ফাঁসি ও শাহাদাত, 'কন্ঠ' বনাম কান্না

লিখেছেন লিখেছেন রাহমান বিপ্লব ২২ নভেম্বর, ২০১৫, ০৯:৪০:২৪ সকাল

গতকালের ঘটনায় অনেক মানুষ আঘাত পেয়েছেন। যারা কষ্ট অনুভব করেছেন তাদের জন্য সমবেদনা। এরা আঘাতপ্রাপ্ত বলে মজলুম। এরা একটু শান্তনা আশা করে। এদের তরে শান্তনা দেয়াই আমাদের কর্তব্য।

কি্ন্তু আর একদল মানুষ শুধু কষ্টটাই অনুভব করেননি। তারা সেই আঘাতের সূত্র নিয়ে চুপটি করে বসেছেন। আঘাতের প্রকৃতি ও উৎসের সন্ধান করেছেন। ফলে তারা ঘটনার দিনে সীমাবদ্ধ নন। ফিরে গেছেন একেবারে গোঁড়ার অতীতে। গতকাল থেকে ক্রমান্বয়ে শুরুর দিনে। তারপর সার্বিক ঘটনাকে মনের পরম্পরা করে বেঁধে ফেলেছেন অতীত থেকে বর্তমান পর্যন্ত।

যারা আহত হয়েছেন তারা কান্না করেছেন, একে অন্যকে জড়িয়ে ধরেছেন, অশ্রু ঝরিয়েছেন, আবেগাপ্লুত হয়েছেন, তারপর একসময় নিঃসঙ্গ বিশ্ময়ে তাকিয়ে থেকেছেন শূণ্যের দিকে, এরপর চোখের পানি মুছে নিজের স্বাভাবিক কাজে ফিরেছেন। এরা ভারাক্রান্ত থাকবেন তিনদিন পর্যন্ত। কেউ সপ্তাহব্যাপী, অনেকেই মাস পার করবেন। দোয়া দরুদ, পড়ে আল্লাহর কাছে কান্না করবেন, শহীদদের সাথে তার স্মৃতী মিলিয়ে দেখবেন।

বছর ঘুরে এলে স্মরণ করবেন বিগত বছরের 'একটি শোকের' দিনকে। এভাবে বছর পরম্পরায় তার মনের আঘাত লঘু হতে থাকবে, একসময় সে আঘাত উপশমের সাথে সাথে মানসপট থেকে হারিয়ে যাবে শহীদ মুজাহিদ, শহীদ সালাহউদ্দীন চৌধুরীরা!

-এই মানুষ গুলোই আঘাত পেয়েছেন। এই মানুষ গুলো শত্রুর আঘাতে জর্জরিত হয়েছেন। এরাই শত্রুর আঘাত নিজেদের ভেতর আটকে নিয়ে শত্রুর কার্যসীদ্ধির কারন হয়েছেন। এদের কথা ভেবে শত্রুরা কাল মিষ্টি খেয়েছে! এই মানুষ গুলো কষ্ট পেয়েছেন, আহত হয়েছেন বলে, এদের প্রতি সমবেদনা।

কিন্তু যারা শত্রুর কার্যসিদ্ধির কারন হননি, যারা শত্রুর জন্য বুমেরাং হলেন তাদের জন্যই আমাদের সবুজ পৃথিবী সবুজ থাকবে। স্বাভাবিক কর্ম পরিবেশ যথারুপে বিদ্যমান থাকবে। এই মানুষ গুলো আহত নন। কারন এই মানুষ গুলো মুজাহিদ বা সালাহউদ্দীনের উৎসে পৌছে গিয়েছেন। এক উৎসপ্রাপ্তরা একই রুপে দৃঢ় পায়ে সামনে এগিয়ে যান। ফাঁসি, মৃত্যু তাদের আহত করেনা। ভীত করেনা, আবেগাপ্লুত করেনা, আঘাত করতে পারেনা। এরা নাটকময় পৃথিবীতে আবেগীদের চোখ মুছে দেয়ার ক্ষমতা যেমন রাখেন। শত্রুর জন্য যুদ্ধের ভয়াবহতাও বয়ে আনতে পারেন।

খ,

গতকালকের প্রাপ্তি কী?

এ প্রশ্নের জবাব 'শোক' নয়!

এ প্রশ্নের জবাব ওইসব মানুষকে ঘীরে জমাট বাঁধবে না যারা শত্রুর আঘাত ধারন করেন। যারা শহীদ মুজাহিদ কিংবা শহীদ সালাহউদ্দীনকে ধারন করতে স্বক্ষম হয়েছেন তারাই কালকের প্রাপ্তি।

তাই একই সাথে, শোকাহতকে সমবেদনা জ্ঞাপন আর শহীদের ধারনকারীদের প্রতি অকুন্ঠ শ্রদ্ধা রাখার পাশাপাশি, আমাদের ব্যাক্তিগত পর্যায়ে এসে ভাবতে হবে-

'আমি কাদের দলে পড়লাম'? এখনও শপথের সময়টি পার হতে পারেনি।

বিষয়: বিবিধ

১৪৪২ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

350784
২২ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ১০:১১
নকীব কম্পিউটার লিখেছেন : বিধর্মী/নাস্তিকরা খুশি হয়েছে।
২২ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ১০:৫৭
291157
অপি বাইদান লিখেছেন : ২১ শে আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলা চালিয়ে নেয়ার জন্য আল্লার পেরারা বান্দা আলী আহসান মুজাহিদের হটাৎ আগ্রহের কারন কি? আরো কিছু দিন বেঁচে থাকার মতলব না তো??
২৩ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:২২
291362
নকীব কম্পিউটার লিখেছেন : Waiting Waiting Waiting
350811
২২ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ১১:৪২
আব্দুল মান্নান মুন্সী লিখেছেন : যারা শহীদ মুজাহিদ কিংবা শহীদ সালাহউদ্দীনকে ধারন করতে স্বক্ষম হয়েছেন তারাই কালকের প্রাপ্তি। 'শোক' নয়! অনেক ধন্যবাদ
350824
২২ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:১৩
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : শোক গ্রস্ত নই। কিন্তু ্ই অকৃতজ্ঞ জাতির জন্য চিন্তিত।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File