১৪ ফেব্রুয়ারি (valentine's day) ও আমাদের সংস্কৃতি

লিখেছেন লিখেছেন সামসুল আলম দোয়েল ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ০৬:২৯:০৩ সন্ধ্যা

আসসালামু আলাইকুম! প্রিয় অভিবাবকেরা। আপনারা যারা মডারেট মুসলিম হয়ে গর্ব করেন, আধুনিকতার নামে বেহায়াপনা আর প্রগতির নামে ভিনদেশী সংস্কৃতি ধারণ করতে চান তাদের উদ্দেশ্যে বলছি-

১৪ ফেব্রুয়ারির কোনো উত্সব বা সংস্কৃতি (ভ‌্যালেন্টাইন দিবস valentine's day) আমাদের সংস্কৃতি নয়।এটা কোথা থেকে কীভাবে আমদানী করা হলো-তা ইন্টারনেট নিয়ে একটু ঘাঁটাঘাটি করলে কিংবা পাশের জনকে জিগ্যেস করলেই জানতে পারবে।

আপনি যদি একজন মুসলিম হতে চান, পরকালে নাযাতের আশা করেন তাহলে মনে রাখবেন, আপনাকে ইসলামে পুরোপুরি প্রবেশ করতে হবে। ইসলামী সংস্কৃতিকে অবজ্ঞা করে, ইসলামী কৃষ্টিকে হেয় করে আপনি মুসলমান থাকতে পারেন না। ইসলাম আপনাকে আপনার দায়িত্ব সম্পর্কে কী বলেছে তা কি একটু ভেবে দেখেছেন?

ইসলাম বলে অশ্লীলতা, বেহায়াপণা থেকে বেঁচে থাকতে। ইসলাম বলে পর্দা রক্ষা করে চলতে। অশ্লীলতার প্রসারের ব্যাপারে আল্লাহর ভয়ংকর শাস্তির কথা শুনুনঃ

“যারা চায় যে, মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রচার ঘটুক তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও আখিরাতে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।আর আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না।" (সুরা২৪ নুরঃ ১৯)

মনে রাখবেন,আপনার সন্তানদের দায়িত্ব আপনার উপর। আপনাকে আপনার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। আল্লাহ বলেছেনঃ

“তোমরা নিজেরা জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা কর এবং তোমাদের পরিবার পরিজনকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা কর। যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর,যার উপর নিয়োজিত রয়েছেন কঠোর হৃদয় সম্পন্ন ফেরেশতাগন, তারা আল্লাহ যা নির্দেশ দেন তা বাস্তবায়নে অবাধ্য হন না।আর তাদের যা নির্দেশ দেয়া হয় তা-ই তামিল হয়।” (সুরা ৬৬ আত- তাহরীমঃ ০৬)

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

“তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং তোমাদের প্রত্যেক কেই তাঁর দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে, রাষ্ট্র নেতা তার প্রজাদের সম্পর্কে, একজন পুরুষলোককে তার পরিবারের ব্যাপারে,একজন মহিলাকে তার স্বামীর সার্বিক ব্যাপারে, একজন পরিচালক তার মালিকের সম্পদের রক্ষক,আর তাকে সেটার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হবে।“ (বুখারি-৮৯৩,মুসলিম-১৮২৯)

সুতরাং আপনার সন্তান কী করে? কী পড়ে? কাদের সাথে মেশে? কোথায় যায়? একটু কি যাচাই করে দেখেছেন?

বোরকা পড়া মানেই পর্দা রক্ষা করা নয়; আপনার মেয়েটি কী করছি, কোথায় এবং কার সাথে মিশছে; একটু খোঁজ নিন। লাগামহীন ভাবে তাদের ছেড়ে দিবেন না। হয়তো এমন এক সময় আসবে যখন এই সামান্য দায়িত্ব পালনের অবহেলায় দুনিয়াতেই আপনি ও আপনার পরিবার লাঞ্ছিত হবে। সেদিন সে বা আপনি আত্মহত্যা করে হয়তো পালানোর চেষ্টা করবেন; কিন্তু আত্মহত্যা করে কি মুক্তি মিলবে? সুতরাং এখনই সাবধান হয়ে যান। মনে রাখবেন ইসলামী সংস্কৃতিই সেরা সংস্কৃতি, ইসলামী বিধানই শ্রেষ্ঠ বিধান। ভিনসংস্কৃতি বাইরে থেকে খুবই চাকচিক্যময় মনে হলেও এর ভিতরে যে কী নোংরামী আর অশান্তি রয়েছে তা শুধুু ভুক্তভোগী আর ঐসব দেশের লোকেরাই জানে।

বাইরে থেকে ইউরোপ বা আমেরিকার নোংরামী আর উদারমনার নামে পশুত্ব আর পাগলামীকে মনে হবে, খুবই প্রগতি! অথচ এদের মনে কী পরিমাণ যে হতাশা আর অবসাদ, অশান্তি বিরাজ করছে তা যারা দেখেছে তারাই জানেন। এদের বেশিরভাগই মানসিক বিকলাঙ্গ!

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী:

“যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাথে সামঞ্জস্য রাখল সে তাদের অন্তর্ভুক্ত।”-[আবুদাউদ: (৩৫১৪)]

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বারংবার বলেছেনঃ

“তিন ব্যক্তির জন্য আল্লাহ জান্নাত হারাম করেছেন,তারা হল মাদকাসক্ত, পিতামাতার অবাধ্য ও দাইউস (যে সব নারী বেহায়াপণা ছড়ায়, নাচ গান করে বেড়ায়), যে তার পরিবারে ব্যভিচারকে প্রশ্রয় দেয়।“ (মুসনাদে আহমাদঃ ২/৬৯)

কোনো মুসলমান ভ্যালেন্টাইন দিবস (বিশ্বভালোবাসা দিবস নামে যেটা আমাদের দেশে পরিচিত; কিছু মিডিয়া যেটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করছে শুধু ব্যবসায়িক কারণে।) পালন করতে পারে না বা এই নামে কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারে না। প্রকাশ্যে অশ্লীলতা আর পশুত্বের ধারা ছড়িয়ে দেবার যারা ঘোষণা দেয় তাদের থেকে নিজে বাঁচুন এবং আপনার পরিবার-সন্তানদের রক্ষা করুন। আল্লাহ আমাদের বুঝার তাওফিক দিন। আমীন

বিষয়: বিবিধ

১০৬৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File