বাংলাদেশে বিনিয়োগে ঝুঁকছেন বিদেশীরা

লিখেছেন লিখেছেন ইগলের চোখ ০২ মে, ২০১৭, ০৭:৫২:৩৫ সন্ধ্যা

২০১৬ সালে দেশে সরাসরি নিট বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে ২৩৩ কোটি ২৭ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় ১৮ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা। ২০১৫ সালে নিট এফডিআই এসেছিল ২২৩ কোটি ৫৩ লাখ ডলার। ফলে গত বছরে নিট এফডিআই বেড়েছে প্রায় ৯ কোটি ৭৩ লাখ ডলার বা ৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ। বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে বর্তমানে অন্তত ১৭টি খাতে কর অবকাশ সুবিধা পাচ্ছেন বিদেশীরা। তাদের মুনাফা প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রেও বিধি-বিধান শিথিল করা হয়েছে। মুনাফাসহ শতভাগ মূলধন ফেরত নেয়ার পাশাপাশি নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠায় যন্ত্রপাতির অবচয় সুবিধা, শুল্কমুক্ত যন্ত্রাংশ আমদানি এবং রফতানি উন্নয়ন তহবিল থেকে কম সুদে ঋণ নেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন বিদেশীরা। পাশাপাশি রয়েছে সস্তা শ্রমের সহজলভ্যতা। এসব সুযোগ-সুবিধার জন্যই বিদেশীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে ঝুঁকছেন। বিশেষ করে তারা টেলিকমিউনিকেশন, টেক্সটাইল, জ্বালানি, গ্যাস ও বিদ্যুত এবং ব্যাংক-বীমায় বেশি বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন। গত বছর দেশে যে পরিমাণ বিদেশী বিনিয়োগ এসেছে, তার অর্ধেকেরও বেশি হয়েছে বহুজাতিক কোম্পানির পুনর্বিনিয়োগ হিসেবে। এর পরিমাণ ১২১ কোটি ৫৩ লাখ ডলার। ২০১৫ সালে এর পরিমাণ ছিল ১১৪ কোটি ৪৭ লাখ ডলার। এ সময় একদম নতুন বিনিয়োগ এসেছে (ইক্যুইটি মূলধন) ৯১ কোটি ১৩ লাখ ডলার। ২০১৫ সালে এর পরিমাণ ছিল ৬৯ কোটি ৬৬ লাখ ডলার। এছাড়া গত বছর আন্তঃকোম্পানি ঋণ হিসেবে বিদেশী বিনিয়োগ এসেছে ২০ কোটি ৫৯ লাখ ডলার। ২০১৫ সালে এর পরিমাণ ছিল ৩৯ কোটি ৩৯ লাখ ডলার। ২০১৬ সালেও রফতানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) চেয়ে অ-রফতানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলে বেশি বিদেশী বিনিয়োগ এসেছে। এ সময় ইপিজেড এলাকায় বিনিয়োগ এসেছে ৪১ কোটি ৬৭ লাখ ডলার। ২০১৫ সালে যার পরিমাণ ছিল ৪০ কোটি ৬৬ লাখ ডলার। অন্যদিকে ২০১৬ সালে নন-ইপিজেড এলাকায় বিদেশী বিনিয়োগ এসেছে ১৯১ কোটি ৫৯ লাখ ডলার। ২০১৪ সালে যার পরিমাণ ছিল ১৮২ কোটি ৮৭ লাখ ডলার। গত বছর সবচেয়ে বেশি বিদেশী বিনিয়োগ এসেছে টেলিকমিউনিকেশন খাতে। এর পরিমাণ ছিল ৫৭ কোটি ২৭ লাখ ডলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৬ কোটি ৪৪ লাখ ডলার এসেছে টেক্সটাইল খাতে। তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৬ কোটি ৭৯ লাখ ডলার এসেছে বিদ্যুত খাতে। এছাড়া গ্যাস ও জ্বালানি খাতে ১৬ কোটি ৬৩ লাখ, ব্যাংকিং খাতে ১৬ কোটি ৬০ লাখ, ট্রেডিং খাতে ৮ কোটি ৮৩ লাখ, খাদ্য খাতে ৮ কোটি ৬৫ লাখ, সিমেন্ট খাতে ৪ কোটি ৩৯ লাখ, কেমিক্যাল ও ওষুধ খাতে ৪ কোটি ৩৭ লাখ, কৃষি ও মৎস্য খাতে ৪ কোটি ৩১ লাখ, বীমা খাতে ২ কোটি ৬২ লাখ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য খাতে ২ কোটি ৫২ লাখ, তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে ২ কোটি ২০ লাখ, নির্মাণ খাতে ৫৫ লাখ, সার খাতে ৫৩ লাখ এবং অন্যান্য খাতে ৪০ কোটি ৫০ লাখ ডলারের বিদেশী বিনিয়োগ এসেছে। অন্যদিকে গত বছর সর্বোচ্চ বিদেশী বিনিয়োগ এসেছে সিঙ্গাপুর থেকে। এর পরিমাণ ৬৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৩ কোটি ডলার এসেছে যুক্তরাজ্য থেকে। আর তৃতীয় সর্বোচ্চ ২১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। এছাড়া নরওয়ে থেকে ১৬ কোটি, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ১৫ কোটি ১৩ লাখ, হংকং থেকে ৯ কোটি ৮৪ লাখ, নেদারল্যান্ডস থেকে ৮ কোটি ৮৮ লাখ, ভারত থেকে ৭ কোটি ৯২ লাখ, চীন থেকে ৬ কোটি ১৪ লাখ, জাপান থেকে ৪ কোটি ৮২ লাখ, তাইওয়ান থেকে ৪ কোটি ৫৮ লাখ, মালটা থেকে ৪ কোটি ৪৭ লাখ, ব্রিটিশ ভার্জিন দীপপুঞ্জ থেকে ৪ কোটি ১৯ লাখ, মালয়েশিয়া থেকে ৩ কোটি ৮৬ লাখ, থাইল্যান্ড থেকে ৩ কোটি ৫১ লাখ, মরিশাস থেকে ৩ কোটি ২৩ লাখ, সুইজারল্যান্ড থেকে ২ কোটি ৬৩ লাখ, জার্মানি থেকে ২ কোটি ১৮ লাখ, সৌদি আরব থেকে ১ কোটি ৮২ লাখ, ফ্রান্স থেকে ১ কোটি ৩৭ লাখ এবং অন্যান্য দেশ থেকে ১০ কোটি ৫০ লাখ ডলারের বিদেশী বিনিয়োগ এসেছে।

বিষয়: বিবিধ

৬৭৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File