৬ , ২০১৫ সালে ৮৫.০৭ , ২০১৬ সালে ৮৯.৫৯ , ২০১৭ সালো ৮৩.৯৮।

পরিসংখ্যান হিসাব করলে দেখা যায় যে সব বোর্ডেরই পাশেঁর হার প্রতিবছরই ক্রমশ কমে যাচ্ছে ।

শুধু তাই নয় পূর্বের তুলনায় কমেছে জিপিএ ৫ এর হারও । বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, " ফল বিপর্যয়ের পেছনে ছোটখাটো অনেক কারণ রয়েছে। তবে মূল কারণ পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের নতুন পদ্ধতি। "

সাধারনত দেখা যায় শিক্ষার্থীরা বেশীরভাগই গণিতে ফেল করে , এরপর ইংরেজীতে ।

শিক্ষকদের মতে গণিতে সৃজনশীল পদ্ধতি করায় শিক্ষার্থীরা গনিতে ফেল করে থাকে , তাছাড়া কম সময়ে ৭টি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লিখাও কষ্টকর হয়ে পরে । ইংরেজী সিলেবাস পরিবর্তন হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ইংরেজীতেও বেড়েছে দুর্ভোগ আর এই দুর্ভোগই ফেলের দুর্যোগে পরিণত হয়েছে ।

শিক্ষামন্ত্রনালয়ের কাছে আবেদন জানাচ্ছি যে , রেজাল্টের এই ক্রমশ অবনতি টেকাতে মূল কারণ গুলো চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় কার্যকরী ব্যবস্হা গ্রহণ করুন । জাতির স্বপ্নপূরণ করতে সহায়তা করুন ।

বিষয়: বিবিধ

৬০৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File