খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারা বেগম।
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ডুগডুগি এলএসডি খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারা বেগমের (৫৯) বিরুদ্ধে সরকারি গুদামের চাল ও খালি বস্তা বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় জেলা খাদ্য অফিস ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ইতিমধ্যে তদন্ত কমিটি প্রায় পৌনে ২ কোটি টাকার চাল এবং বস্তা বিক্রির সত্যতা পেয়েছে। ঘটনার পর থেকে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারা বেগম লাপাত্তা রয়েছেন।
জানা গেছে, ৫ বছর ধরে ডুগডুগি এলএসডি গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আনোয়ারা বেগম। দুই মাসের মধ্যে তার অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। গত ১৫ এপ্রিল ঘোড়াঘাট উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইউনুস আলী মণ্ডল ডুগডুগি এলএসডি গুদাম পরিদর্শনে গিয়ে চাল ও বস্তা কম দেখতে পান। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে বিষয়টি জানানো হয়। এর মধ্যে খাদ্য গুদামের হিসাব দিতে একাধিকবার আনোয়ারা বেগমকে বলা হলেও তিনি তা না দিয়ে গত ২৫ এপ্রিল গুদামের চাবি নিয়ে চলে যান। তিনি পার্শ্ববর্তী গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার নুনিয়াগাড়ী গ্রামের আব্দুল মতিন মণ্ডলের স্ত্রী।
এই ঘটনায় জেলার সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক মহন আহমেদকে প্রধান করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গত বৃহস্পতিবার ঘোড়াঘাটের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসানের উপস্থিতিতে গুদামের তালা ভেঙে চালের বস্তার গণনা শুরু করে তদন্ত কমিটি।
তদন্ত কমিটির একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে জানান, গুদামে ১ হাজার ৬৪ দশমিক ১৫৫ মেট্রিক টন চাল মজুদ থাকার কথা। কিন্তু তদন্তকালে ৭৪৫ দশমিক ১৪ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যায়। ৩১৯ দশমিক ১৪১ মেট্রিক টন চাল কম রয়েছে। এছাড়াও ৪ হাজার ২৭৮টি খালি বস্তা পাওয়া যায়নি। খোয়া যাওয়া চাল ও বস্তার দাম ১ কোটি ৭১ লাখ ৩১ হাজার ২৭৯ টাকা।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইউনুস আলী মণ্ডল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘গত ১৫ এপ্রিল ডুগডুগি এলএসডি গুদামে পাক্ষিক পরিদর্শনে যাই। এ সময় গুদামে চালের বস্তা ও খালি বস্তা কম দেখতে পাই। ১৫ এপ্রিল পরিদর্শনের পর বিষয়টি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে জানালে তিনি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটি তদন্তে বিপুল পরিমাণ চাল ও চালের খালি বস্তা কম থাকার সত্যতা পায়। এ ব্যাপারে ডুগডুগি এলএসডির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারা বেগমসহ ৩ জনের নামে ঘোড়াঘাট থানায় একটি এজাহার দেওয়া হয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন