মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে রাত হলেই বেড়ে যায় গোলাগুলি ও মর্টারশেলের গোলার বিকট শব্দ। এতে আতঙ্ক বেড়েছে বাংলাদেশ সীমান্তবাসীর।
নাফ নদের তীরবর্তী সীমান্তের ওপারে রয়েছে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির অসংখ্য ঘাঁটি। এসব ঘাঁটি দখলে নিতে মরিয়া দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। দেড় মাসের বেশি সময় ধরে চলছে তাদের সংঘাত চলছে।
গতকাল সোমবার দিবাগত রাত থেকে আজ মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ওয়াব্রাং, চৌধুরী পাড়া, ঝিমংখালী বিপরীতে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, টেকনাফের হ্নীলা সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর একাধিক ঘাঁটি। এসব ঘাঁটিতে উড়ছে মিয়ানমারের পতাকা। আর অবস্থান শক্ত করেছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি। তবে এসব ঘাঁটি দখলে নিতে আরাকান আর্মি কৌশল পাল্টেছে। আগে দিনে হামলা চালালেও এখন রাতের বেলায় আক্রমণ করছে বিজিপিকে। আর পাল্টা জবাব দিচ্ছে বিজিপিও। তাদের চলমান সংঘাতের প্রভাব পড়ছে এপারে সীমান্তের বাসিন্দাদের ওপর।
স্থানীয় বাসিন্দা কবির আহমদ বলেন, উঁচু পাহাড়ের ওপর দিয়ে আসার সময় সীমান্তের দিকে তাকালে ধোঁয়ার কুণ্ডলি দেখা যায়। মাঝে মধ্যে বিকট শব্দ শোনা হয়। বিস্ফোরণের শব্দে ঘরেও থাকা যায় না। বর্তমানে সীমান্ত পরিস্থিতি খুবই আতঙ্কের।
স্থানীয় জেলেরা জানান, মিয়ানমারের সংঘাতের কারণে বন্ধ রয়েছে নাফ নদে মাছ শিকার। এ কারণে ঘাটে নোঙর করা রয়েছে অসংখ্য ট্রলার। দীর্ঘ সময় মাছ শিকারে যেতে না পেরে নষ্ট হচ্ছে ট্রলারের ইঞ্জিনসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছেন কয়েক হাজার জেলে।
টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, রাত সাড়ে ১২টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত থেমে থেমে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি ও মর্টারশেলের গোলার বিকট শব্দ ভেসে আসে সীমান্তের এপারে। হ্নীলার ফুলের ডেইল এবং ওয়াবরাংয়ের ঠিক বিপরীত এলাকায় গোলাগুলি ও মর্টারশেলের গোলার বিকট শব্দ হয়। এপারের সীমান্তের অনেক বাসিন্দা রাতে ঘুমাতে পারেনি বিকট শব্দে।
বিজিবির ব্যাটালিয়ন-২-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, মিয়ানমারে সংঘাতের কারণে মাঝে মাঝে এপারে গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে। তবে নাফ নদে ও সীমান্তে বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, রাত থেকে সকাল পর্যন্ত সীমান্তে বিভিন্ন এলাকায় গোলাগুলির শব্দ পাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা। তবে মিয়ানমারে সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে নাফ নদ সীমান্ত এলাকায় বিজিবি ও কোস্টগার্ডসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন