নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে রাষ্ট্র ব্যার্থ

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ নেছার উদ্দিন ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১০:৩৫:৫২ রাত

দেশের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা দেয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলেও রাষ্ট্র সেই নিরাপত্তা দিতে ব্যার্থ। বর্তমানে এমন একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যে, রাষ্ট্র নিরাপত্তা দিতে শুধু ব্যার্থ নয়। বরং, রাষ্ট্রীয় বাহিনীও সাধারণ মানুষের অনিরাপত্তার কারনে হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজকে যখন টাঙ্গাইলে সন্তানের সামনে মাকে ধর্ষন করা হয়েছে। সেখানে রাষ্ট্রের দায়িত্ব ছিলো ধর্ষকদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা। আদালতের মাধ্যমে ন্যায়বিচার করা। কিন্তু, রাষ্ট্র তা না করে, অন্যতম রাষ্ট্রীয় বাহিনী পুলিশ বিচার প্রার্থীদের উপর হিংস্র হায়েনার মত ঝাঁপিয়ে পড়ে। দুইজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে। যারা গুলিবিদ্ধ বা আহত হয়েছেন তাদের কথা না হয় বাদ দিলাম। এখানে রাষ্ট্রীয় বাহিনী ঐ লম্পট ধর্ষকদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। গতকাল মহেশপুর থানার পুলিশ একজন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীকে গ্রেপ্তার করার জন্য অভিযান চালায়। কিন্তু, আসামী পলাতক থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব নয়। তাতে কি? আমাদের বীর পুলিশ বাহিনী তার ২ বছরের কম বয়সী শিশুটিকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে এসেছে। পুরো ১৮ ঘন্টা কারাবাস করিয়ে তবে ছেড়ে দিয়েছেন। ঘুষ গ্রহন, অর্থের জন্যে মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানি, ব্যাক্তিগত রেষারেষির কারনে প্রশাসনিক ক্ষমতা ব্যাবহার করে প্রতিপক্ষকে হয়রানি করা পুলিশের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশের বিরুদ্ধে ধর্ষনেরও অভিযোগ রয়েছে। এই ধরনের অভিযোগগুলো উড়িয়ে দেয়ার মতও ছিলো না। সিলেটে রাজনের হত্যাকারীদের সাথেও পুলিশ কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ রয়েছে। অতীতে মাদকের ব্যাবসার কারনে অনেক পুলিশ কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার হতেও দেখা গেছে। এটা সত্য যে পুলিশের রাজনৈতিক অপব্যাবহার মাত্রাতিরিক্ত। কিন্তু, এটাও অস্বীকার করা যায় না যে, পুলিশের বেশীরভাগ অপরাধ হচ্ছে অরাজনৈতিক কারনে। এতো গেলো পুলিশের কথা, এরপরে আছে বিজিবি। বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব বিজিবির। কিন্তু, এতে সম্পূর্ণ ব্যার্থতার পরিচয় দিয়েছে বিজিবি। তারা রাষ্ট্রের মি নিরাপত্তা দিবে। নিজেদের নিরাপত্তাই তো তারা নিশ্চিত করতে ব্যার্থ। যার ফলে মায়ানমারের সীমান্তরক্ষীরা এক বিজিবি সদস্যকে হত্যা করে এবং তার কিছুদিন পর অন্য এক বিজিবি সদস্যকে অপহরণ করেন। অন্যদিকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ যত্রতত্র বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে বাংলাদেশী নাগরিকদের উপর গুলি চালায়, নির্যাতন করে, হত্যা করে, এমনকি ধর্ষনও করে। কিন্তু, বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি এইসব দেখেও চুপ থাকে। তবে চোরাকারবারিদের নিরাপত্তার ব্যাপারে বিজিবি যথেষ্ট সতর্ক। বিজিবি কর্মকর্তাদের পকেটে কিছু অর্থ পোছালে চোরাকারবারিরা নিরাপদে তাদের কাজ সম্পন্ন করতে পারবে। রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোর এমন অবস্থান রাষ্ট্রের ব্যার্থতায় প্রমাণ করে। যে কেউ এই প্রশ্ন করতে পারে, রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ব্যার্থতার দায় কেন রাষ্ট্র নিবে। উত্তরটা খুব সাধারণ,কারন বাহিনীগুলো রাষ্ট্রের। তবে এটা সত্য যে, এইটা কোনভাবে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ব্যার্থতা নয়। যদিও রাষ্ট্রের ব্যার্থতা। যে কাজটা আমি করতে পারি না। সেটা আমার ব্যার্থতা। কিন্তু, যে কাজটা আমি করতে পারি। কিন্তু, কোন কিছুর বিনিময়ে করছি না। সেটা অন্যায়, কিন্তু, ব্যার্থতা নয়। রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলো তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে না। এটা রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোর অপরাধ। কিন্তু, রাষ্ট্র রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোর দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করা নিশ্চিত করতে পারছে না। এটা রাষ্ট্রের ব্যার্থতা।

বিষয়: রাজনীতি

৭৭৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File