মাসিক মদীনা ও তার সম্পাদক মহীউদ্দীন খানের ব্যাপারে ফাতাওয়া

লিখেছেন লিখেছেন মুসলমান ২৫ এপ্রিল, ২০১৬, ০৯:৩৩:১৯ সকাল

সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ তা’য়ালার এবং শান্তি ও রহমত বর্ষিত শেষ নাবী (সাHappy এর উপর।

‘মাসিক মদীনা’ -য় প্রকাশিত (৫ম সংখ্যা, ৩৫তম বছর, আগস্ট, ১৯৯৯) একটি ফাতাওয়া জিজ্ঞাসা ও তাদের উত্তর সম্বলিত লেখাটির অনুবাদ সৌদি আরবের ‘গবেষণা ও ফাতাওয়া প্রদানের স্থায়ী কমিটি’ পর্যালোচনা করেছে।

সৌদি আরবে অবস্থানকারী বাঙ্গালী সম্প্রদায়ের এক সদস্য প্রশ্ন পাঠিয়ে উল্লেখ করেছেন যে, “আমরা বিশ্বাস করতাম যে আল্লাহ সবজায়গায় বিরাজমান এবং তিনি নিরাকার। যাহোক, সৌদি আরবে একটি সহযোগিতা ব্যুরোতে আয়োজিত সম্মেলনে একজন বাঙ্গালী অনুবাদক বক্তৃতা দেন। তিনি বক্তৃতায় বলেন যে আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা) সবজায়গায় বিরাজমান নয়, আল্লাহর হাত, চোখ সহ অন্যান্য গুনাবলী থাকার কথা বর্ণনা করেন। তিনি আরো দাবী করেন যে যে ব্যক্তি এটা বিশ্বাস করেনা সে কাফের/অবিশ্বাসী। আমার জিজ্ঞাসাঃ এ বিষয়ে আপনার মতামত/অভিমত কি? মেহেরবানী করে কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে ব্যাখ্যা করুন।

((মাসিক মদিনার) উত্তর নিম্নরূপঃ

“যে কেউ এরূপ দাবী উপর বিশ্বাস রাখে সে হয় অতিমাত্রায় মূর্খ, পাগল অথবা কোন বিভ্রান্ত দলের সদস্য। প্রকৃত পক্ষে আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা) নিরাকার এবং সর্বস্থানের সবকিছুতে বিরাজমানে এবং তাঁর অসীম ক্ষমতা সবকিছুকে পরিবেষ্টন করে রয়েছে। তাছাড়া, কুরআনের বহু আয়াত এবং তার সাথে বহু হাদীসে আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা) সম্পর্কে অনুরূপ বর্ণনা করা হয়েছে। অতএব, আপনার এ ধরণের বাজে কথার উপর মনোযোগ দেওয়া উচিত নয়, যাতে আপনার ঈমান কলুষিত হতে না পারে।” এখানেই প্রত্যুত্তরের সমাপ্তি।))

এই উত্তর ভিত্তিহীন এবং কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা’ এবং সঠিক আক্বিদা বিরোধী। পক্ষান্তরে এটা হুলুলের (একটি সূফি শব্দ যার মানে অনুপ্রবেশকারী)আকিদা নির্দেশ করে যার অর্থ হলো আল্লাহ সকল স্থানে বাস করেন এমনি ময়লাযুক্ত স্থানেও (আল্লাহ এ ধরনের বিষয় থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র)।

তারা এই জবাবে আল্লার কিছু সিফাতকে অস্বীকার করেছে যেগুলো সম্পর্কে আল্লাহ স্বয়ং বর্ণনা করেছেন, আল্লাহর রাসূল তাঁর সম্পর্কে বলেছেন, যেমন – আল্লাহ তাঁর সৃষ্টি থেকে ঊর্ধ্বে, আরশের উপর সমুন্নত হওয়া তাঁর সৃষ্টি থেকে পৃথক হওয়া, সকল দিক দিয়ে তাঁর সৃষ্টি থেকে পৃথক হওয়া।

তারা তাদের এই উত্তরে আল্লাহর হাত, পা, মুখমণ্ডল, দুই হাত, দুই চোখ সহ তাঁর সত্ত্বা ও ক্রিয়া সম্পর্কিত গুনাবলী যা কুরআন ও সুন্নাহ দ্বারা প্রমানিত হয়েছে তা অস্বীকার করেছে।

আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা) বলেন: তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।[সুরা আল-বাকারা, ২৫৫ আয়াতের অংশ]

তিনি (সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা) বলেন: “তিনি (সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা) বলেন: তোমরা কি এ থেকে নির্ভয় হয়েছ যে, যিনি আসমানে রয়েছেন তিনি তোমাদেরকে সহ যমীনকে ধ্বসিয়ে দেবেন না? অতঃপর তা হঠাৎ করেই থর থর করে কাঁপতে থাকবে?” [সূরা আল-মূলক, আয়াত ১৬]

অথবা তোমরা কি এ থেকে নির্ভয় হয়েছ যে, আসমানে যিনি রয়েছেন তিনি তোমাদের উপর পাথরবর্ষী ঝড় পাঠাবেন না? তখন তোমরা জানতে পারবে কিরূপ ছিল আমার সতর্কবাণী! [সূরা আল-মূলক, আয়াত ১৭]

রাসূলুল্লাহ (সাHappy বলেছেন: তোমরা কি আমার উপর আস্থা রাখ না অথচ আমি আসমানের উপর যিনি আছেন তাঁর আস্থাভাজন, সকাল-বিকাল আমার কাছে আসমানের সংবাদ আসে। [সহীহ মুসলিম, হা: ২৩২৩ (ই.ফা), সহীহ বুখারী, হা: ৪৩৫১]

তাছাড়া আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা) বলেছেনঃ দয়াময় (আল্লাহ) আরশের উপর সমুন্নত (ইসতাওয়া) হয়েছেন (তাঁর মর্যাদানুসারে যেভাবে মানায়)। [সূরা ত্ব-হা; আয়াত ৫], একই সত্য ব্যাপারটি কুরআনের সাত জায়গায় জোড়ালেভাবে বর্ণিত হয়েছে।

উপরুন্তু, তিনি (সুবহানাহু ওয়া তা‘য়ালা) বলেনঃ “অবিনশ্বর শুধু তোমার রবের মুখমন্ডল যিনি মহিমাময়, মহানুভব ” [সূরা আর রহমান; আয়াত নং ২৭]

তিনি (সুবহানাহু ওয়া তা‘য়ালা) বলেনঃ “তাঁর চেহারা (সত্তা) ছাড়া সব কিছুই ধ্বংসশীল” [সুরা আল-কাসাস; আয়াত নং ৮৮]

তিনি (সুবহানাহু ওয়া তা‘য়ালা) বলেনঃ “‘হে ইবলীস (শয়তান)! আমার দু’হাতে আমি যাকে সৃষ্টি করেছি তার প্রতি সিজদাবনত হতে কিসে তোমাকে বাধা দিল ” [সূরা সোয়াদ, আয়াত নং ৭৫]

তিনি (সুবহানাহু ওয়া তা‘য়ালা) বলেনঃ বরং তাঁর (আল্লাহর) দু’হাত প্রসারিত। [সুরা আল মায়িদাহ; আয়াত ৬৪]

একই প্রসঙ্গে, নাবী (সাHappy বলেন: “মানুষকে (জাহান্নামের)আগুনে নিক্ষিপ্ত করা হবে এবং এটি বলতে থাকবে, ‘আরো আছে কি?’ যতক্ষণ পর্যন্ত না বিশ্ব-পালনকর্তা তাঁর পা এর উপর রাখবেন।” [আহমাদ, আনাস রা: থেকে বর্ণিত, ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা ১৩৪, ১৪১, ২২৯, ২৩০, ২৩৪, ও ২৭৯; আল-বুখারী ৬/৪৭, ৭/২২৫ ও ৮/১৬৭; মুসলিম, ৪/২১৮৭ হা: ২৮৪৮; তিরমিযী ৫/৩৯৫, হা: ৩২৭২; নাসায়ী, সুনান আল কুবরা, ৭/১৪৯,১৫১ হা: ৭৬৭২ ও হা: ৭৬৭৮]

হাদীসের অন্য একটি বর্ণনানুসারে, তিনি (সাHappy বলেনঃ “ …. তাঁর (আল্লাহর) পা এর (জাহান্নামের) উপর রাখবেন, যার ফলে এর বিভিন্ন পার্শ্ব একে অপরের কাছাকাছি হয়ে যাবে, এবং তখন এটি বলবে, যথেষ্ট হয়েছে! যথেষ্ট হয়েছে!”

একই মর্মে আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা) মুসা (আHappy কে বলেছেনঃ “….যাতে তুমি আমার চোখের সামনে প্রতিপালিত হও।” [সূরা ত্ব-হা; আয়াত নং ৩৯]

আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা) বলেনঃ “যা আমার চাক্ষুস তত্ত্বাবধানে চলত।” [সূরা আল কামার; আয়াত ১৪]

নবী (সা) বলেন: “তোমার পালনকর্তা একচক্ষু বিশিষ্ট নন.” [আনাস (রাHappy থেকে বর্ণিত হাদীস। আহমাদ, ৩/১০৩,১৭৩, ২২৮, ২৩৩, ২৭৬, ও ২৯০; আল-বুখারী, ৮/১০৩, ১৭২; মুসলিম হা: ২৯৩৩; আবূ দাউদ ৪/৪৯৪, হা: ৪৩১৬]

একই প্রসঙ্গে আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা) বলেনঃ “(স্মরণ কর) সে দিন (অর্থাৎ পুণরুত্থান দিবসে) পায়ের গোছা উন্মোচন করা হবে। আর তাদেরকে সিজদা করার জন্য আহবান জানানো হবে, কিন্তু তারা সক্ষম হবে না।” [সূরা আল-ক্বালাম, আয়াত নং ৪২]

নাবী (সাHappy এই আয়াতের অর্থ ব্যাখ্যা করে বলেন যে কিয়ামতের দিন আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা) পায়ের গোছা উন্মূক্ত করবেন, যার ফলে প্রত্যেক ঈমানদার ব্যক্তি তাঁর সামনে নিষ্ঠার সাথে সিজদা পড়ে যাবে, আর দুনিয়াতে যারা লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে খ্যাতি অর্জনের জন্য সিজদা করতো তারা সেভাবেই থেকে যাবে। এই লোকেরা সিজদা করার চেষ্টা করবে কিন্তু তারা তা করতে সক্ষম হবে না।

একই প্রসঙ্গে, নবী (সাHappy বলেনঃ “আমি আমার পালনকর্তাকে (সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা) উৎকৃষ্ট আকৃতিতে (সুরতে) দেখেছি (স্বপ্নে)।” [হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ইবনে আব্বাস (রাHappy। ইবনে আবূ আসীম, আস-সুন্নাহ, ১/৩২৭, হা: ৪৭৮ (আল-জাওয়াব্‌রাহ কর্তৃক তাহক্বীককৃত); ইবনে আব্বাস রা: কর্তৃক বর্ণিত একটা লম্বা হাদীস: আহমাদ, ১/৩৬৮; তিরমিযী, ৫/৩৬৬-৩৬৭, হা: ৩২৩৩, ৩২৩৪; ইবনে খুযাইমাহ, আত-তাওহীদ, ২/৫৩৮-৫৩৯, হা: ৩১৯; আল-আজুরী, আশ-শারী’য়াহ, ৩/১৫৪৭-১৫৪৯, হা: ১০৩৯, ১০৪০ (তাহক্বীক আদ-দিমিযী); আবূ ইয়া’লা, ৪/৪৭৫, হা: ২৬০৮; এবং আবদ্‌ ইবনে হামিদ, ১/৫৭৭, নং ৬৮১]

তিনি (সাHappy আরো বলেন, “আল্লাহ আদমকে তাঁর দয়াময়ের সূরতে (আকারে) সৃষ্টি করেছেন।” [আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা: কর্তৃক হাদীসটি বর্ণিত: আব্দুল্লাহ ইবনে আহমাদ, আস-সূন্নাহ, ১/২৬৮, হা: ৪৯৮; ইবনে আবূ অসীম, আস-সুন্নাহ, ১/৩৬২, হা: ৫২৯ (তাহক্বীক্ব: আয-যাওয়াবরাহ); ইবনে খুযাইমাহ, আত-তাওহীদ, ১/৮৫, হা: ৪১; আদ-দারাকুতনী, আস-সিফাত, পৃ: ৩৭, হা: ৪৮ (তাহক্বীক্ব: আল-ঘুনায়মান); আল-আজুরী, আশ-শারী’য়াহ, ৩/১১৫২ নং ৭২৫; আত-তাবারানী, আল-কাবীর, ১২/৩২৯, হা: ১৩৫৮০; বায়হাকী, আসমা ওয়াস-সিফাত, ২/৬৪, নং ৬৪০, (তাহক্বীক্ব আল-হাশিদী)]

এই হল আল্লাহর গুনাবলী সম্পর্কে কুরআন ও হাদীসের অসংখ্য সুস্পষ্ট বাণী (nusus) থেকে তুলে ধরা কিছু বর্ণনা। আহলুস-সুন্নাহ ওয়াল জামা’যাহ (সুন্নাহ ও মুসলিম মূলধারার প্রতি অনুগত)এই গুনাবলী/সিফাতসমূহ বিশ্বাস করে এবং কোন রকম তাশবীহ (তুলনাকরণ) বা তামশীল (আল্লাহর গুণাবলীকে তাঁর সৃষ্টির গুনাবলীর সাথে সাদৃশ্য দেওয়া) ছাড়াই সেগুলোর ইঙ্গিত নিশ্চিত করে।

আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা) বলেন: “কোন কিছুই তাঁর মত নয়, তিনি সব শোনেন, সব দেখেন।” [সূরা আশ-শুরা, আয়াত নং ১১]

সৌদি আরবের ফাতাওয়া ও গবেষণা বিভাগের স্থায়ী কমিটি, এ সত্য ব্যাপারটি প্রকাশ করার পর মনে করে যে, ঢাকা থেকে প্রকাশিত ‘মাসিক মদীনা’-র প্রধান সম্পাদক মহীউদ্দীন খানের জন্য এটা অবশ্য কর্তব্য যে, তারা তাদের পত্রিকায় এই ফাতাওয়াটি প্রকাশ করবেন, ঐ ব্যক্তি যাকে ফাতাওয়া দেওয়া হয়েছিলো তাকে তার অভিযোগ প্রত্যাহার করতে অনুরোধ জানাবেন এবং একই সাথে তাদের দেওয়া ফাতাওয়া প্রত্যাহারের ঘোষণা দিবেন।

বস্তুত, সত্যকে স্বীকার করে নেয়া পূণ্যের কাজ, যা মু’মিনদের লক্ষ্য। সত্যকে স্বীকারকরণ মানুষকে সত্যের দিকে পরিচালিত করে এবং বাতিল থেকে তাদের বিরত রাখে।

আবূ হুরাইরাহ (রাHappy থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাHappy বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সঠিক পথের দিকে ডাকে কিয়ামাত পর্যন্ত তার জন্য সে পথের অনুসারীদের প্রতিদানের সমান প্রতিদান রয়েছে। এতে তাদের প্রতিদান হতে সামান্য ঘাটতি হবে না। আর যে লোক বিভ্রান্তির দিকে ডাকে তার উপর সে রাস্তার অনুসারীদের পাপের অনুরূপ পাপ বর্তাবে। এতে তাদের পাপরাশি সামান্য হালকা হবে না। [মুসলিম, সহীহ, ইলম পর্ব, হা: ২৬৭৪; তিরমিযী, সুনান, পর্ব-ইলম, হা: ২৬৭৪; আবূ দাউদ, সুনান, হা: ৪৬০৯; ইবনে মাজাহ, হা: ২০৬; মুসনাদে আহমাদ, ২/৩৯৭; সুনান আদ-দারামী, হা: ৫১৩]

আল্লাহ আমাদের সাফল্য দান করুন। আমাদের নাবী মুহাম্মাদ (সাHappy, তাঁর পরিবার ও সাহাবাদের উপর শান্তি ও কল্যাণ বর্ষিত হোক।

স্থায়ী গবেষণা ও ফাতাওয়া কমিটি, সৌদি আরব।

মেম্বারঃ বকর আবূ যাইদ, আব্দুল্লাহ ইবনে ঘুদাইয়ান

চেয়ারম্যানঃ আবদুল আযীয ইবনে আবদুল্লাহ আল আলে শাইখ।

বিষয়: বিবিধ

১৪৯৭ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

367060
২৫ এপ্রিল ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:২১
জ্ঞানের কথা লিখেছেন : মাওলানা মহিউদ্দিন খান আমার দাদা পীরের লোক। দেওবান্দি।
১৮ মে ২০১৬ দুপুর ০২:১৮
306656
মুসলমান লিখেছেন : পীর সাবের লেখক বলেই এই অবস্থা! তার উপর তো দেওবন্দী।
367086
২৫ এপ্রিল ২০১৬ রাত ০৮:৪৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আগা মাথা কিছু বুঝলাম না!
১৮ মে ২০১৬ দুপুর ০২:১৯
306657
মুসলমান লিখেছেন : বার বার পড়তে হবে। বুঝতে হলে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File