উন্নয়নের প্রধান অন্তরায় জঙ্গিবাদের অশুভ ছায়া

লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ৩০ জুলাই, ২০১৭, ০৪:৩৬:৩০ বিকাল



যে কোনো দেশের উন্নয়নের জন্যই স্থিতিশীলতা একান্ত জরুরী। সম্প্রতি দেশের স্থিতিশীল পরিবেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে বিশেষভাবে তৎপর হয়ে উঠেছে এক শ্রেণির লোক। তাদের অপ-তৎপরতার ফসল জঙ্গিবাদ হয়ে উঠেছে দেশের চলমান উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার পথে প্রধান অন্তরায়। তাদের এই অপ-তৎপরতা তথা জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড দমনে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অত্যন্ত তৎপর, যা অস্বীকারের কোনো সুযোগ নেই। এদের নিয়ন্ত্রনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাফল্য বর্তমানে এক দৃশ্যমান বাস্তবতা। তবে নেপথ্যে থেকে অর্থের জোগান দিয়ে যারা এ দেশে ধ্বংসাত্মক জঙ্গি কর্মকান্ডকে এখনও জিইয়ে রাখছে, তাদেরকে সম্পূর্ণভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ঐ কুচক্রিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ছত্রচ্ছায়ায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠা জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো পুরোপুরি নির্মূল করা আজও সম্ভব হয়নি। কয়েকটি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হলেও সার্বিক বিচারে দেশে জঙ্গি তৎপরতা থেমে নেই। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, বাংলাদেশের অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি ও কিছু মুখোশধারী কর্মকর্তা জঙ্গিবাদে অর্থায়ন করে চলেছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে এ বিষয়ে কোনো দুর্বলতা নেই, তা জোর দিয়ে বলা যাবে না। তবে সব দুর্বলতা স্বীকার করে নিয়ে প্রতিরোধ কৌশল জোরদার করাটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। বিগত সরকারের অপশাসনের সুযোগে এ দেশে স্বাধীনতাবিরোধী বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনগুলো আর্থিকভাবেই শুধু নিজেদের সুসংগঠিত করেনি, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন পর্যায়েও ঢুকে পড়েছে। মুক্তিযুদ্ধ, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, সব ধর্ম ও মতের মানুষের সহাবস্থানের আদর্শে যাদের বিশ্বাস নেই, তারা যেকোনো মূল্যে গণতান্ত্রিক কাঠামোগুলো তছনছ করে দিতে চাইবেই। অর্থ ঢাললে কিছু মানুষকে সব সময়ই বিভ্রান্ত করা যায়, জঙ্গিবাদ নিয়ে এ দেশেও তাই হচ্ছে। কাউকে সস্তা আবেগ উসকে দিয়ে, কাউকে অর্থের লোভ দেখিয়ে অন্ধকার জগতের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। তাই দেশে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বন্ধ করতে চাইলে অর্থের সরবরাহ পথগুলোকেও গুঁড়িয়ে দিতে হবে। অনেক মুখোশধারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ব্যবসাবাণিজ্যের নামে আমদানি-রপ্তানির বিষয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আইনি প্রক্রিয়া মেনে দেশ থেকে অর্থ পাচার করছে। পাচার রোধে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থাকলেও আন্তঃসমন্বয় কম। পাচার রোধে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রচলিত আইন যথেষ্ট হলেও সংস্থাটি আইন প্রয়োগে খুব সক্ষম নয়। আমাদের আইনি বা প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো যথেষ্ট শক্তিশালী; কিন্তু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা যাচ্ছে না এবং অপরাধীরা এ সুযোগটি নিচ্ছে। জঙ্গিবাদ নির্মূলের স্বার্থে এসব দুর্বলতা অবশ্যই কাটাতে হবে। কোনো কোনো মহল রাজনৈতিক বা তাত্ত্বিক ফায়দা লোটার স্বার্থে কাজ করছে তা সবারই জানা এবং তাদের অস্তিত্ব হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। সুতরাং জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। তাদেরকে যথাসময়ে রুখতে না পারলে তারা যে কোন সময়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। তাই আসুন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এখনই এদেরকে রুখে দাঁড়াই – তাহলেই সম্ভব হবে সুখী, সমৃদ্ধশালী দেশ গড়া।

বিষয়: বিবিধ

৪৬৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File