যেভাবে স্বাগত জানাব মাহে রমজানকে

লিখেছেন লিখেছেন ইসলাম কিংডম ২৭ মে, ২০১৭, ০৮:০০:১৫ রাত

আল্লাহ থেকে দূরে, পাপে-অন্যায়ে

কালের শূন্য গর্ভে লীন হয়ে হয়ে

গোনাহের কালিমায় ডুবন্ত হৃদয়ে

খসে গেছে যার জীবন থেকে অজস্র ক্ষণ

রমজান তার দরজায়, নির্বাক দাঁড়িয়ে

রহমত, মাগফিরাত, মুক্তির শত আহ্বান নিয়ে।

আল্লাহ তাআলা আমাদের জন্য রেখেছেন বড়-বড় কিছু উপলক্ষ্য, মৌসুম, যা শাণিত করে আমাদের হৃদয়ে ঈমানকে, আন্দোলিত করে অন্তরাত্মায় পবিত্র সব অনুভূতি। বাড়িয়ে দেয় আমাদের ভেতর ইবাদত-বন্দেগীর জযবা। রমজান তেমনই এক মৌসুম। রমজান মুসলমানদের জন্য আল্লাহ তাআলার হাদিয়া। রমজান আমাদেরকে দেয় ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব, স্বচ্ছতা, সহমর্মিতা, আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা,পবিত্রতা, সবর ও শৌর্যবীর্যের দীক্ষা। রমজান একটি সুমিষ্ট ঝর্নাধারা। ইবাদতকারীদের জন্য নিরাপদ ক্ষেত্র, আনুগত্যকারীদের জন্য দুর্বার দুর্গ। যারা পাপী তাদের জন্য রমজান একটি বড় সুযোগ, যাতে তারা তাদের গুনাহ থেকে তাওবা করতে পারে। তাদের জীবন-ইতিহাসে স্বচ্ছ কিছু অধ্যায় রচিত করতে পারে। তাদের জীবনকে ভরে দিতে পারে উত্তম আমলে, উৎকৃষ্ট চরিত্রে।

মাহে রমজান কুরআন নাযিলের মাস। মাহে রমজান নেক-আমলের ছাওয়াব বহুগুণে বেড়ে যাওয়ার মাস। দরজা বুলন্দ হওয়ার মাস। গুনাহ মোচন হওয়ার মাস। পদস্খলন থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ানোর মাস। এ মাসে জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়। শয়তানকে আবদ্ধ করে রাখা হয়। যে ব্যক্তি এ মাসে ঈমান জাগ্রত রেখে, আল্লাহর কাছে ছাওয়াবের আশায় রোজা রাখে ও কিয়ামুল্লাইল করে, আল্লাহ তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেন।

মাহে রমজানমহিমান্বিত মাস। রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের মাস। এ মাসে উমরা আদায় হজের সমতুল্য।

প্রত্যেক প্রাপ্তবয়ষ্ক, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন, মুকীম, সামর্থ্যবান মুসলিমের উপর রোজা রাখা ফরজ। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে রোজা রাখা ফরজ। অমুসলিমের উপর রোজা রাখা ফরজ নয়। অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুর জন্যও রোজা রাখা ফরজ নয়। তবে যদি রোজা রাখতে কষ্ট না হয় তাহলে রোজা রাখার অভ্যাস গড়ে-তোলার জন্য তাদেরকে রোজা রাখার নির্দেশ দেয়া উত্তম হবে। কেননা সাহাবায়ে কিরাম রাযি. তাঁদের বাচ্চাদেরকে রোজা রাখার নির্দেশ দিতেন। বাচ্চাদের কেউ ক্ষুধায় কাঁদতে শুরু করলে কোনো খেলনা দিয়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত ভুলিয়ে রাখতেন।

আল্লাহ তাআলার সকল বিধানেই রয়েছে বহুমুখী কল্যাণ। মাহে রমজানের সিয়াম সাধনা, দিনের বেলায় খানাপিনা ও কাম প্রবৃত্তিকে দমনের মধ্যেও আল্লাহ তাআলা নিহিত রেখেছেন নানাবিধ কল্যাণ। দুনিয়া ও আখেরাতের কামিয়াবি। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

এক. শয়তান ও কুপ্রবৃত্তির ক্ষমতা দুর্বল করা: রক্তমাংশের চাহিদা পূরণের জন্য রীতিমতো খাদ্য, পানীয় গ্রহণ ও যৌনসম্ভোগ চরিতার্থকরণ কুপ্রবৃত্তিকে বেপরওয়া করে তোলে, উদ্ধত করে তোলে। কুপ্রবৃত্তির তাড়নায় মানুষ সকল প্রকারের পাপাচারে লিপ্ত হয়। তাই কুপ্রবৃত্তিকে দুর্বল করার জন্য রোজার কোনো বিকল্প নেই।

দুই. যিকর ও ফিকিরের জন্য অন্তর খালি করা: কেননা প্রবৃত্তির চাহিদা প্রতিনিয়ত পুরণ করে যাওয়ায় হৃদয়ে একপ্রকার অন্ধত্ব চলে আসে। হৃদয় শক্ত হয়ে যায়। এর বিপরীতে ক্ষুধা ও পিপাসা মানুষের অন্তরকে আলোকিত করে, নরম করে। হৃদয়ের কঠিন অবস্থা দূর করে হৃদয়কে বিনম্র করে দেয়। যিকর ও ফিকিরের জন্য হৃদয়কে খালি করে দেয়।

তিন. রোজার মাধ্যমে ধনী ব্যক্তিরা আল্লাহর নেয়ামতের কদর ও মূল্য বুঝতে সক্ষম হয়। আল্লাহর অনুগ্রহের কথা বুঝতে সক্ষম হয়। কেননা অনুগ্রহ ও নেয়ামতের মূল্যায়ন মানুষ তখনই করতে শেখে যখন তা হারিয়ে যায়। রোজার দিনে খাদ্য ও পানীয় থেকে বিরত রেখে এই নেয়ামত হারিয়ে যাওয়ার অনুভূতি মানুষের মধ্যে জাগিয়ে তোলা হয়। পাশাপাশি রোজা রাখার মাধ্যমে অভাবী ও বঞ্চিত মানুষের দুরাবস্থা সম্পর্কে ধারণা লাভ করা সম্ভব হয়।

চার. রোজামানুষের শিরা-উপশিরাকে সঙ্কুচিত করে। আর এ শিরা-উপশিরা শয়তানের প্রবেশ ও চলাচলের পথ। রোজার মাধ্যমে শয়তানের ওয়াসওয়াসা স্তিমিত হয়, যৌনপ্রবৃত্তির আন্দোলন ঝিমিয়ে পড়ে।

প্রবন্ধটি বিস্তারিত পড়ার জন্য: ••► bn.islamkingdom.com/s2/46681

বিষয়: বিবিধ

৭০০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File