চোর পালানোর পর বুদ্ধি হয়েছে বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক)। বছরের পর বছর অনিয়ম চললেও কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ বেবিচকের বিরুদ্ধে। এবার দুর্নীতির কথা স্বীকার করে জড়িত কর্মকর্তাদের ধরতে কানাডা পুলিশের সহযোগিতা নেয়ার কথা জানালেন বিমানমন্ত্রী। তবে পলাতকদের এভাবে ফেরত আনা সম্ভব নয় জানিয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাণিজ্যিক কাজে যুক্ত হওয়ায় দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হয়েছে।
শতশত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে দেশ ছেড়েছেন বেবিচকের সাত কর্মকর্তা-কর্মচারী। ফাইল ছবি
কাজল আব্দুল্লাহ
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পর এবার আলোচনায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। কোনো অনিয়মই বাদ দিচ্ছেন না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মানবপাচার থেকে শুরু করে টেন্ডার, নিয়োগ-বাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন অনেকেই।
সম্প্রতি বেবিচকের ৩৭ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চিহ্নিত করে বেবিচক চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে দুদক। এতে জড়িতদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। দুদক থেকে বাঁচতে বিভিন্ন দফতরে তদবিরের পাশাপাশি কেউ পালিয়েছেন বিদেশে। এরইমধ্যে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া অন্তত সাত কর্মকর্তা-কর্মচারী দেশ ছেড়ে চলে গেছেন কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে।
এমন অবস্থায় বিমানমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান বলছেন হাস্যকর কথা। তিনি বলেন, বেবিচকের যারাই অনিয়মের সাথে জড়িত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। কানাডায় যারা পালিয়েছে, তাদেরকে ওই দেশের পুলিশ দিয়ে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ৬ মাসের মধ্যে খুলছে বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল: মন্ত্রী
দুদকের তথ্যমতে, অবকাঠামো নির্মাণ, টেন্ডার, নিয়োগসহ বিভিন্ন খাতে অনিয়ম দুর্নীতি চলছে ২০১৫ সাল থেকেই। প্রশ্ন হলো, গত ৯ বছর কী ঘুমিয়ে ছিলো বেবিচক? অনিয়ম ও অপরাধীদের জেনেও কেন ব্যবস্থা নেয়নি কতৃপক্ষ? খাত সংশ্লিষ্টদের মত, দায় এড়াতে পারেন না ঊর্ধ্বতনরাও।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ নাফিস ইমতিয়াজ উদ্দিন বলেন, বাণিজ্যিক কাজে যুক্ত হওয়ায় বেবিচকে দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, যদি রেগুলেটরি অথরিটি হিসেবে পরিচালনা করতে হয় তাহলে তাদের অবশ্যই বাণিজ্যিক দিক বাদ দিতে হবে। এজন্য এয়ারপোর্ট অথরিটি করে তাকে আলাদা করে দেয়া যেতে পারে। তখন তারা সেটা করবে আর সিভিল এভিয়েশন রেগুলেটরি অথরিটি হিসেবে তার কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে পারবে।
দুদকের নোটিশ অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বেবিচকে কী কী প্রকল্পের কাজ হয়েছে তার তালিকা, এই দুই অর্থবছরে কেনাকাটা খাতে কত টাকা ব্যয় হয়েছে তার বিস্তারিত বিবরণ, একই সময়ে নির্মাণ ও সংস্কার খাতে কত ব্যয় হয়েছে, আইটি খাতে কত বরাদ্দ ছিল এবং কী কী কাজ করা হয়েছে তার বিস্তারিত জানতে চেয়েছে দুদক।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন