ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে এক শিক্ষার্থীকে শ্বাসরোধের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের দুই কর্মীর বিরুদ্ধে।
এ ঘটনার বিচারের দাবিতে গত শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী আবু জাহেদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত রিহাব মাহমুদ ও রতন রায় উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাতের অনুসারী। এই অভিযোগ অস্বীকার করে এটিকে মিথ্যা ও অতিরঞ্জিত দাবি করে পাল্টা অভিযোগ দিয়েছে অভিযুক্তরা।
লিখিত অভিযোগে আবু জাহেদ জানান, গত বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টার বাসে ক্যাম্পাস থেকে কুষ্টিয়া শহরে যাওয়ার জন্য ভুক্তভোগীর জন্য দু’টি সিট রাখেন তার বন্ধু। পরে এর একটিতে নিজে বসে এবং পাশের সিটে অভিযুক্ত রতন রায়কে বসতে দেন। পরে রতন তার কিছু বন্ধু-বান্ধবী নিয়ে এসে ভুক্তভোগীকে পাশের সিটে বসতে বলে। এতে ভুক্তভোগী রাজি না হওয়ায় উভয়ের মধ্যে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে ভুক্তভোগীর গলা টিপে ধরে রতন। এসময় তার সঙ্গে থাকা অপর বন্ধু রিহাব মাহমুদ চোখে আঙ্গুল ঢুকিয়ে দেয়। পরে বাসের সবাই চিল্লাচিল্লি শুরু করে ভুক্তভোগীকে ছাড়িয়ে নেয়।
এদিকে এ ঘটনায় পাল্টা অভিযোগ করেন অভিযুক্ত রতন রায়, রেদওয়ান মাহমুদ ও তাদের সঙ্গে থাকা দুই মেয়ে। পাল্টা লিখিত অভিযোগে তারা বলেন, জাহেদের বর্ণিত ঘটনা মিথ্যা, বানোয়াট ও অতিরঞ্জিত। আমাদের সাথে থাকা দুই বোনের একজনকে তিন সিটের মাঝের সিটে বসতে দেই। তার দুই পাশে দু’জন ছেলে থাকায় আমরা ওই ছেলেকে একপাশে চেপে বসতে বললে সে সিট ছাড়তে অস্বীকৃতি জানায়। পরে ঝামেলা বড় হতে পারে ভেবে আমরা তার গায়ে থাকা জার্সির একহাতা ধরে বাসের উপর তলায় বসিয়ে দিয়ে আসি। এসময় গলা টিপে ধরার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এবিষয়ে আবু জাহেদ বলেন, ‘আমাকে এমনভাবে গলা চেপে ধরেছে যে আর ৯-১০ সেকেন্ড থাকলে আমি মারা যেতাম। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।’
এদিকে অভিযুক্ত রতন বলেন, আমরা শুধু সেই ছেলেকে বলেছিলাম যে মাঝের সিটে বসতে মেয়েটিকে এক সাইডের সিটে বসতে দিতে। কিন্তু সে রাজি হয়নি। পরে তার সেশন জানতে চাওয়ায় সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমদের দিকে তেড়ে আসে। তাকে গলা চেপে ধরা হয়নি শুধু তার জামার কলার ধরা হয়েছিল। কিন্তু সে বিষয়টি অতিরঞ্জিত করে প্রচার করছে।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, আমরা চাই প্রশাসন এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, প্রক্টরিয়াল বডিতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে রোববার সকালে রেজুলেশন আকারে কর্তৃপক্ষকে দেয়া হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন