দেশের প্রায় ১৭ কোটি মানুষের চিকিৎসাসেবায় সরকারি হাসপাতাল প্রায় ৫৩০টি, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। এসব প্রতিষ্ঠানে আবার নেই চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ানসহ পর্যাপ্ত জনবল। একদিকে নতুন পদ সৃষ্টিতে রয়েছে জটিলতা, অন্যদিকে বিদ্যমান পদের বড় অংশই শূন্য। শুধু তাই নয়, চিকিৎসকদের প্রায় ২১ শতাংশ আছেন ওএসডিতে। এসব কারণে ধুঁকছে দেশের স্বাস্থ্য খাত; চিকিৎসাবঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।
সব সরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে শয্যা আছে প্রায় ৭২ হাজার। সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানেই শয্যার অন্তত দ্বিগুণ রোগী ভর্তি থাকে। সীমিত জনবলে এসব রোগীর চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টদের।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগের তুলনায় সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবার মান বৃদ্ধি পাওয়ায় রোগীর চাপও ক্রমেই বাড়ছে। সে অনুযায়ী জনবল বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। কোভিড-১৯ মহামারী অসংখ্য প্রাণ কেড়ে নিয়েছে সত্যি। তবে এও সত্যি যে, দীর্ঘদিনের ভঙ্গুর চিকিৎসা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতেও বাধ্য করেছে এই অতিমারী। সে সময় থেকে এ পর্যন্ত ১৫ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মোট নার্সের ৬০ শতাংশও এ সময়কালে নিয়োগ পাওয়া। এরপরও স্বাস্থ্য খাতে জনবলের প্রকট সংকট।
নিয়ম অনুযায়ী চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ ওএসডিতে (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) থাকার কথা। কিন্তু ওএসডিতে আছেন ২১ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন বেশকিছু প্রতিষ্ঠান হলেও সে অনুযায়ী পদ তৈরি হয়নি। এ কারণে নিয়মিত চিকিৎসকদের বদলি ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে জনবল ঢেলে সাজাতে নতুন স্ট্যান্ডার্ড সেটআপ করা হচ্ছে।
জনবল ৫শ শয্যার, সেবা দিতে হচ্ছে হাজার শয্যার প্রায় দুই কোটি মানুষের চিকিৎসার ভরসাস্থল রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (রমেক) হাসপাতাল। বিভাগের আট জেলার মানুষের চিকিৎসার প্রাণকেন্দ্র হলেও ৫শ শয্যার লক্ষ্যে নিয়োগকৃত জনবলে চলছে ১ হাজার শয্যার হাসপাতালটি।
ফলে মিলছে না কাক্সিক্ষত সেবা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৪২টি বিভাগে ২৯৪ জন চিকিৎসকের পদ রয়েছে হাসপাতালটিতে। এর মধ্যে কর্মরত রয়েছেন ২৭০ জন যাদের মধ্যে ৩০ জনই আছেন ওএসডিতে। প্রতিষ্ঠানটিতে এরচেয়েও বড় সংকট তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীর।
হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানান, শয্যা অনুযায়ী চিকিৎসকের পাশাপাশি তত্ত্বাবধায়ক, উপ-সেবা তত্ত্বাবধায়ক ও নার্সিং বিভাগসহ দেড় হাজার জনবল দরকার। কিন্তু আছে অর্ধেকেরও কম। ফলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না পেয়ে রোগীদের ছুটতে হয় বেসরকারি হাসপাতালে।
সংকটের কথা স্বীকার করে রমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ ইউনুস আলী আমাদের সময়কে বলেন, ‘চিকিৎসকের সংকট আছে, তারচেয়ে বেশি ঘাটতি অন্যান্য জনবলের। ঊর্ধ্বতনদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে ১২৪ জনকে আউটিসোর্সিংয়ে নিয়োগের অনুমতি পাওয়া গেছে। আরও ১৫০ জনের চাহিদা পাঠানো হয়েছে।’
অর্ধেক জনবলে চলছে সেবা
দক্ষিণের জেলা বাগেরহাটের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতাল। বহির্বিভাগে দৈনিক ৯শ থেকে ১৩শ মানুষ চিকিৎসাসেবা নেন। এখানে শয্যার চেয়ে গড়ে ৪০ শতাংশ বেশি রোগী ভর্তি থাকে নিয়মিত। এসব রোগীর চিকিৎসায় চিকিৎসকের পদ আছে ৬৮টি। কিন্তু কর্মরত মাত্র ৩৩ জন। এর মধ্যে শিগগিরই ওএসডিতে যাবেন অন্তত সাতজন। আবার নার্সের ১২০টি পদ থাকলেও আছেন ৭০ জন। এছাড়া চরম সংকট রয়েছে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীর। সব মিলিয়ে অর্ধেক জনবলে চলছে হাসপাতালটি।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক অসীম কুমার সমদ্দার আমাদের সময়কে বলেন, ‘জনবলের এ সংকট দীর্ঘদিনের। বিশেষ করে ডাক্তার ও নার্সের ঘাটতিতে সেবা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এর মধ্যে নতুন করে বেশ কয়েকজন ওএসডিতে যাবেন। বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চাহিদা দেওয়া হয়েছে।’
ছয় লাখ মানুষের সেবায় ৫০ শয্যা
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নীতিগত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি ছয় লাখ মানুষের জন্য থাকবে ১০০ শয্যার হাসপাতাল। কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্নচিত্র। অধিকাংশ উপজেলায় ছয় লাখের বেশি মানুষের বসবাস হলেও সে অনুযায়ী শয্যা বাড়েনি, ফলে নতুন পদও সৃষ্টি হয়নি।
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এ উপজেলায় প্রায় ৬ লাখ মানুষের বাস যাদের চিকিৎসার অন্যতম অবলম্বন এই হাসপাতাল। এখানে প্রতিদিন ৬শ থেকে ৭শ রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত ভর্তি রোগী থাকে ৭০ জন। কখনো কখনো শয্যার দ্বিগুণ রোগীও ভর্তি থাকে। কিন্তু জনবল সংকটে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে এখানকার চিকিৎসকদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাসপাতালটিতে মেডিক্যাল অফিসার, জুনিয়র কনসালট্যান্টসহ ৩৫ জন চিকিৎসকের পদ রয়েছে। কিন্তু কর্মরত মাত্র ২৩ জন। তাদের মধ্যে দুজন আছেন ওএসডিতে। ফলে নিয়মিত সেবা দিচ্ছেন ২১ জন। অর্থাৎ চিকিৎসকের ৪০ শতাংশ পদই শূন্য। সংকট রয়েছে নার্সেরও। চাহিদা অনুযায়ী ৩১ জন থাকার কথা থাকলেও আছে ২৭ জন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম আমাদের সময়কে বলেন, ‘উপজেলায় ছয় লাখ মানুষের জন্য এত কম সংখ্যক চিকিৎসক দিয়ে সেবা দেওয়া অনেক কঠিন। শুধু চিকিৎসা দেওয়া হয় তা নয়। এর সঙ্গে ইউনিয়ন পর্যায়ে নানা দায়িত্ব পালন করতে হয় এর মধ্য থেকেই। নতুন করে স্ট্যান্ডার্ড সেটআপ হয়েছে। সেখানে বেশকিছু পদ বাড়ানো হলেও জনবল সংকটের বিষয়টি খুব একটা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলেই মনে হচ্ছে।’
প্রতি ১৪১৭ জনের বিপরীতে একজন চিকিৎসক
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আদর্শ মানদণ্ড অনুযায়ী, প্রতি ১ হাজার মানুষের জন্য একজন চিকিৎসক দরকার। বর্তমানে বাংলাদেশে জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি। সে অনুযায়ী দরকার ১ লাখ ৬০ হাজার চিকিৎসক। কিন্তু আছেন ১ লাখ ২০ হাজার। অর্থাৎ প্রতি ১ হাজার ৪১৭ জনের বিপরীতে একজন চিকিৎসক।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, সারাদেশের চিকিৎসকের পদ রয়েছে ৩৫ হাজার ৫০৩টি। এর মধ্যে ওএসডিতে রয়েছেন ৭ হাজার ১২ জন, পদ শূন্য রয়েছে ১২শ। একই সঙ্গে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টের পদ রয়েছে ৬ হাজার ৪৫৪টি। শূন্য ১৯২৩টি।
অন্যদিকে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের তথ্যমতে, সারাদেশে নার্সের পদ ৪৩ হাজার ১৭৫টি। এর মধ্যে শূন্য ৩ হাজার ৪১৫টি। মিডওয়াইফের পদ ২ হাজার ৯৯৬টি, শূন্য ৪৫০টি।
জনবল কাঠামোয় আসছে পরিবর্তন
১০, ২০, ৩১, ৫০, ১০০ শয্যা উপজেলা, ১০০ শয্যা জেলা, ২৫০ শয্যা জেলা ও ৬শ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের জনবল নিয়োগের কাঠামোয় পরিবর্তন আনছে সরকার। এরই মধ্যে এসব হাসপাতালের জন্য মেডিক্যাল অ্যাসিস্টেন্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস), ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি-ডিপ্লোমা) ও ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (বিএসসি ও ডিপ্লোমা) জন্য জনবলের স্টান্ডার্ড সেট আপের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি জারিকৃত এ প্রজ্ঞাপনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
নতুন কাঠামোয় ১০ শয্যার হাসপাতালে আবাসিক মেডিক্যাল অফিসারসহ পাঁচজন সহকারী সার্জন তথা মেডিক্যাল অফিসার নিয়ে মোট ২৫ জন জনবল রাখা হয়েছে। ২০ শয্যার হাসপাতালে ৪১ জন, ৩১ শয্যায় ৩০টি বিভাগে ৮৯ জন, ৫০ শয্যায় ১০৫ জন, ১০০ শয্যায় ১৫৩ জন, ১শ শয্যার জেলা হাসপাতালে ১৮৫ জন, ২৫০ শয্যায় ৩৮৮ জন, ৬শ শয্যায় দেওয়া হয়েছে ৯৪৭ জন।
জনবলের এই কাঠামো নিয়ে কাজ করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. শামিউল ইসলাম। বর্তমানে তিনি জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) পরিচালকের দায়িত্বে আছেন।
শামিউল ইসলাম আমাদের সময়কে বলেন, ‘চিকিৎসা ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হলে সবার আগে প্রতিষ্ঠানের পদ তৈরি হবে। এজন্য অর্গানোগ্রাম হালনাগাদ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ৬শ শয্যার হাসপাতাল পর্যন্ত করা হয়েছে। এখন মেডিক্যাল কলেজে ৫শ থেকে শুরু করে ৫ হাজার শয্যার হাসপাতালের স্টান্ডার্ড সেটাপ করতে হবে। এটি চূড়ান্ত করে নিয়োগ পূর্ণ করা গেলে সংকট অনেকাংশে কেটে যাবে।’
জনবল তৈরি না করে প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এমন সংকট
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. হারুন-অর রশীদ আমাদের সময়কে বলেন, ‘অনেক সময় আমরা উপজেলা পর্যায়ে চিকিৎসক দিতে পারিনি। তবে কোভিডের সময় থেকে এখন পর্যন্ত বেশকিছু চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আগামী তিন বছরে দুই হাজার করে আরও ছয় হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়ার অনুশাসন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এসব চিকিৎসক স্থানীয় পর্যায়ে কাজ করবে। এতে করে সংকট কেটে জনবলে ভারসাম্য আসবে।’ তিনি বলেন, ‘অনেক নতুন প্রতিষ্ঠান হয়েছে, শয্যা বেড়েছে। কিন্তু পদ সৃষ্টি না হওয়ায় মূলত জটিলতা তৈরি হয়েছে। এগুলোতে ঠিকমতো জনবল নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। যার ফলে সংকট রয়ে গেছে।’
ওএসডির বিষয়ে হারুন-অর রশীদ বলেন, ‘সাধারণত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে অন্য বিভাগে ওএসডি করা হয়। স্বাস্থ্যে এমন সংখ্যা ৫০ জনের মতো। বাকিরা বিভিন্ন হাসপাতালে ঘাটতি পূরণের জন্য চলতি দায়িত্বে রয়েছেন। এমনকি যারা শিক্ষা ছুটি নিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আছেন, তাদেরও সার্ভিস দিতে হচ্ছে।’
‘জনবল বৃদ্ধির প্রক্রিয়া চলছে’
স্বাস্থ্য অধিপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর আমাদের সময়কে বলেন, ‘জনবল তৈরি না করেই অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান হওয়ার কারণেই মূলত সংকট বেড়েছে। ওএসডিতে যারা আছেন, তারা কর্মে নেই এটা বললে ভুল হবে। কোর্স করতে হলে পদ যেহেতু নেই, তাই ডেপুটেশন দিয়েই সেটাকে কাজে লাগাতে হবে। এখন পদ বৃদ্ধির প্রক্রিয়া চলছে। সংকট ধীরে ধীরে কেটে যাবে।’
‘উত্তরণ সম্ভব’
বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন আমাদের সময়কে বলেন, ‘আগের তুলনায় চিকিৎসকের ঘাটতি অনেকটা কমলেও সার্বিক অর্থে জনবলের অভাব এখনো অনেক বেশি। কোভিডের ক্রান্তিলগ্নে বেশকিছু পদে নিয়োগ হয়েছে। এর পরও এখনো কয়েকটি হাসপাতালে জনবল সংকট প্রকট।
তিনি মনে করেন, এ সংকট উত্তরণ সম্ভব। বলেন, প্রতিবছর বহু চিকিৎসক পাস করে বের হচ্ছেন। সমস্যা হচ্ছে, চাকরির শুরুতে স্থানীয় পর্যায়ে বা মফস্বলে নিয়োগ দেওয়া হলে অনেকেই চেষ্টা-তদবির চালিয়ে ঢাকায় বদলি হয়ে চলে আসেন। এটি রোধ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
প্রবীণ এই চিকিৎসক যোগ করেন, বর্তমানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী দুজনই চিকিৎসক। আশা করা যায়, তারা বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন